আন্তর্জাতিক পুলিশ
সংস্থা ইন্টারপোল মুসাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করার পর এখন ওমান থেকে তাকে
ফেরত আনার প্রক্রিয়াও শুরু হচ্ছে বলে পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি ডেস্কের
দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম জানিয়েছেন।
এ মামলার তদন্তে মুসার
নাম আসার পর তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছিল বাংলাদেশের পুলিশ। বাংলাদেশের
হয়ে ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি ডেস্কের।
মহিউল ইসলাম শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মুসা
ওমানে গ্রেপ্তার হয়েছে। তাকে ফিরিয়ে আনতে ওই দেশের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে। পাশাপাশি
আমাদের পুলিশের একটি দল পাঠানোর বিষয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে। শিগগরিই এ ব্যাপারে একটা
ভালো ফল আশা করছি।”
মতিঝিল থানা আওয়ামী
লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিপু সড়কে গাড়িতে থাকা অবস্থায় গত ২৪ মার্চ রাতে
খিলগাঁও রেলগেইটের কাছে আক্রান্ত হন। মোটর সাইকেলে আসা এক ব্যক্তি যানজটে আটকে
পড়া টিপুর গাড়ির কাছে এসে তাকে গুলি করে।
সে সময় গাড়ির পাশে রিকশার আরোহী কলেজছাত্রী প্রীতিও গুলিবিদ্ধ হন।
হাসপাতালে নিলে দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
হত্যাকাণ্ডের পর টিপুর
স্ত্রী স্থানীয় নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি যে মামলা করেছেন, তাতে
আসামির তালিকায় কারও নাম উল্লেখ করা ছিল না।
পরে ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া
থেকে মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে
বলা হয়, এই ব্যক্তিই টিপুকে গুলি করেছিলেন। পরে আরফান উল্লাহ দামাল নামে আরও একজনকে
অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় কমলাপুর থেকে।
নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপু।
এরপর ২ এপ্রিল মুসার ভাই সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মতিঝিল থানার
১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করার
কথা জানায় র্যাব।
র্যাব সে সময় বলেছিল, চাঁদাবাজি ও দরপত্র নিয়ে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব, রিয়াজুল
হক মিল্কী হত্যার বদলা এবং বোঁচা বাবু হত্যা মামলা থেকে বাঁচতে টিপুকে হত্যার পরিকল্পনা
করেন ওমর ফারুকসহ স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। বাজেট ছিল ১৫
লাখ টাকা।
তদন্তকারীদের
ভাষ্য, মুসা ‘রাজনীতি ও অপরাধজগতের মধ্যে যোগসূত্র’ হিসেবে কাজ করে
আসছিলেন। ঢাকা ও দুবাইয়ের অপরাধজগতের মধ্যেও সংযোগের সমন্বয় করতেন তিনি।
হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন আগেই মুসা দুবাই চলে যান।
হত্যা পরিকল্পনা এবং যাবতীয় নির্দেশনা সেখান থেকেই দেওয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পর
দুবাইতে বার্তা যায় ‘কাজ শেষ’।
এরপর মুসা দুবাই থেকে ওমানে গেছেন বলে গত মাসেই সংবাদপত্রে খবর আসে।
এদিকে বাংলাদেশের পুলিশও মুসাকে ধরার জন্য ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। সেই
প্রক্রিয়াতেই সাফল্য এসেছে বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের ভাষ্য।
এ মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের
অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তাকে
দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমাদের একটা প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে
এই প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে আনা গেলে তা আমাদের অন্যতম সাফল্য হবে।”
পুরনো খবর-
আধিপত্য আর প্রতিশোধ: টিপু খুনে ঢাকা-দুবাই সংযোগ
টিপু খুনে গ্রেপ্তার ওমর ফারুক আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত
টিপু খুন হন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার পরিকল্পনায়: র্যাব
টিপু হত্যা: ‘পরিকল্পনাকারীসহ’ আরও ৪ গ্রেপ্তার
টিপু হত্যা: অস্ত্রসহ একজন গ্রেপ্তার
শাহজাহানপুরের জোড়া খুন: আকাশ রিমান্ডে
টিপুকে খুন করতে ‘ভাড়া করা হয়’ আকাশকে, বলছে পুলিশ
বাবু খুনের মামলার আসামিরা ‘টিপুকেও হুমকি দিচ্ছিল’: স্ত্রী
জোড়া খুন: কেউ চিহ্নিত হয়নি, অস্ত্রটি ‘অত্যাধুনিক’ বলছে পুলিশ
জোড়া খুন: কোন নম্বর থেকে হুমকি পেয়েছিলেন টিপু, খুঁজছে পুলিশ
টিপু হত্যার ‘নেপথ্যের’ ব্যক্তিদেরও ছাড় নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী