ভিডিওটিতে খাবার পানির জন্য নামার পর দড়ি বা প্রয়োজনীয় উপকরণ ছাড়াই ওই নারীকে কুয়ার দেয়াল ধরে ধরে উপরে উঠতে দেখা গেছে। পরে আরেক নারীকেও একইভাবে উপরে উঠতে দেখা যায়।
বিবিসি জানিয়েছে, কুয়া ও পুকুরগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় রাজ্যটির ঘুসিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের বাধ্য হয়েই এখন এমন ভয়াবহ ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। ভারতের আরও কিছু এলাকাও প্রায় একই ধরনের খাবার পানির সংকটে ভুগছে।
পানির জন্য ভারতীয়দের জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার ভিডিও প্রায়ই ভাইরাল হচ্ছে। এপ্রিলেও প্রায় একই ধরনের একটি ভিডিওতে মহারাষ্ট্রে এক নারীকে পানি নিতে কুয়ায় নামতে দেখা গিয়েছিল।
২০১৯ সালের এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে যে ১৭টি দেশে চাহিদার তুলনায় পানির ঘাটতি তীব্র বলে জানানো হয়েছিল, ভারত ছিল তার একটি। মধ্য প্রদেশে, পাঞ্জাব, রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, উত্তরাখণ্ড ও হরিয়ানায় এ সংকট তীব্র বলেও ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল।
মধ্য প্রদেশে প্রতি গ্রীষ্মেই পানির ঘাটতিজনিত সমস্যা মারাত্মক আকার ধারণ করে। রাজ্যটির সরকার ২০২৪ সালের মধ্যে প্রতিটি গ্রামে কলের পানি সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিলেও ভারতের মধ্যাঞ্চলীয় এ রাজ্যটির লাখ লাখ মানুষের কাছে খাবার পানি এখনও দুর্লভ।
ঘুসিয়ার ক্রুদ্ধ গ্রামবাসীরা বলছেন, সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে তারা এ বছর স্থানীয় নির্বাচন বয়কট করবেন।
“পানি নিতে আমাদের কুয়ায় নামতে হয়। এখানে তিনটি কুয়া আছে, যার সবগুলোই প্রায় শুকিয়ে গেছে। কোনো নলকূপেই পানি নেই।
“সরকারি কর্মচারী আর রাজনৈতিক নেতারা কেবল নির্বাচনের সময়ই গ্রামে আসেন। এ বছর আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, পানি সরবরাহ ঠিক না হওয়া পর্যন্ত আমরা ভোটই দেবো না,” বার্তা সংস্থা এএনআইকে এমনটাই বলেছেন এক নারী।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী অনেকেই ভাইরাল এই ভিডিও দেখে ‘হৃদয় ভেঙে যাওয়ার’ কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি ঘুসিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা দিতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনকারী দেশ ভারত, দেশটির অনেকে এখনও দৈনন্দিন পানির জন্য কুয়া বা নলকূপের উপর নির্ভরশীল।
মাটির নিচে থাকা পানির স্তর দিন দিন নামতে থাকায় দেশটির দুই-তৃতীয়াংশ জেলা হুমকির মুখে রয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।