শুক্রবার
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, বৃহস্পতিবার উপজেলার
জিঞ্জিরাম নদীর পূর্বপাড়ে একটি পতিত জমি থেকে মাটিচাপা দেওয়া বস্তাবন্দি অবস্থায় শালুর
লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মাদকের
কারবার নিয়ে বিরোধের জেরে সাড়ে তিন মাস আগে রৌমারী উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের কাউনিয়ার
চরের প্রয়াত চান মিয়ার ছেলে শালু মিয়াকে হত্যা করে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল বলে তিনি
জানান।
এর আগে
এই ঘটনায় জড়িত অভিযোগে স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন, খয়বর আলী (৩২) ও জিয়াকে (৫০)
পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে
পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত আরা হত্যাকাণ্ড, এই তিনজনকে গ্রেপ্তার এবং লাশ উদ্ধারের
বর্ণনা দেন। এ সময় আসামিদের সাংবাদিকদের সামনে নিয়ে আসা হয়।
জান্নাত
আরা বলেন, শালু মিয়া ছিলেন আসামি জাকির মেম্বারের মাদক পরিবহনকারী। শালু ৫ থেকে ৬ হাজার
ইয়াবা ট্যাবলেট বহন করার সময় আত্মসাতের চেষ্টা চালান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জাকির মেম্বার
সহযোগী খয়বর আলী ও জিয়াকে নিয়ে শালুকে হত্যা করে বস্তায় ভরে মাটিচাপা দেন।
শালু মিয়া
নিখোঁজ হওয়ার পর তার স্ত্রী রেজেকা বেগম বাদী হয়ে গত ২৯ এপ্রিল জাকির মেম্বার, খয়বর
আলী ও জিয়ার বিরুদ্ধে রৌমারী থানায় মামলা করেছেন।

মামলায়
অভিযোগ করা হয়, শালু মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ইউপি সদস্য জাকির হোসেনের ব্যবসায়িক
বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিষয়টি মীমাংসার
জন্য জাকির হোসেন বাদীর স্বামীকে ফোনে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের সুইচগেট এলাকায় যেতে বলেন।
অভিযোগে
বাদী বলেন, “আমার স্বামী তার ফোন পেয়ে দ্রুত উক্ত স্থানে চলে যান। আমিও তার পিছু পিছু
সেখানে যাই। গিয়ে দেখি জাকির হোসেন, খয়বর আলীসহ অজ্ঞাত আরও দুই তিন জন সেখানে আগে থেকেই
অবস্থান করছিলেন। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা আমার স্বামীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে
যান।”
আসামি গ্রেপ্তার
ও লাশ উদ্ধারের বিষয়ে এসপি জান্নাত আরা বলেন, গত সোমবার [৩০ মে] জাকিরকে ঢাকার শাহবাগ
থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে বুধবার [১ জুন] খয়বর আলীকে গাজীপুর
জেলার কোনাবাড়ী থেকে এবং জিয়াকে রাজধানী ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে গ্রেপ্তার করে।
খয়বর আলী
রৌমারী উপজেলার ঝগড়ার চরের ছলে হকের ছেলে এবং জিয়া একই উপজেলার কাউয়ার চরের তালেবের
ছেলে।
সংবাদ সম্মেলনে
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জিয়াউর রহমান,
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উলিপুর সার্কেল) মাইদুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি
রাজু মোস্তাফিজ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালেক ফারুকসহ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার
প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
রৌমারী
থানার ওসি মোস্তাছের বিল্লাহ বলেন, গত ৩০ মে মামলার প্রধান আসামি জাকির হোসেনকে ঢাকা
থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে
বুধবার খয়বর আলী ও জিয়াকে গ্রেপ্তার করে রৌমারী এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
“বৃহস্পতিবার
বিকালে তাদের দেওয়া তথ্য ও দেখানো স্থান থেকে মাটি খুঁড়ে শালু মিয়ার মরদেহ বস্তাবন্দি
অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।”
শুক্রবার
আসামিদের কুড়িগ্রাম মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।