ক্যাটাগরি

বিএনপিকে ভোটে আনার দায়িত্ব সরকারি দলের: সাবেক সিইসি হুদা

একই সঙ্গে নির্বাচন বর্জন করে সমস্যা মিটবে না বলে নিজের মত তুলে ধরে তিনি
বিএনপিকে ভোটে আসার অনুরোধ জানান।

শুক্রবার এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে গ্রহণযোগ্য
জাতীয় নির্বাচন সম্ভব’ শীর্ষক এক
ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ‘সমঝোতারও’ তাগিদ দেন গত ফেব্রুয়ারিতে ইসি থেকে
বিদায় নেওয়া সাবেক এই সিইসি।

২০১৮ সালের ডিসেম্বরের একাদশ সংসদ নির্বাচন পরিচালনাকারী নূরুল হুদা ওই নির্বাচন
নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ছিলেন।

২০১৪ সালের জানুয়ারিতে দশম সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো অংশ নেয়নি।
তবে একাদশ সংসদ নির্বাচনের দলটি ভোটে আসে।

সিইসি নূরুল হুদার মেয়াদকালে সবশেষ জাতীয় নির্বাচনে অধিকাংশ দলকে ভোটে আনা
গেলেও ওই নির্বাচনের ‘ব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, কেন্দ্র দখল ও সহিংসতা’ নিয়ে ব্যাপক সমলোচনা
রয়েছে।

গত ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদ শেষে নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে বিদায় নেওয়ার তিন মাস
পর কোনো অনুষ্ঠানে গেলেন সাবেক সিইসি নূরুল হুদা।

শুক্রবারের অনুষ্ঠানে নিজেদের সফলতা ও অস্বস্তির বিষয়টি তুলে ধরতে গিয়ে সাবেক
সিইসি বলেন, “প্রথমমত একশ পার্সেন্ট ভোট হয়েছে-এটা একটা অস্বস্তিকর বিষয়। গ্রহণযোগ্য
বিষয় নয়। যে ১০০% ভোট হবে। সঙ্গে সঙ্গেই বলেছি-এটা থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র পথ হচ্ছে
আদালত।”

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে কমিশন গঠনের
পর নতুন ইসির প্রতিও অনাস্থার কথা বলে আসছে বিএনপি।

সবার অংশগ্রহণে ভোট নেওয়ার প্রক্রিয়ায় সংলাপও শুরু হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না এলে
গ্রহণযোগ্যতা পাবে কিনা তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, “বিএনপি না এলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্যতা পাবে না। আমি মনে করি,
এ নির্বাচনে বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে আনতে হবে এবং সে দায়িত্ব সরকারি দলের নিতে হবে।
বিএনপির প্রতিও আমার অনুরোধ থাকবে- নির্বাচন বর্জন করে, বয়কট করে সমস্যার সমাধান হবে
না।”

এ ছায়া সংসদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান
আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

সিইসিকে উদ্ধৃত করে কিরণ বলেন, “অনুষ্ঠানে সাবেক সিইসি বলেছেন- নির্বাচন একটি
স্পর্শকাতর ও চ্যালেঞ্জিং বিষয়। রাজনৈতিক দল ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সার্বিক
সহযোগিতা ব্যতীত শুধু নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

“দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য জেলা প্রশাসকদের
পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।”

নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনকালে তাদের সময়কার কমিশনের ওপর কোনো অদৃশ্য শক্তির
চাপ ছিল না বলেও দাবি করেন নূরল হুদা।

বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি তার পূর্ণ আস্থা রয়েছে বলেও জানান তিনি।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান বলেন, “অনুষ্ঠানে নূরুল হুদা বলেছেন, ‘রাজনৈতিক
সমঝোতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই বিএনপিকে বাদ
দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা হলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না’।“


রাজনৈতিক সমঝোতা না হলে ইসির কাজ দুরূহ হবে: সিইসি
 

সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারিনি, বিব্রতও নই: বিদায় বেলায় বললেন সিইসি
 

অনুষ্ঠান শেষে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবেক সিইসি
আরও বলেছেন- বন্দুক ও লাঠি ব্যবহার করে নির্বাচন করা যায় না। বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর
কোথাও নির্বাচনে বন্দুক ও লাঠির ব্যবহার হয় না। নির্বাচনকালে যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি
করা ঠিক নয়।

“নির্বাচনকেন্দ্রিক সহিংসতায় সম্পদ নষ্ট ও মানুষ খুন কাম্য নয়। নির্বাচনকে
অবশ্যই প্রতিযোগিতামূলক হতে হবে।”

ছায়া সংসদে ‘মক’ স্পিকার হিসেবে সভাপতিত্ব
করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান। তিনি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিতে ১০
দফা সুপারিশ তুলে ধরেন।

এর অন্যতম একটি হল- আগামী জাতীয় নির্বাচন
সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক করার লক্ষ্যে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ
ও বিএনপিসহ শরিকদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনের রূপরেখা ও রোডম্যাপ তৈরি করা।

প্রতিযোগিতায় কুমিল্লা ইউনিভার্সিটিকে
পরাজিত করে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এর বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।

প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের
মাঝে ট্রফি ও সনদপত্র বিতরণ করা হয়।