প্যারিসের জাতীয় স্টেডিয়ামে
শুক্রবার স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে ডেনমার্ক। ‘এ’
লিগের ১ নম্বর গ্রুপের ম্যাচটিতে সফরকারীদের দুটি গোলই করেন আন্দ্রেয়াস
কর্নিলিউস।
বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও পরিষ্কার ব্যবধানে এগিয়ে ছিল
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগানোয় কার্যকর হতে পারেনি তারা। প্রায় ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে মোট ১৯টি শট নেয় ফরাসিরা,
যার মাত্র ৬টি লক্ষ্যে। আর ডেনমার্কের আট শটের পাঁচটিই ছিল লক্ষ্যে।
রক্ষণের ভুলে ম্যাচের শুরুতেই বিপদে পড়তে পারত ফ্রান্স।
দূরের পোস্টে কাসপের ডলবার্গের উদ্দেশে বল বাড়ান ইয়োয়াকিম। কিন্তু বলের কাছে
পৌঁছাতে একটু দেরি করে ফেলেন ডলবার্গ, শেষ পর্যন্ত তার শট
লাগে পাশের জালে।
ত্রয়োদশ মিনিটে ম্যাচে প্রথম নিশ্চিত সুযোগটি পান
বেনজেমা। কিন্তু ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েও প্রতিপক্ষের গায়ে মেরে হতাশ করেন তিনি।
দুই মিনিট পর জালে বল পাঠান এই স্ট্রাইকার, তবে লাইন্সম্যান
অফসাইডের পতাকা তোলেন।
বিরতির একটু আগে পায়ে ব্যথা পেয়ে মাঠ ছাড়েন কিলিয়ান এমবাপে। দ্বিতীয়ার্ধে তার বদলি হিসেবে মিডফিল্ডার ক্রিস্টোফা এনকুকুকে
নামান কোচ।
৪৮তম মিনিটে ডান দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে বল হেডে
নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভলি করেন বেনজেমা। যথেষ্ট গতি না থাকলেও লক্ষ্যে ছিল বল, কোনোমতে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। তবে এ যাত্রায় বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি
রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে দলগত ও ব্যক্তিগতভাবে অবিশ্বাস্য মৌসুম
কাটিয়ে আসা এই তারকাকে।
মেমফিসের জোড়া গোলে বেলজিয়ামকে উড়িয়ে দিল নেদারল্যান্ডস
তার দৃষ্টিনন্দন গোলেই ৫১তম মিনিটে এগিয়ে যায় ফ্রান্স।
ডান দিক থেকে ডি-বক্সে ঢুকে এনকুকুকে পাস দিয়ে আরও ভেতরে ঢুকে পড়েন বেনজেমা। মুহূর্ত বাদে সতীর্থের ব্যকহিলে তিনি যখন ফিরতি পাস পেলেন তখন তার চারপাশে
প্রতিপক্ষরা ঘিরে আছে। ঠাণ্ডা মাথায় বল ডান থেকে বাঁ পায়ে নিলেন, এরপর আরেকবার পা বদল করে আরেকজনের বাধা এড়িয়ে নিচু শটে দলকে উচ্ছ্বাসে
ভাসালেন রিয়ালের হয়ে ২০২১-২২ মৌসুমে ৪৪ গোল করা ফরোয়ার্ড।
দেশের হয়ে এই নিয়ে ২৪ দলের বিপক্ষে গোল করলেন বেনজেমা।
তার চেয়ে বেশি প্রতিপক্ষের জালে বল পাঠিয়েয়েছেন কেবল থিয়েরি অঁরি (৩৭) ও অলিভিয়ে
জিরুদ (৩০)। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তার গোল হলো ৩৭টি, ৯৫ ম্যাচে।
তাদের এগিয়ে যাওয়ার আনন্দ খেলার ধারার বিপরীতে ৬৮তম
মিনিটে কেড়ে নেয় ডেনমার্ক। পিয়ের-এমিল হয়বিয়ার্গ ডি-বক্সে বাড়ান দারুণ ক্রস আর
অফসাইডের ফাঁদ ভেঙে বিনা বাধায় ডান পায়ের ভলিতে সমতা টানেন কর্নিলিউস।
এরপর জয়সূচক গোলের জন্য মরিয়া হয়ে আক্রমণ শুরু করে
ফ্রান্স। ৮০তম মিনিটে ডান দিক থেকে এনকুকুর জোরাল শট ঝাঁপিয়ে ফেরান গোলরক্ষক
কাসপের স্মাইকেল। দুই মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে এনগোলো কঁতের জোরাল শট
পোস্টের ওপরের অংশে বাধা পায়।
৮৬তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান
ক্রিস্তিয়ান এরিকসেন। তবে তার শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন উগো লরিস। এর দুই মিনিট পরই
এগিয়ে যায় ইউরো-২০২০ এর সেমি-ফাইনালিস্টরা।
এই গোলও দারুণ পাল্টা আক্রমণের ফল। মিকেল ডামসগার্ডের
থ্রু বল প্রথমে হেডে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়েন কর্নিলিউস। পুরোটা সময়
সঙ্গে লেগে ছিলেন ডিফেন্ডার উইলিয়াম সালিবা। তার চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে কোনাকুনি উঁচু
শটে স্বাগতিকদের স্তব্ধ করে দেন ২৯ বছর বয়সী স্ট্রাইকার।
ঘরের মাঠে হেরে আসর শুরুর ধাক্কাটা এমনিতেই অনেক বড়।
তারওপর এমবাপের চোট পাওয়াটাও ফ্রান্সের সামনের ম্যাচগুলোর জন্য বড় দুর্ভাবনার।
আগামী সোমবার নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার মাঠে
খেলবে ফ্রান্স। একই দিনে ডেনমার্ক খেলবে স্বাগতিক অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে।
এই গ্রুপে দিনের আরেক ম্যাচে ক্রোয়েশিয়াকে তাদের মাঠেই
৩-০ গোলে হারিয়ে দিয়েছে অস্ট্রিয়া।