শনিবার আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি বলেন, “ব্যালটের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে সরাতে পারবে না জেনে ষড়যন্ত্রকারীরা অন্য পথ বেছে নিয়েছে। পেছনের দরজা দিয়ে কিভাবে ক্ষমতায় আসা যায়, এজন্য তারা (বিএনপি) আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত চায়।”
এ বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের ‘অতন্ত্র প্রহরী’র মতো সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে অ্যাডভোকেট কামরুল বলেন, “বিএনপির নেতা তারেক রহমান গ্রেনেড হামলা করে বঙ্গবন্ধুকন্যাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছে। আজকে যখন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হবে এবং জাতীয় নির্বাচনের দেড় বছর আছে, দেশকে যখন উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাচ্ছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা; তখন তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে।
“যেকোনোভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যম তারা হয় শেখ হাসিনাকে হত্যা করবে, না হয় ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করবে।”
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে বিএনপি জামায়াত সন্ত্রাসীদের কুরুচিপূর্ন বক্তব্য, হত্যার হুমকি ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে’ এ সমাবেশের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগ।
কামরুল ইসলাম বলেন, “বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা খুনি জিয়া একাত্তরের ঘাতকদের সাথে আঁতাত করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শক্তির মদদে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। সেদিন হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক ছিল জিয়াউর রহমান।
“এখন তাদের উত্তরসুরিরা আজকে স্লোগান দিচ্ছে ‘পঁচাত্তরের হাতিয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার’। যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, যারা জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করেছে, তাদের উত্তরসূরিরাই দিচ্ছে এই ধরনের স্লোগান।”
বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল আখ্যা দিয়ে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল বলেন, “২০১৪ সালে এবং ২০১৮ সালে যে কাজগুলো তারা করেছে অর্থাৎ অগ্নিসন্ত্রাসসহ যেসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে, তারই ইঙ্গিত দিচ্ছে এখন।”
বিএনপি গণতান্ত্রিক সুযোগের ‘অপব্যবহার’ করছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, আমাদের কোনো মিটিং-মিছিল করার সুযোগ দিতো না। আমাদের কোথাও দাঁড়াতেই দেয়নি।
“আজকে তারা প্রেস ক্লাবসহ সব জায়গায় মিছিল-মিটিং করছে। আমরা তাদের সেই সুযোগ দিয়েছি। এই সুযোগ নিয়ে অগণতান্ত্রিক আচরণ করবেন, সন্ত্রাসের পথে হাঁটবেন, তাহলে কিন্তু আপনাদের ছাড় দেওয়া হবে না।”
সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের এ প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, “আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে বিএনপির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হবে।”
পৃথিবীর কোনো দেশে সাম্প্রদায়িক ও স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি রাজনীতি করতে পারে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “আমাদের দেশে তারা রাজনীতি করছে, এটা আমাদের দুর্ভাগ্য। যতোদিন পর্যন্ত এই শক্তিকে আমরা নির্মূল করতে না পারব, ততোদিন দেশের রাজনীতিতে স্বস্তি ফিরে আসবে না।”
সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “একাত্তরের খুনি, পঁচাত্তরের খুনি ও ২১ আগস্টের খুনি- এরা এখন অভিন্ন শক্তি। এই খুনিদের বাংলাদেশের রাজনীতি করার কোনো সুযোগ নেই। তারা এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য উস্কানিমুলক বক্তব্য দেয়, উস্কানিমূলক কথাবার্তা বলে।
“আজকে যখন বাংলাদেশে স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, তখন তারা শেখ হাসিনাকে হত্যার কথা বলছে। কী তাদের উদ্দেশ্য, কী তাদের লক্ষ্য? তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য একটাই, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তনের উন্নয়নের বিপক্ষে দাঁড়ানো। তারা দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বিরুদ্ধে।”
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপনের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, সাধারণ সম্পাদক এ কে এম আফজালুর রহমান বাবু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদ বক্তব্য রাখেন।