শনিবার রাতে রাসায়নিক রাখা ডিপোতে এ দুর্ঘটনায় এরই মধ্যে ৪১ জনের লাশ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। ১৮ ঘণ্টা পরও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
রোববার দুপুরে ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাব হল রুমে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “একটা কন্টেইনার পোর্টে যথেষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই। অগ্নিকাণ্ড বা অন্য কোনো দুর্ঘটনা থেকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই, দুর্ঘটনাকে ফেইস করার ব্যবস্থা তারা করতে পারেননি।
“পোর্টে শুধু উন্নয়নের কথা আওয়ামী লীগ সরকার বলে। কিন্তু সীতাকুণ্ডের এই ঘটনা আবার প্রমাণ করেছে এটা তাদের ফেইক কথা। কারণ দুর্ঘটনা থেকে বাঁচার জন্য কোনো ব্যবস্থাই নেই, কত ভঙ্গুর।”
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “এমনকি সীতাকুণ্ডের ঘটনায় যারা এখন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, হাসপাতালে আছেন, তাদের অক্সিজেন সরবরাহ নেই। তাদের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই, সেখানে কোনো বার্ন ইউনিট নেই। এই ঘটনায় আবার প্রমাণ হলো, সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ, তারা দুর্ঘটনা ও জনগণের জানের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ এবং সত্যিকার অর্থে উন্নয়নের জন্য যে একটা আধুনিক কন্টেইনার পোর্ট প্রয়োজন, সেটা তৈরি করতে আওয়ামী লীগ সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।”
চট্টগ্রাম নগরী থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে কদমরসুল এলাকায় ২৪ একর জমির ওপর ওই কন্টেইনার টার্মিনালে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে। বিএম কন্টেইনার ডিপো নামের ওই বেসরকারি ডিপোতে প্রায় চার হাজার ৩০০ কন্টেইনার ছিল। তার মধ্যে কিছু কন্টেইনারে বিভিন্ন রাসায়নিক ছিল। আর রাসায়নিক থাকায় সেখানে বারবার বিস্ফোরণ ঘটছে, ছড়াচ্ছে বিষাক্ত ধোঁয়া।
ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিট সারারাত চেষ্টার পর সকালে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু বারবার বিস্ফোরণে আগুন ছড়িয়ে পড়ছে বলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান।
বিএনপির মহাসচিব পদ্মা সেতু নিয়েও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।
আমন্ত্রণ পেলে সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপি যাবে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, “পদ্মা সেতু তো কারও পৈত্রিক সম্পত্তি না, এটি রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টায় করা। এখানে আরও একটি কথা আপনাদের জানিয়ে দেই, পদ্মা সেতুর প্রথম ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন খালেদা জিয়া। একদিকে না, পদ্মা সেতুর দুই দিকেই ভিত্তিপ্রস্তর করা হয়েছিল। এগুলো কিন্তু কেউ উচ্চারণও করে না, বলেও না।”
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বর্তমান সরকার পরিবর্তন করতে হবে। তারপর একটা নিরপেক্ষ সরকার আনতে হবে এবং এই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাহলে জনগণ তাদের ভোট প্রয়োগ করে পছন্দের সরকার গঠন করবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ উপস্থিত ছিলেন।