যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে মাস্কের হতাশাবাদী মনোভাবের বিষয়ে বাইডেনকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল গেল ৩ জুন। সেই প্রশ্নের জবাবে হালকা ব্যাঙ্গাত্মক সুরে তিনি বলেন, “চাঁদে ভ্রমণের জন্য তাকে অনেক অনেক শুভকামনা।”
স্পেসএক্সের পুনরায় চাঁদে মানুষ পাঠানোর অর্থায়নে বড় একটি অংশ আসে বাইডেন প্রশাসনের কাছ থেকে।
হোয়াইট হাউজে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলন চলাকালীন মাস্কের মন্তব্যের বিষয়টি উঠে আসে, যেখানে একজন প্রতিবেদক যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে মাস্কের মনোভাব সম্পর্কে বাইডেনের কাছে জানতে চান।
প্রশ্নটি এসেছে সম্প্রতি টেসলার নতুন কর্মী নেওয়া বন্ধ করা এবং ১০ শতাংশ কর্মী ছাটাই করার সূত্র ধরে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি নিয়ে মাস্কের ‘নেতিবাচক’ মনোভাবের জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মাস্কের এই সিদ্ধান্তের বিপরীতে ‘ফোর্ড’, ‘স্টেলান্টিস’ ও ‘আইবিএম’-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম উল্লেখ করেন বাইডেন। প্রতিষ্ঠানগুলো এই মুহুর্তে যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করছে।
স্পেসএক্সের ‘চাঁদে ভ্রমণ’ নাসার ‘আর্টেমিস’ অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কারণ, চাঁদের পৃষ্ঠে প্রথম নারী এবং ভিন্ন বর্ণের নভোচারী পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে মহাকাশ গবেষণা সংস্থাটি।
আর্টেমিস ট্রাম্প প্রশাসনের একটি প্রকল্প, যা ক্ষমতা বদলের পর টিকে যাওয়া কয়েকটি প্রকল্পের একটি।
২০২১ সালে বাইডেন প্রশাসনের অধীনস্থ নাসা তাদের পরবর্তী-প্রজন্মের রকেট নির্মাণের জন্য বেছে নেয় স্পেসএক্স-কে। এই রকেট ‘স্টারশিপ’ নামে পরিচিত। এটি আর্টেমিসের জন্য চাঁদে অবতরণের যান হিসেবে ব্যবহৃত হবে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ।
স্টারশিপ-কে চাঁদের পৃষ্ঠে মানুষ চালিত যানে রূপান্তর করতে মাস্কের প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স-কে ২৯০ কোটি ডলার অনুদান দিয়েছে নাসা। ২০২৫ সাল নাগাদ চাঁদে প্রথম আর্টেমিস অবতরণের পরিকল্পনা করছে স্পেসএক্স।
সেই বিবেচনায়, স্পেসএক্স-এর চাঁদে ভ্রমণ নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের শুভেচ্ছা জানানো উচিত কারণ মহাকাশে নাসার মানুষ পাঠানোর প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে এই পদক্ষেপ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
সেই ক্ষেত্রে বাইডেনের মন্তব্যকে যুক্তিসঙ্গতই বলা যায়। এর প্রতিক্রিয়ায় মাস্ক বলেছেন, “ধন্যবাদ মিস্টার প্রেসিডেন্ট!”
সাধারণত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের মহাকাশ সম্পর্কে কথা বলার নজির খুবই কম। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও তার প্রশাসনের আমলে শুরু হওয়া আর্টেমিস প্রকল্প পুরোপুরি বুঝতে পারেননি। পাশাপাশি, এ বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষেরও তেমন আগ্রহ নেই বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ভার্জ।
জনপ্রিয় টিভি শো ‘জিওপার্ডি’র সাম্প্রতিক এক পর্বে প্রতিযোগীদের এক হাজার ডলার সমমূল্যের এক ‘ধাঁধায়’ বলা হয়, “অ্যাপোলোর (গ্রিক দেবতা) বোনের নামে নাসার যে প্রকল্প ২০২৪ সাল নাগাদ চাঁদে একজন নারী ও পুরুষ অবতরণ করাতে পারে।” প্রতিযোগীদের কেউই এই প্রশ্নের উত্তর জানতো না।