চার বছরেরও বেশি সময় পর বিমানবাহী রণতরী
নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়া শেষ হওয়ার পরদিন রোববার পিয়ংইয়ং
এ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছুড়ল বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
পিয়ংইয়ংয়ের সুনান এলাকা থেকে এ স্বল্প
পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ছোড়া হয়েছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ।
সরকারি এক সূত্রের বরাত দিয়ে জাপানের বার্তা
সংস্থা কিয়োডোও উত্তর কোরিয়ার একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর দিয়েছে।
কেবল যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া মহড়াই
নয়, উত্তর কোরিয়া বিষয়ক মার্কিন বিশেষ দূত সুং কিমের সিউল সফর নিয়ে বার্তা দিতেই পিয়ংইয়ং
একদিনে এতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
কিম শনিবারই দক্ষিণ কোরিয়া ছেড়েছেন।
২০১৭ সালের পর প্রথমবার উত্তর কোরিয়া একটি
পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে- এমন ইঙ্গিতের মধ্যে শুক্রবার সুং কিম
দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যে কূটনৈতিক আলোচনায়
আগ্রহী, তা পিয়ংইয়ংকে স্পষ্টভাবেই বলেছে ওয়াশিংটন।
কিম জানান, তিনি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারসহ
পিয়ংইয়ংয়ের পছন্দের বিষয় নিয়েও আলোচনা করতে চান।
উত্তর কোরিয়ার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র
ছোড়ার প্রতিক্রিয়ায় দেশটির ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দিতে কয়েকদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র আহ্বান
জানিয়েছিল। অবশ্য চীন-রাশিয়ার ভিটোর কারণে তাদের প্রস্তাব হালে পানি পায়নি।
সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে উত্তর কোরিয়াকে
আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ নানান পাল্লার একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে
দেখা গেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এশিয়া
সফর শেষে গত ২৫ মে-তেও তারা তিনটি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।
এর মধ্যে প্রথমটি তাদের সর্ববৃহৎ আন্তঃমহাদেশীয়
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হোয়াসং-১৭ ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
দ্বিতীয় ক্ষেপণাস্ত্রটি মাঝপথেই অকার্যকর
হয়ে যায় বলে সেসময় বলেছিলেন দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা, তৃতীয়টি ছিল স্বল্প পাল্লার
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র।
শনিবার দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের
নৌযানগুলো জাপানি দ্বীপ ওকিনাওয়া আন্তর্জাতিক জলসীমার কাছে তাদের তিনদিনের মহড়া শেষ
করে। এই মহড়ায় অন্যান্য যুদ্ধজাহাজের সঙ্গে এক লাখ টন ওজনের পারমাণবিক শক্তিধর বিমানবাহী
রণতরী ইউএসএস রোনাল্ড রিগানও ছিল।
গত মাসে ক্ষমতায় আসা দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট
ইয়ুন সুক-ইয়ল উত্তর কোরিয়াকে মোকাবেলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সামরিক মহড়ার
পরিমাণ বাড়ানোর ব্যাপারে বাইডেনের সঙ্গে একমত হয়েছিলেন।
উত্তর কোরিয়া শুরু থেকেই এসব যৌথ মহড়ার
সমালোচনা করে আসছে।
মুখে কূটনীতির কথা বললেও পিয়ংইয়ংয়ের ব্যাপারে
যুক্তরাষ্ট্রের ‘বৈরি নীতি’ যে এখনও বিদ্যমান,
এসব মহড়াই তার উদাহরণ, বলেছে তারা।