ক্যাটাগরি

‘রক্ত ও ডাক্তার চাই’, আহতদের আর্তনাদ চমেক হাসপাতালে

রেডক্রিসেন্টের সদস্যরা রক্তের জন্য হ্যান্ডমাইকে একের পর এক ঘোষণা দিয়েই যাচ্ছেন। যাদের রক্তের প্রয়োজন এবং যারা রক্ত দিতে চান তাদের যোগাযোগ করতে অনুরোধ করছেন। সবাইকে ব্লাড ব্যাংকের দিকে যেতে বলছেন।

ভিড়, বাঁশির শব্দ, আহতদের কান্না আর আর্ত চিৎকারে সেই ঘোষণাও হারিয়ে যাচ্ছে।

চমেক হাসপাতালে আহতদের সংখ্যা এত বেশি ছিল যে আগতদের কারও কারও নাম এন্ট্রি করা হয়নি। আঘাত অনুসারে তাদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেট কার, হিউম্যান হলার, সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে আহতদের আনা হচ্ছিল রাত সোয়া ১টা পর্যন্ত।

তখন পর্যন্ত সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, আহতের সংখ্যা বাড়ছে, তা দুই শত ছাড়িয়ে যেতে পারে।

হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মো. ইলিয়াস চৌধুরী বলেন, বিএম ডিপোতে আগুন থেকে কন্টেইনারে বিস্ফোরণে আহতরা সবাই চট্টগ্রাম মেডিকেলে এসেছেন। এখনও আসছেন। সব চিকিৎসক ও নার্সদের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জড়ো করেছেন। রক্ত দেওয়ার জন্য লোকজন জড়ো করা হয়েছে।

তিনি চিকিৎসকদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমার এ বক্তব্য যারা শুনছেন চমেক ও অন্য যত ডাক্তার চট্টগ্রামে থাকেন তারা সবাই নিজ নিজ এপ্রোনটা পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চলে আসুন।“ 

চমেক হাসপাতালে শত শত স্বেচ্ছাসেবক জড়ো হয়েছেন। এরমধ্যে রেড ক্রিসেন্টসহ সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছেন। 

এদিকে ফৌজদারহাট- বায়েজিদ লিংক রোডটিতে শুধু আহতদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স চলাচলের জন্য খোলা রাখা হয়েছে। অন্য যানবাহন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে চলাচল করছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

চমেক হাসপাতাল এলাকা থেকেও অনেক অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলের দিকে যায় আহতদের আনতে। সেগুলোতে করেও আহতদের হাসপাতালে আনা হচ্ছে।

পা বিচ্ছিন্ন পুলিশ সদস্যের

সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, কেমিকেলের কন্টেইনারে আগুন লাগার পর পানি দিলে তা আরও বেড়ে যায়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

এসময় আগুন নেভাতে গেলে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের একজন সদস্যের পা প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। থানার আরও চারজন পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত হয়েছেন শিল্প পুলিশের আরও চার সদস্য।

এর আগে ফায়ার সার্ভিসের চার জন কর্মী আহত হওয়ার খবর দিয়েছিল স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শাহজাহান শিকদার জানান, বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের কাছে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আগুনের খবর দেওয়া হয়। এরপর সেখানে আটটি ইউনিট যায়। প্রাথমিকভাবে হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিস্ফোরণের কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান তিনি।

চট্টগ্রাম নগরী থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ২৪ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এ ডিপোতে বিস্ফোরণের শব্দ তিন কিলোমিটার দূর থেকেও শুনেছেন স্থানীয় সাংবাদকি মিজানুর রহমান ইউসুফ বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানান।