কিন্তু
এই যোদ্ধাদের নেতারা এখনও আজভস্তাইল ইস্পাত
কারখানার ভেতরে লুকিয়ে আছেন বলে জানা
গেছে। এতে
কয়েক দশকের মধ্যে ইউরোপে হওয়া সবচেয়ে দীর্ঘ
ও রক্তাক্ত লড়াইয়ের অবসান বিলম্বিত হচ্ছে।
রাশিয়ার
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আরও ৬৯৪ জন
আত্মসমর্পণ করায় এখন পর্যন্ত
আজভস্তাইল ইস্পাত কারখানার মোট ৯৫৯ জন
যোদ্ধা তাদের অস্ত্র নামিয়ে রাখল।
আজভ
সাগর তীরবর্তী ইউক্রেইনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী মারিউপোলের প্রায় পুরোটা রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেলেও এই
বিশাল ইস্পাত কারখানাটিতে প্রতিরোধকারী ইউক্রেইনীয় যোদ্ধারা অবস্থান নিয়ে থাকায় রুশ
বাহিনী এই অংশটির দখল
নিতে পারছিল না।
ছবি: রয়টার্স
বার্তা
সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার ঘোষণা নিশ্চিত হলে কারখানাটির ভেতরে
লুকিয়ে থাকা বাকি কয়েকশত
যোদ্ধার ভাগ্য নিয়ে তৈরি হওয়া
অনেক রহস্যের অবসান ঘটবে।
মঙ্গলবার
ইউক্রেইন মারিউপোলের এই শেষ ঘাঁটিটিতে
থাকা সব যোদ্ধাদের তাদের
অবস্থান ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ
দিয়েছিল। তারপর
থেকে ২৬৪ জন যোদ্ধা
কারখানাটি ছেড়েছে বলে নিশ্চিত করেছে
তারা। কিন্তু
রাশিয়ার সর্বশেষ ঘোষণার বিষয়ে মন্তব্যের জন্য লিখিত অনুরোধ
জানালেও তারা তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া
দেয়নি, জানিয়েছে রয়টার্স।
ইস্পাত
কারখানা এলাকার নিয়ন্ত্রণ নেওয়া রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নেতা দেনিশ পুশিলিন
স্থানীয় বার্তা সংস্থা ডিএএনকে জানিয়েছেন, কারখানাটির ভেতরে থাকা আজভ রেজিমেন্টের
মূল কমান্ডাররা এখনও আত্মসমর্পণ করেনি।
এই কমান্ডাররা আত্মসমর্পণ করলেই মারিউপোলে প্রায় তিন মাস ধরে
চলা অবরোধের অবসান ঘটবে। এক
সময়ের ৪ লাখ বাসিন্দার
সমৃদ্ধ এই শহরটি এখন
ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাশিয়ার
অবরোধ ও বোমাবর্ষণে শহরটির
হাজার হাজার বাসিন্দার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ ইউক্রেইনের।
এর আগে রাশিয়া জানিয়েছিল,
সোমবার রাতে অন্তত ২৫৬
জন ইউক্রেইনীয় যোদ্ধা ‘তাদের অস্ত্র নামিয়ে রেখে আত্মসমর্পণ করেছে’,
এদের মধ্যে ৫১ জন গুরুতর
আহত।
ছবি: রয়টার্স
আর ইউক্রেইন বলেছে, ২৬৪ জন সেনা
আজভস্তাইল ছেড়ে গেছে, তাদের
মধ্যে আহত ৫৩ জন
আছেন।
সোমবার
রাতে রাশিয়ার সাঁজোয়া যানগুলোর পাহারায় আত্মসমর্পণকারী ইউক্রেইনীয় যোদ্ধাদের বহনকারী বাসগুলো ইস্পাত কারখানাটি ছেড়ে যায়।
এর মধ্যে পাঁচটি বাস রাশিয়ার অধিকৃত
নোভোজভস্ক শহরে যায়, ইউক্রেইনের
আহত যোদ্ধাদের সেখানে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে মস্কো জানিয়েছে।
আজভস্তাইল
থেকে রওনা হওয়া আরও
সাতটি বাস দোনেৎস্কের কাছে
রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত ওলেনিভকা শহরে নতুন করে
আবার চালু করা একটি
কারাগারে গিয়ে পৌঁছায় বলে
জানিয়েছেন রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক।
ক্রেমলিন
জানিয়েছে, বন্দিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী আচরণ
করা হবে বলে ব্যক্তিগতভাবে
নিশ্চয়তা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
ইউক্রেইনীয়
কর্মকর্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলছেন, রুশ
বন্দিদের সঙ্গে ইউক্রেইনীয় বন্দিদের বিনিময় করার বিষয়ে একটি
চুক্তি হতে পারে।
অপরদিকে মস্কো বলেছে, ‘নাৎসি’ যোদ্ধাদের নিয়ে এ ধরনের
কোনো চুক্তি হবে না।
২০১৪
সালে রাশিয়া সমর্থিত ইউক্রেইনীয় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করাতে উগ্র
ডানপন্থি স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মিলিশিয়া বাহিনী
আজভ রেজিমেন্ট গঠিত হয়।
তাদের নব্যনাৎসি বা ফ্যাসিবাদী সংগঠন
বলা হলেও আজভ রেজিমেন্ট
তা অস্বীকার করেছিল।