চোট কাটিয়ে অনুমিতভাবেই দলে ফিরেছেন অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টের দল থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দলে বাদ পড়েননি কেউ। হজ পালনের জন্য এই সফর থেকে মুশফিকুর রহিমের ছুটির কথা জানানো হয় আগেই।
চোটের কারণে দুই পেসার তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম ও অফ স্পিনার নাঈম হাসানের না খেলাও নিশ্চিত ছিল আগেই।
টেস্ট দল নিয়ে মূল কৌতূহল ছিল মুস্তাফিজুর রহমানকে ঘিরেই। লাল বলের ক্রিকেটের আবহে নেই তিনি অনেক দিন ধরে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সবশেষ টেস্ট খেলেছেন তিনি। গত সাড়ে তিন বছরে টেস্ট খেলেছেন স্রেফ দুটি, টেস্টের বাইরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে গত ৬ বছরে খেলেছেন ৫ ম্যাচ। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে গত দুই দফায় তিনি সই করেননি লাল বলের চুক্তিতে।
৭ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি টেস্ট খেলেছেন স্রেফ ১৪টি উইকেট নিয়েছেন ৩০টি। ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন সাড়ে তিনের কাছাকাছি, গড় ৩৬.৭৩। স্ট্রাইক রেট ৬৭.১। বিবর্ণ রেকর্ডই বলছে, লাল বলের ক্রিকেটে খুব বেশি কার্যকারিতা এখনও পর্যন্ত তিনি দেখাতে পারেননি।
তার পরও হুট করে তাকে টেস্টে নেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয় মূলত তাসকিন-শরিফুলদের চোটের কারণে। আইপিএলে খেলার জন্য গত প্রায় দুই মাস ধরে মুস্তাফিজ আছেন ভারতে। টেস্ট দলে তাকে প্রয়োজন বলে বার্তা পাঠান নির্বাচকরা। তবে তিনি শুরুতে আগ্রহী ছিলেন না খুব একটা।
বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালার ইউনুস শনিবার সংবাদমাধ্যমকে জানান, লম্বা আইপিএল খেলার পর এখনই টেস্ট খেলতে চান না মুস্তাফিজ। তবে দলের তাকে প্রয়োজন ও বোর্ড তাকে টেস্ট দলে পেতে চায়, এই বার্তা তাকে দেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তাকে রেখেই ঘোষণা করা হলো টেস্ট স্কোয়াড।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, জোর করে মুস্তাফিজকে টেস্টে ফেরানো হয়নি।
“সে খুশি মনেই খেলতে প্রস্তুতি আছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই বলেছে এটা। জোরের তো কিছু নেই। বায়ো-বাবলের কারণে এতদিন সে টেস্ট খেলতে চায়নি। এখন তো কোনো বাধা নেই। যখন প্রয়োজন মনে হবে, তাকে আমরা টেস্টে পাব বলেই আশা রাখি।”
মিরাজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলে ছিলেন শুরুতে। পরে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ক্যাচ নিতে গিয়ে আঙুলে চোট পাওয়ায় ছিটকে যান। এখনও তিনি পুরোপুরি ফিট নন। সফরের আগেই ফিট হবেন বলে নিশ্চিত করলেন প্রধান নির্বাচক, “ফিজিও বলেছেন, ১০ দিন পর থেকে মিরাজ পুরো ফিট, সব করতে পারবে।”
অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিমকে না পেলেও বাড়তি কোনো ব্যাটসম্যান দলে যোগ করা হয়নি। ভরসা রাখা হয়েছে ইয়াসির আলি চৌধুরি, মোসাদ্দেক হোসেনদের ওপর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে যদিও সবুজাভ উইকেটে খেলা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, খেলা হয় সেখানে ডিউক বলে, তবু দলে ফেরানো হয়নি সুইং বোলার আবু জায়েদ চৌধুরিকে।
টেস্ট দলের সঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলও ঘোষণা করা হয়েছে এ দিন। ঘরোয়া ক্রিকেট রাঙিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে জাতীয় দলে ফিরেছেন এনামুল হক (বিজয়)।
সফরের সূচি এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করা হলেও আগামী ৫ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজে রওনা হওয়ার কথা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হওয়ার কথা ১৬ জুন। আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ এই সিরিজ।
বাংলাদেশ টেস্ট দল: মুমিনুল হক (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, সাকিব আল হাসান, লিটন কুমার দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, ইয়াসির আলি চৌধুরি, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ, ইবাদত হোসেন চৌধুরি, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, রেজাউর রহমান রাজা, শহিদুল ইসলাম, নুরুল হাসান সোহান, মুস্তাফিজুর রহমান।