রোববার বেলা ১১টা দিকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয় বলে বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ায় গত ৫ ডিসেম্বর মনজুরে মাওলাকে ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। গত ১ অক্টোবর তার ৮০তম জন্মবার্ষিকী ছিল।
তার জানাজা ও দাফনের বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে বাংলা একাডেমি পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
মনজুরে মওলার মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতির শোক
মনজুরে মওলার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক
পেশাজীবনে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করা মনজুরে মওলা গত শতকের আশির দশকের শুরুর দিকে বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক ছিলেন।
বাংলা একাডেমিতে তার তিন বছরের কার্যকালেই ‘একুশ আমাদের পরিচয়’ প্রত্যয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় অমর একুশে গ্রন্থমেলা, যা আজ বিশ্বের দীর্ঘ সময়ব্যাপী চলা বই উৎসব।
ঐতিহাসিক বর্ধমান ভবন সংস্কার, প্রথম জাতীয় ফোকলোর কর্মশালার আয়োজন, আরজ আলী মাতুব্বর বা খোদা বক্স সাঁইয়ের মতো লোকমনীষাকে ফেলোশিপ দেওয়ার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, ডেভিডসনের চিকিৎসাবিজ্ঞান কিংবা আনিসুজ্জামানের পুরনো বাংলা গদ্যের মতো বই প্রকাশে উদ্যোগী হয়েছিলেন মনজুরে মওলা। ‘ভাষা শহীদ গ্রন্থমালার’ ১০১টি বই বাংলা একাডেমিতে তার অসামান্য কীর্তি।
মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে ১৯৮২ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১৯৮৬ সালের ১১ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অবসরের পর বাংলা একাডেমির ফেলো হিসেবেও মনোনীত হয়েছিলেন।
তিনি সাহিত্যে অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ও বাংলা একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, “মনজুরে মওলা বাংলাদেশের সাহিত্য-জগতে এক অনন্য নাম। নিজস্বতা-চিহ্নিত কবিতা এবং শিল্পসুষমাময় গদ্য রচনা করে তিনি তার স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর রেখেছেন।
“রবীন্দ্রনাথের বিচিত্র বিষয় নিয়ে ব্যতিক্রমী গবেষণাকর্ম একজন অনন্যসাধারণ রবীন্দ্র-গবেষক হিসেবে তাকে প্রতিষ্ঠিত করে।”