ক্যাটাগরি

জারুলে সেজেছে শাহজালাল

ক্যাম্পাসের মূল ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতেই চোখ আটকাবে কিলোরোডের দুপাশ জুড়ে থাকা থোকা থোকা জারুলের সারি।

অন্যান্য ফুলের তুলনায় জারুল গাছ বেশি হওয়াতে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে সৌন্দর্যের একচ্ছত্র আধিপত্য এখন এ ফুলের।

বেগুনি রঙের এ ফুল মুগ্ধতা ছড়িয়েছে ক্যাম্পাসের সবজায়গায়; এর সৌন্দর্য মন কেড়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ ক্যাম্পাসে আসা দর্শনার্থীদেরও। জারুল গ্রীষ্মের শুরুতেই ফোটে, দেখা মেলে শরৎ পর্যন্ত।

শাহপরাণ আবাসিক হল, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের সামনেও দেখা মিলবে সারি সারি জারুলের। ইউনিভার্সিটি সেন্টার (ইউসি), চেতনা-৭১ এর পাশে, ছাত্রী হলের রাস্তার দুপাশে, একাডেমিক ভবন গুলোর পাশে, শাহজালাল ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজেসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে প্রায় কয়েক’শ জারুল গাছে ফুল ধরেছে।

ক্যাম্পাসে হাঁটতে হাঁটতে দেখা যাবে-শিক্ষার্থী আর দর্শনার্থীদের কেউ কেউ জারুল ফুল কুঁড়িয়ে এর সৌন্দর্য স্পর্শ করছেন; কেউবা গাছ থেকে ফুল ছিঁড়ে খোপায় গুঁজে নিজেকে রাঙাচ্ছেন বেগুনিতে। অনেকে আবার ছবি তুলে উপভোগ করছেন ‘মায়াবী’ জারুলের সৌন্দর্য।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জসীম উদ্দিন যত্ন আর আবেগ মিশিয়ে ছবি তুলছিলেন জারুলের। কথা বলার জন্য কাছে যেতেই তিনি বলেন, জারুল ক্যাম্পসের চেনাপথের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণে; সেই ছবিই স্মৃতি হিসেবে ধারন করছেন ক্যামেরায়।

জসীমের সহপাঠী জুনায়েদ বলেন, “ক্যাম্পাসের আড্ডা কিংবা গানেও এখন জারুল। এই ফুলের জন্য মন আটকে যায় এক অসীম মায়ায়।”

নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ফাহিম শাকিল বলেন, “প্রতিবছর এপ্রিল থেকে জুন মাসে ক্যাম্পাসের জারুল গাছগুলো ফুলে ফুলে ছেয়ে যায়। এ সময়ে জারুল ফুলে মোড়ানো ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য উপভোগ করেন শিক্ষার্থীরা।”

বুধবার শেষ বিকালে পরিবার নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসেছিলেন সিলেট নগরীর দারিয়াপাড়ার এলাকার মাহতাবুর রহমান। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান ঘুরে তাদেরও চোখ আটকেছে জারুলে।

মাহতাবুর বলেন, “সৌন্দর্যের পাশাপাশি জারুল ফুলের কয়েক ধরনের ঔষধিগুণও রয়েছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর যত্নে বিশেষ নজর দিবেন। “

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফারজানা রায়হান বলেন, “আমাদের ক্যাম্পাসে জারুলের অনেক গাছ। ফুলও ফুটছে অনেক। এটা সত্যিই মনোমুগ্ধকর।‘

গ্রীষ্মের শুরুতেই জারুল গাছে ফুল ফোটে এবং শরৎ পর্যন্ত দেখা যায়। এ গাছের বীজ, ছাল ও পাতা ডায়াবেটিস রোগের ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া জ্বর, অনিদ্রা ও কাশির চিকিৎসায়ও জারুল ব্যবহৃত হয়।

বাংলাদেশ ও ভারত ছাড়াও চীন, মালয়েশিয়ায় জারুল গাছের দেখা পাওয়া যায় বলে জানান ফারজানা।