মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ২৮২। বাংলাদেশের চেয়ে কেবল ৮৩ রানে পিছিয়ে দলটি।
চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় ১৫৩ বলে ৫৮ রানে ব্যাট করছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। ২৯ বলে এক চারে দিনেশ চান্দিমালের রান ১০।
ক্রিজে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান, এখনও ব্যাটিংয়ে বাকি নিরোশান ডিকভেলা। তাই তৃতীয় দিন শেষে একটু এগিয়েই শ্রীলঙ্কা।
৫৯ রানে তিন উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সফলতম বোলার বাঁহাতি স্পিনার সাকিব। গতিময় পেসার ইবাদত ২ উইকেট নেন ৭৮ রানে।
দিন জুড়েই লাইন ও লেংথে অধারাবাহিক ছিলেন পেসার খালেদ আহমেদ। আঁটসাঁট বোলিং করলেও খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেননি তাইজুল ইসলাম। এদিন মোসাদ্দেক হোসেনকে বোলিংয়েই আনেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক।
২ উইকেটে ১৪৩ রান নিয়ে খেলা শুরু করে দ্রুতই নাইটওয়াচম্যান কাসুন রাজিথাকে হারায় শ্রীলঙ্কা। চমৎকার এক ডেলিভারিতে তাকে বোল্ড করে দেন ইবাদত।
পরের উইকেটের জন্য খুব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। অসাধারণ এক ডেলিভারিতে করুনারত্নের প্রতিরোধ ভাঙেন সাকিব। ওভারের বাকি বলগুলো পিচ করার পর বেরিয়ে যাচ্ছিল। এই বলটি পিচ করার পর অনেকটা স্পিন করে ভেতরে ঢুকে আঘাত হানে স্টাম্পে। ড্রিফটের জন্য বলের লাইনে যেতে পারেননি করুনারত্নে, পা বাড়িয়ে খেলার চেষ্টা করেন লঙ্কান অধিনায়ক। চোখে-মুখে অবিশ্বাস নিয়ে ফেরেন তিনি।
১৫৫ বলে ৯ চারে করুনরাত্নে করেন ৮০।
প্রথম ঘণ্টায় দুই উইকেট নেওয়া বাংলাদেশ চেপে ধরতে পারেনি সফরকারীদের। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নেন ম্যাথিউস ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা।
লাঞ্চের আগে শেষ ওভারের প্রথম বলটি সাকিব করা মাত্রই বৃষ্টি নামে মিরপুরে। আগেভাগেই নেওয়া হয় লাঞ্চ। বৃষ্টি থামার পরও মাঠ তৈরি করতে লেগে যায় এক ঘণ্টার বেশি সময়।
স্থানীয় সময় বেলা চারটায় খেলা শুরু হওয়ার পর সাকিব ও ইবাদতের দারুণ বোলিংয়ে প্রথম আধ ঘণ্টায় কেবল একটি সিঙ্গেল নিতে পারেন দুই ব্যাটসম্যান। এই দুই বোলার আক্রমণ থেকে সরার পর চাপ ধরে রাখতে পারেননি খালেদ ও তাইজুল। মূলত অফ স্পিনার হিসেবে এই টেস্টে খেললেও মোসাদ্দেককে বোলিংয়ের জন্য এদিন বিবেচনাই করেননি অধিনায়ক।
৯০ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন ধনাঞ্জয়া। সাকিবকে ছক্কায় ১২৫ বলে ফিফটি করেন ম্যাথিউস। দুই জনের জুটি স্পর্শ করে শতরান। এমন সময় দারুণ এক ডেলিভারিতে ধনাঞ্জয়াকে কট বিহাইন্ড করে দেন সাকিব। ভাঙে ১০২ রানের জুটি।
আম্পায়ার অবশ্য আবেদনে সাড়া দেননি। ব্যাট ছুঁয়েছে কি না, নিশ্চিত ছিলেন না বোলার সাকিবও। তারপরও কিপারের সঙ্গে কথা বলে শেষ মুহূর্তে রিভিউ নেন মুমিনুল। আল্ট্রা এজে দেখা যায়, ব্যাটের কানা ছুঁয়েই বল গিয়েছিল লিটনের গ্লাভসে। পাল্টায় আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।
আলো থাকা সাপেক্ষে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত খেলা চালানো সম্ভব ছিল। তবে ছয়টার আগে থেকেই আলো নিয়ে অভিযোগ করতে থাকেন লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা। শেষ পর্যন্ত ছয়টায় দিনের খেলার ইতি টানেন দুই আম্পায়ার।
বৃষ্টির জন্য এক সেশনের বেশি সময়ের খেলা ভেসে যাওয়ায় শেষ দুই দিন খেলা শুরু হবে নির্ধারিত সময়ের আধ ঘণ্টা আগে সাড়ে নয়টায়। বৃহস্পতিবার সকালে আরেকটু বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন পেসাররা। সেটা কাজে লাগাতে পারলে এখনও হয়তো লিড নেওয়া সম্ভব বাংলাদেশের।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৬৫
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১৪৩/২) ৯৭ ওভারে ২৮২/৫ (করুনারত্নে ৮০, রাজিথা ০, ম্যাথিউস ৫৮*, ধনাঞ্জয়া ৫৮, চান্দিমাল ১০*; খালেদ ১৫-১-৬২-০, ইবাদত ২৬-৪-৭৮-২, সাকিব ২৬-৯-৫৯-৩, মোসাদ্দেক ২-০-১৪-০, তাইজুল ২৮-৬-৬৩-০)