বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি
বলেন, “এই মুহূর্তে বাংলাদেশে নজরুল ইসলাম এত বেশি প্রাসঙ্গিক যে প্রায়ই তার কথা
মনে পড়ে, তার কথা উচ্চারণ করতে ইচ্ছা করে।
“দুর্গম গিরি, কান্তার-মরু দুস্তর পারাবার…।
এটাই হচ্ছে মূল কথা। আজকে এই দুর্গম গিরি কান্তার মরু পার হতে হবে।”
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী
উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, “এই যে দুঃশাসন, ফ্যাসিবাদ,
অন্যায়-অত্যাচার-নির্যাতন আজকে সমগ্র বাংলাদেশকে গ্রাস করে ফেলেছে, এখান থেকে বের
হতে হবে। কিছুক্ষণ আগে একজন বলেছিলেন যে, ঘুমিয়ে থাকে…।
এই ঘুম থেকে জেগে উঠতে হবে।
“আমাদেরকে জেগে উঠে আমাদের নিজেদেরকে মুক্ত করতে
হবে। এই সেই মুক্তিই হচ্ছে আমাদের একমাত্র পথ।”
মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের
হামলার ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “যা ঘটেছে এই যুগে, এটা এখনও দেখতে হয়
আমাদের যে, নারীদের ওপর চরম নির্যাতন করা হচ্ছে। এখানেই নজরুল ইসলাম সবচেয়ে
প্রাসঙ্গিক।
“এখানেই জেগে উঠতে হবে। কারার ঐ লৌহকপাট, ভেঙ্গে
ফেল, কর রে লোপাট, রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী… এভাবে নিজেদের উদ্দীপ্ত
করতে হবে, আমাদের অন্যদেরকে জাগিয়ে তুলতে হবে। আজকে তরুণদেরকে, যুবকদের জেগে উঠতে
হবে।”
নজরুল ইসলামকে আরও বেশি বেশি অধ্যয়ন করতে নেতাকর্মীদের
প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, “যারা সমাজের নেতৃত্ব করছি, যারা বিভিন্ন জায়গায়
কাজ করছি, নজরুলকে যদি আমরা সঠিকভাবে পড়ি, বোঝার চেষ্টা করি, অনুধাবন করি, তাহলে আমরা
আমাদের নিজেদেরকে জানতে পারব, চিনতে পারব।”
বিএনপি মহাসচিবের ভাষায়, “আমরা অন্যের কাছে মাথা
নত করে থাকব না। আধিপত্যবাদের লেজুড়বৃত্তি আমরা করব না, সাম্রাজ্যবাদের লেজুড়বৃত্তি
আমরা করব না।
“আমরা আমাদের জাতির যে সত্ত্বা, সেই সত্ত্বাকে
বিকশিত করে আমাদের দাঁড়িয়ে উঠতে হবে। এটাই দাঁড়াতে হবে, এটার কোনো বিকল্প নেই।”
কবি নজরুল ইসলামের সাহিত্য নিয়ে আরও বেশি গবেষণা
করতে গবেষকদের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, “কবি নজরুলকে এত ছো্ট পরিসরে আলোচনা
নয়, তার জন্য বিশাল আয়োজন করেন- হাজার হাজার লোক সেখানে আসুক, বড় প্যান্ডেল তৈরি
হোক।
“সেখানে আমরা নজরুলের কথা শুনি। সেখানে বিশিষ্ট
গবেষকদের নিয়ে আসুন। আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা আমরা করব। এই উদ্যোগ আপনাদের
(নেতাকর্মীদের) নিতে হবে।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে খালেদা জিয়া অন্তরীণ,
আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেব দেশের বাইরে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন, আমাদের
বাংলাদেশে গণতন্ত্রগামী ৩৫ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে।
“বর্তমান যে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আমরা যে
ভয়াবহ অবস্থায় আছি তা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আসুন আমরা সবাই একসাথে গাই, ‘বল বীর, বল
উন্নত মম শির’।”
অনুষ্ঠানে কবি আবদুল হাই শিকদার, হুমায়ুন কবির
বেপারী, কবি মাহবুব হাসান, ফজলুল হক সৈকত, কবি জাকির আবু জাফর, রেজাবুদ্দৌলা
চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে কবি নজরুল ইসলামের লেখা কবিতা আবৃত্তি
করেন সামিয়া নুজহাত, নাসিম আহমেদ ও লিপি।