ক্যাটাগরি

কাবরেরার প্রতিশ্রুতিতে ‘ফ্যান্টাস্টিক’ কিছু নেই

আগামী ৮ জুন মালয়েশিয়ার কুয়ালা লামপুরে শুরু হবে বাছাই। তার আগে ১ জুন ইন্দোনেশিয়ায় একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ২৭ জনের দল দিয়েছেন কাবরেরা।

এএফসি কাপ খেলতে গিয়ে চোট পাওয়া বসুন্ধরা কিংসের চার জন মতিন মিয়া, সুমন রেজা, মাশুক মিয়া জনি ও কাজী তারিক রায়হানকে আপাতত রেখেছেন তিনি। এদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাতে ইন্দোনেশিয়ার উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে নিবেন। তবে সংবাদ সম্মেলনে কাবরেরা ইঙ্গিত দিয়েছেন এই চার জনের সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ’৯০ শতাংশ’ নেই।

ক্যাম্প থেকে শহীদুল আলম সোহেল ও সাদউদ্দিন ছিটকে গেছেন আগেই। শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে বাদ পড়েছেন অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড নাবীব নেওয়াজ জীবন। তবে চোট সমস্যা নিয়ে পড়ে থাকতে চান না কাবরেরা। এই স্প্যানিশ কোচ বর্তমান দলেই রাখছেন আস্থা।

“এরই মধ্যে আপনারা জানেন, গত ১৬ মে আমরা ক্যাম্প শুরু করেছি, ৮টি ট্রেনিং সেশন হয়েছে। প্রত্যাশার চেয়ে বেশি চমৎকার অভিজ্ঞতা হয়েছে, খেলোয়াড়দের নিবেদন ছিল ফ্যান্টাস্টিক। অনুশীলনে ছেলেদের যে নিষ্ঠা ছিল, তা ভালো কিছু পাওয়ার জন্য যথেষ্ট।”

“কিছু চোট সত্ত্বেও ক্যাম্পের অভিজ্ঞতা ভালো, নতুন খেলোয়াড়দের কাছে আমাদের কিছু প্রত্যাশা ছিল, তারা মেথডের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে কিনা। তারা সেটা পুরোপুরি পূরণ করেছে। যারা যাচ্ছে, যারা যাচ্ছে না, তাদের সবাইকে বলেছি, তোমরা জাতীয় দলের। দল নিয়ে আমার ভাবনা হচ্ছে, দল প্রস্তুত। ছয়-সাত জন খেলোয়াড় চোট পেয়েছে, কিন্তু আমাদের আরও ছয়-সাতজন খেলোয়াড় আছে (তাদের জায়গা পুরণের জন্য)।”

বাছাইয়ে তিন প্রতিপক্ষই ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে বাংলাদেশের (১৮৮তম) চেয়ে; বাহরাইন (৮৯), তুর্কমেনিস্তান (১৩৪) ও স্বাগতিক মালয়েশিয়া (১৫৪) । তাদের বিপক্ষে জাদুকরী কিছু প্রত্যাশা করছেন না কাবরেরা।

“ম্যাজিক্যাল কিছু আমি আশা করি না। আমি মনে করি, আমাদের নিজেদের উপর দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। র‌্যাঙ্কিংয়ে উপরের দিকে থাকা দলগুলোর বিপক্ষে লড়াই করার জন্য প্রতিটি দিন, প্রতিটি ট্রেনিং সেশন আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

প্রস্তুতি ফ্যান্টাস্টিক হলেও চমকপ্রদ কিছুর প্রত্যাশা করছেন না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরও হাসি মুখে দিয়েছেন এই স্প্যানিশ কোচ। আপাতত তিনি ইন্দোনেশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ নিয়েই বেশি মনোযোগী।

“ফ্যান্টাস্টিক কিছু পাওয়ার কথা বলিনি (হাসি)…এটা আসলে মাঠে সবকিছু প্রয়োগের উপর নির্ভর করবে। বাছাইয়ে আমাদের ধাপে ধাপে চিন্তা করা প্রয়োজন। এখনই কোনো লক্ষ্য নির্ধারণ করা দলের জন্য ইতিবাচক হবে না। প্রথমত আমাদের ভাবতে হবে ইন্দোনেশিয়া ম্যাচ নিয়ে। দেখতে হবে তাদের বিপক্ষে কেমন করি। এরপর বাছাই নিয়ে ভাবব।“

“ইন্দোনেশিয়া এবং বাছাইয়ের প্রতিটি ম্যাচে আমি দলের কাছ থেকে লড়াকু ফুটবল চাই। যদি ম্যাচের প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের মনোযোগ না থাকে, তাহলে প্রতিপক্ষ আমাদের শাস্তি দিবে। খেলোয়াড়দের জন্য এটা দারুণ সুযোগ প্রমাণ করার জন্য। যদি আমরা লড়াই করতে পারি, তাহলে ভালো কিছু সম্ভব, আমাদের আগে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলা খেলতে হবে।”

অনেক টানাপোড়েনের অবসানের পর কিংসের হয়ে এএফসি কাপ খেলেছেন এলিটা কিংসলে। নাইজেরিয়ান থেকে বাংলাদেশি হয়ে যাওয়া এই ফরোয়ার্ডের জাতীয় দলে সুযোগ মেলেনি। তবে সুযোগ মিলেছে কিংসে অনিয়মিত ফরোয়ার্ড মাহবুবুর রহমান সুফিল। তাকে রাখার কারণ হিসাবে কাবরেরা জানিয়েছেন ‘শক্তি-সামর্থ্য আর সব পজিশনে’ খেলতে পারার কারণের কথা।

চোটের হানায় চেনা অনেক সতীর্থকে হারিয়ে বলতে গেলে ‘দুর্বলতম’ দল পেয়েছেন অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। তবে দলে একেবারেই নতুন সাইফ স্পোর্টিংয়ের মিডফিল্ডার সাজ্জাদ হোসেন, শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের গোলরক্ষক মোহাম্মদ নাইম ও উত্তর বারিধারার মিডফিল্ডার পাপন সিংসহ বাকিদের উপর আস্থা রাখছেন জামাল।

“শেষ দশটা দিন কেবল পুরানদের জন্য নয়, নতুন খেলোয়াড়দের জন্যও খুব ভালো এবং ফলদায়ক ছিল। নতুন কোচের ধ্যান-ধারণা, আমরা কিভাবে খেলব, কিভাবে প্রেসিং করব, কিভাবে ডিফেন্ড, অ্যাটাক করব সেগুলো বুঝতে পেরেছি। এখন আমরা সামনের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে আছি। ইন্দোনেশিয়া ম্যাচের পর আমরা মালয়েশিয়ার বাছাই পর্ব নিয়ে ভাবব।”

“(চোট পাওয়া) যে খেলোয়াড়দের কথা আপনারা উল্লেখ করছেন, অবশ্যই তারা লিগের বড় খেলোয়াড়। কিন্তু যারা আছে, তাদেরকে অবশ্যই শতভাগ দিতে হবে, দলে অনেক নতুন খেলোয়াড় আছে, যারা শতভাগের বেশি দিবে নিজেদের মান দেখানোর জন্য। অবশ্যই যাদের পাচ্ছি না, তাদের মিস করব। কিন্তু যারা আছে, কোচ তাদের দেখেছে, তাদেরও সামর্থ্য আছে।”

গোলকিপার:

আনিসুর রহমান জিকো (বসুন্ধরা কিংস) আশরাফুল রানা (শেখ রাসেল) ও মোহাম্মদ নাঈম (শেখ জামাল)

ডিফেন্ডার:

টুটুল হোসেন বাদশা ( আবাহনী লিমিটেড) রিয়াদুল হাসান রাফি (সাইফ স্পোর্টিং), রহমত মিয়া (শেখ রাসেল), রায়হান হাসান (শেখ জামাল), ইসা ফয়সাল (পুলিশ), ইয়াসিন আরাফাত (বসুন্ধরা কিংস), বিশ্বনাথ ঘোষ (বসুন্ধরা কিংস), রিমন হোসেন (বসুন্ধরা কিংস), কাজী তারিক রায়হান (বসুন্ধরা কিংস)

মিডফিল্ডার:  জামাল ভুঁইয়া (সাইফ স্পোর্টিং), মেরাজ হোসেন অপি (সাইফ স্পোর্টিং), পাপন সিং (উত্তর বারিধারা), সোহেল রানা (বসুন্ধরা কিংস), বিপলু আহমেদ (বসুন্ধরা কিংস), আতিকুর রহমান ফাহাদ (বসুন্ধরা কিংস), সাজ্জাদ হোসেন (সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব), মাশুক মিয়া জনি (বসুন্ধরা কিংস)

ফরোয়ার্ড:

মোহাম্মদ ইব্রাহিম (বসুন্ধরা কিংস), রাকিব হোসাইন (আবাহনী লিমিটেড), জাফর ইকবাল (মোহামেডান), ফয়সাল আহমেদ ফাহিম (সাইফ স্পোর্টিং), মাহাবুবুর রহমান সুফিল (বসুন্ধরা কিংস), মতিন মিয়া (বসুন্ধরা কিংস), সুমন রেজা (বসুন্ধরা কিংস)