মেটার দাবি, ব্যবহারকারীদের
তথ্য কীভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে, নীতিমালায় আসন্ন পরিবর্তনে সে বিষয়টি বোঝা আরও সহজ হবে।
২৬ জুলাই থেকে
ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম দুই প্ল্যাটফর্মে এ নতুন নীতিমালা কার্যকর হবে। হোয়াটসঅ্যাপসহ
মেটার মালিকানাধীন অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম এর আওতায় আসবে না বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে
বিবিসি।
গত ২৬ মে থেকেই
ব্যবহারকারীদের নোটিফিকেশন পাঠিয়ে আসন্ন পরিবর্তন সম্পর্কে জানান দেওয়া শুরু করেছিল
মেটা।
ব্যবহারকারীদের
তথ্যের বাণিজ্যিক ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বাজার নিয়ন্ত্রক এবং ডিজিটাল অধিকারকর্মীদের
সমালোচনার মুখে পড়েছে মেটা।
নিজস্ব ব্লগ পোস্টে
মেটা বলেছে, নীতিমালা পরিবর্তন কোম্পানিকে ‘নতুন কোনো উপায়ে’ ব্যবহারকারীর ডেটা ‘সংগ্রহ,
ব্যবহার এবং শেয়ার করতে দেবে না’।
তবে বিবিসি লিখেছে,
নীতিমালায় দুটি পরিবর্তন আসছে যা ফেইসবুকের ডেটা নেওয়ার ওপর ব্যবহারকারীদের নিয়ন্ত্রণকে
প্রভাবিত করবে।
কে ব্যবহারকারীর
পোস্ট ডিফল্ট হিসেবে দেখতে পারবে, সেটি নির্ধারণ করে দেওয়া যাবে নতুন একটি সেটিংয়ের
মাধ্যমে। পাশাপাশি ব্যবহারকারী যে বিজ্ঞাপনগুলো দেখেন, সেগুলো নিয়ন্ত্রণের ফিচারগুলো
নিয়ে আসা হবে একই ইন্টারফেইসে।
ব্লগ পোস্টে মেটার
প্রধান গোপনতা কর্মকর্তা মাইকেল প্রোটটি বলেছেন, তার প্রতিষ্ঠান এবং সেবাগ্রাহকদের
কাছে ‘কী প্রত্যাশিত তা আরও ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে’ চায় তার কোম্পানি।
মেটা কোন প্রেক্ষাপটে
কোনো অ্যাকাউন্ট ডিজঅ্যাবল করবে, বন্ধ করে দেবে কিংবা অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়ার পর কী
হয়, সে প্রশ্নগুলোর সহজ ব্যাখ্যা মিলবে নতুন পরিবর্তনগুলো থেকে।
এছাড়া, তৃতীয়পক্ষের
যে কোম্পানিগুলোকে ফেইসবুক ব্যবহারকারীদের ডেটা দেয়, তাদের ধরন এবং কোম্পানির বিভিন্ন
পণ্য বা সেবার মধ্যে ব্যবহারকারীর ডেটা আদান-প্রদান প্রসঙ্গে আরও বিস্তারিত তথ্য দেওয়া
হবে বলে জানিয়েছে মেটা।
‘বাজার নিয়ন্ত্রকদের চাপেই’ পরিবর্তন
মেটা বলছে, নিয়ন্ত্রক
ও গোপনতা আইনের ‘বাড়তি চাপের মুখে’ নীতিমালার জটিলতা কমিয়ে আনার জন্য নতুন পদক্ষেপ
নিয়েছে তারা।
ব্যবহারকারীদের
ডেটা সংগ্রহ করার কৌশল এবং সংগ্রহ করা ডেটার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রশ্নে একাধিকবার
বাজার নিয়ন্ত্রকদের তদন্তের মুখে পড়েছে বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুক।
ফেব্রুয়ারি মাসেই
মেটা শেয়ার মালিকদের সতর্ক করে বলেছিল, ‘নিয়ন্ত্রকদের চাপ’ ভবিষ্যতের ব্যবসা বৃদ্ধিতে
বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।
২০১৮ সালে ইউরোপীয়
ইউনিয়নের ডেটা গোপনতা আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে এ বছরের মার্চ মাসেই এক কোটি ৭০ লাখ ইউরো
জরিমানার মুখে পড়েছে মেটা।
অন্যদিকে সোমবার
মেটার কাণ্ডারী মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ডিস্ট্রিক্ট
অফ কলোম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্ল রাসিন।
জাকারবার্গের
বিরুদ্ধে তার অভিযোগ, ২০১৬ সালের কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির ঘটনায় জাকারবার্গ
নিজেই ব্যবহারকারীদের গোপন ডেটা বেহাত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
নতুন মামলা প্রসঙ্গে
এখনও কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে রাজি হয়নি মেটা।
পরিবর্তনের পরেও প্রশ্নবিদ্ধ
মেটা গোপনতা নীতিমালা
‘আপডেট’ করার ঘোষণা দিলেও, এতে সন্তুষ্ট নন সমালোচক ও বিশ্লেষকরা।
‘টেকনোলজি ইজ
নট নিউট্রাল: এ শর্ট গাইড টু টেকনোলজি এথিকস’ এর লেখক স্টেফানি হেয়ার মেটার সাম্প্রতিক
ওই পদক্ষেপকে ‘দায় এড়ানোর কৌশল’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
তিনি প্রশ্ন তুলেছেন,
“পরিবর্তনগুলো আসলে কাদের জন্য – ব্যবহারকারী নাকি বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো?
“তারা ধরেই নিয়েছে
যে বেশিরভাগ ব্যবহারকারী… সামাজিক সংযোগ, যোগাযোগের সুবিধা আর ব্যবসার খাতিরে গোপনতা হারানোর
বিষয়টি মেনে নিয়েছেন… তাই ওই ঘোষণা আসলে নজরদারি পুঁজিবাদ নিয়ে সমালোচনা বন্ধের কাজ
করবে।”
আরও খবর: