তাদের একজন বিবিসিকে বলেছেন, একটি অ্যাকাউন্ট মুছে দেওয়া দেওয়ার জন্য পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার ইউরো দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল তাকে। ইরানিরা বিশেষ করে লেখক মাসিহ আলিনেজাদকে নিয়ে আগ্রহী ছিল।
২০২১ সালেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার জানিয়েছিল, ইরানি বংশোদ্ভূত মার্কিন অধিকারকর্মী আলিনেজাদকে ‘ভুল বুঝিয়ে’ তৃতীয় কোনো দেশে নিয়ে সেখান থেকে অপহরণের চেষ্টা করেছিলেন ইরানের কর্মকর্তারা।
ইনস্টাগ্রামের সেই কনটেন্ট মডারেটরদের একজন অভিযোগ করেছেন, তার ইরানি সহকর্মীদের কয়েকজন ‘সরকারপন্থি মূল্যবোধে প্রভাবিত হয়ে’ ফটো শেয়ারিংয়ের এই প্ল্যাটফর্ম থেকে ছবি ও ভিডিও মুছে দিয়েছিলেন।
ইনস্টাগ্রাম থেকে সরকারবিরোধী প্রতিবাদের ছবি ও ভিডিও মুছে দেওয়া হচ্ছে বলে সম্প্রতি অভিযোগ তোলা শুরু করেন ইরানি ব্যবহারকারীরা।
তবে ওই অভিযোগের কোনো ‘ভিত্তি নেই’ বলে দাবি করেছে ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি মেটা এবং কনটেন্ট মডারেটরদের নিয়োগদাতা কোম্পানি।
ওই অভিযোগ ওঠার পরপরই পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেছেন দুই কনটেন্ট মডারেটর। এদের একজন ওই পেশা ছাড়লেও দ্বিতীয় জন এখনও ফারসি ভাষার কনটেন্ট যাচাইয়ের দায়িত্ব পালন করছেন।
সম্প্রতি খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে ভর্তুকি উঠিয়ে নিয়েছে ইরান সরকার, ফলে দাম বেড়েছে নিত্যপণ্যের। এর প্রতিবাদ হচ্ছে ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে।
বিবিসি লিখেছে, ইরানি নাগরিকদের মধ্যে অস্থিরতা খুব দ্রুত রাজনৈতিক প্রতিবাদে পরিণত হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা দেশের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এবং শীর্ষ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খোমেনির বিরুদ্ধেও স্লোগান দিচ্ছেন।
কিন্তু ইরানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিক্ষোভের খবর সেভাবে প্রকাশ না করায় ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যমে চোখ রাখছেন নাগরিকরা। এর মধ্যেই ব্যবহারকারীরা বুঝতে পারেন, ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা বিক্ষোভের ভিডিও মুছে দেওয়া হচ্ছে।
সাবেক কনটেন্টে মডারেটরদের একজন বিবিসিকে বলেছেন, তিনি ‘ব্যক্তিগতভাবে কিছু যাচাইকারীকে চেনেন, যারা ইরান সরকারের সমর্থক এবং সরাসরি ওই তরফ থেকেই নির্দেশনা পাচ্ছিলেন।
বিবিসি জানিয়েছে, ‘টেলুস ইন্টারন্যাশনাল’ নামের একটি কোম্পানিতে কাজ করতেন ওই মডারেটর। ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীদের কনটেন্ট নিয়ে নানা অভিযোগের তদন্ত ও নিষ্পত্তির কাজ করে কোম্পানিটি।
কোম্পানির ফারসি ভাষার কনটেন্ট মডারেটর এবং যাচাইকারীরা কাজ করেন জার্মানি থেকে। টেলুস ইন্টারন্যাশনাল এক বিৃবতিতে দাবি করেছে, ইরান সরকারের সঙ্গে তাদের কোনো ‘সম্পর্ক নেই এবং অতীতেও ছিল না’।
অন্যদিকে ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি মেটার এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, “আমরা এই অভিযোগগুলোর পক্ষে কোনো প্রমাণ দেখছি না। আমাদের যাচাইকারী দল কেবল নিয়ম ভেঙে পোস্ট করা কনটেন্টই মুছে দেয়।”