ভারতের সাবেক এই ব্যাটসম্যানের মতে, এবারের আইপিএলে দেখা মিলেছে ভিন্ন এক কোহলির, যার ভুলের সংখ্যা তার পুরো ক্যারিয়ারের চেয়ে বেশি।
রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে শুক্রবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হেরে চলতি আইপিএলের পথচলা শেষ হয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালোরের। ফাইনালে ওঠার এই লড়াইয়ে কোহলি ছিলেন পুরোপুরি নিষ্প্রভ। দলটির সাবেক অধিনায়ক করেন মাত্র ৭ রান।
কেবল এই ম্যাচেই নয়, এলিমিনেটরেও জ্বলে উঠতে পারেননি কোহলি। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টসের বিপক্ষে ২৫ রান করতে খেলেন ২৪ বল। ব্যর্থতার বৃত্তে তিনি বন্দি পুরো আসরজুড়েই।
প্রাথমিক পর্বে পান তিনটি গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ। আসরে তার ফিফটি কেবল দুটি। ১৬ ম্যাচে ২২.৭৩ গড় ও ১১৫.৯৮ স্ট্রাইক রেটে কোহলির রান ৩৪১।
আসরে তার সবচেয়ে ভালো পারফরম্যান্স বলা যায় গুজরাট টাইটান্সের বিপক্ষে প্রাথমিক পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে। বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে দলের জয়ে রেখেছিলেন সবচেয়ে বড় অবদান।
শেবাগের চোখে সবচেয়ে বাজে লেগেছে কোহলির আউট হওয়ার ধরনগুলো। তার মতে, যত রকমভাবে আউট হওয়া সম্ভব, এই মৌসুমে কোহলি মোটামুটি তার কোনোটিই বাদ রাখেননি। পুরো ক্যারিয়ারে যত ভুল করেছেন কোহলি, এই আইপিএলেই করেছেন তার চেয়ে বেশি।
ক্রিকবাজের সঙ্গে আলাপচারিতায় সাবেক এই বিধ্বংসী ব্যাটসম্যান তুলে ধরেন কোহলিকে নিয়ে তার ভাবনা।
“এই বিরাট কোহলি সে নয়, যাকে আমরা চিনি। এবারের মৌসুমে ভিন্ন এক বিরাট কোহলি খেলেছে। এই মৌসুমে সে যত ভুল করেছে, তার পুরো ক্যারিয়ারেও এত ভুল করেনি।”
“ব্যাটসম্যান যখন রানে থাকে না, এমনটা ঘটে। বাজে সময় থেকে বের হতে নানা পথ খোঁজে সে, আর এটাই তাকে বিভিন্নভাবে আউট হওয়ার দিকে ঠেলে দেয়। যতভাবে একজন ব্যাটসম্যানের আউট হওয়া সম্ভব, এবার সব রকম আউটই হয়েছে কোহলি।”
সবশেষ রাজস্থানের বিপক্ষে কোহলি আউট হন শরীর থেকে দূরের বল তাড়া করতে গিয়ে। প্রসিধ কৃষ্ণার অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে বলে খোঁচা দিয়ে ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে।
“যখন ফর্ম থাকে না, ব্যাটসম্যান চেষ্টা করে প্রতিটি বল মাঝ ব্যাটে খেলতে। সে ভাবে, আমি যদি মাঝ ব্যাটে বল লাগাতে পারি, তাহলে আমার আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে।”
“বিরাট প্রথম ওভারে (ট্রেন্ট বোল্টের) অনেকগুলো বল ছেড়েছে, যখন কেউ ফর্মে থাকে না তখন এরকম হয়। তখন প্রবণতা থাকে অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করার। ওইরকম বলেই মারার চেষ্টা থাকে। এমনকি খারাপ ফর্মে থাকার সময়ও ভাগ্য পাশে থাকলে বল ব্যাটের কানা নেয় না। কিন্তু এখানে (কোহলির ক্ষেত্রে) এটি ঘটেনি।”
আইপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি ও সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক কোহলি। সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন তিনি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তার ব্যাটে সেঞ্চুরি নেই দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে। কিন্তু এত এত অভিজ্ঞতার কোনো কিছুই এবার কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
“কোহলি নিশ্চিতভাবেই সবাইকে হতাশ করেছে। আমরা সবাই আশা করি, বড় ম্যাচে বড় খেলোয়াড় পারফর্ম করবে। কিন্তু সে শুধু নিজেকেই নয়, তার ও আরসিবি ভক্তদেরও হতাশ করেছে।”