ক্যাটাগরি

ওসি প্রদীপ ও স্ত্রীর দুর্নীতি মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ

এই মামলার
পরবর্তী শুনানি হবে ৬
জুন। যুক্তিতর্ক
শুনানি শেষে তারপরই রায়ের পর্যায়ে যাবে মামলাটি।

রোববার
চট্টগ্রামের
বিভাগীয় বিশেষ জজ মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে আসামিপক্ষ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা শেষ করে।

দুদকের
আইনজীবী মাহমুদুল হক মাহমুদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্তকারী কর্মকর্তাকে (আইও) জেরার মধ্যে দিয়ে মামলার সাক্ষ্য-জেরা শেষ হলো। এরপর ৩৪২ ধারায় আসামিদের পরীক্ষা করা (দোষি নাকি নির্দোষ জানতে চাওয়া), সাফাই সাক্ষী দিলে তা গ্রহণ করা এবং পরবর্তীতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনই শুধু বাকি রইল।”

২৩
মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিনের সাক্ষ্য
দিয়েছিলেন। তাকে নিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে
মোট ২৪ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।

মামলার
মোট ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে আর কোনো সাক্ষীকে তারা হাজির করবে না বলে জানান দুদকের আইনজীবী মাহমুদ।

আসামিপক্ষের
আইনজীবী রতন কুমার চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আইও’র সাক্ষ্য-জেরার অনুলিপি এখনো পাইনি। সেটি পাওয়ার পর আমরা সিদ্ধান্ত নেব
যে সাফাই সাক্ষী দেওয়া
হবে কিনা। এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।” 

রোববার
দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত আদালতে আইওকে জেরা করা হয়। শুনানির সময় প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

গত
১৫ ডিসেম্বর
অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে দুদকের করা এই মামলায় ওসি প্রদীপ
ও তার স্ত্রী চুমকির বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত।

ওসি
প্রদীপ তার আগেই কক্সবাজারের সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যামামলায় গ্রেপ্তার ছিলেন।
তখন পলাতক চুমকি গত ২৩
মে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

২০২০
সালের ৩১ জুলাই সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানকে কক্সবাজারে এপিবিএন চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় টেকনাফের ওসি প্রদীপকে কারাগারে যাওয়ার পর তার অবৈধ সম্পদের খোঁজে তদন্তে নামে দুদক।

ওই
বছর ২৩ অগাস্ট দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে মামলা করেন।


কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন এবং মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনা হয় তাদের বিরুদ্ধে। 

‘ঘুষ-দুর্নীতির’ অর্থে কীভাবে প্রদীপ তার স্ত্রীর নামে বিভিন্ন সম্পদ গড়েছেন, তার বিবরণ দেওয়া হয় মামলার এজাহারে। বলা হয়, প্রদীপ তার স্ত্রীকে কমিশন ব্যবসায়ী ও মৎস্য ব্যবসায়ী সাজিয়ে ‘অবৈধ সম্পদ বৈধ’ করার চেষ্টা করেছেন।

দুদকের
অভিযোগ, প্রদীপ ‘ঘুষ ও দুর্নীতির’ মাধ্যমে অর্জিত অর্থ গোপন করার জন্য চট্টগ্রামের পাথরঘাটা এলাকায় ছয়তলা বাড়ি করেন তার শ্বশুরের নামে। পরে তার শ্বশুর ওই বাড়ি তার মেয়ে চুমকিকে দান করেছেন বলে দেখানো হয়।

আয়কর
রির্টানে চুমকি কারণের কমিশন ব্যবসা এবং বোয়ালখালী উপজেলায় ১০ বছরের জন্য লিজ নেওয়া পাঁচটি পুকুরে মাছের ব্যবসার যে আয় দেখানো হয়েছে, তাও স্বামী প্রদীপ দাশের ‘জ্ঞাত আয়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জনের পর স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের উদ্দেশ্যে দেখানো ভুয়া ব্যবসা’ বলে অভিযোগ করা হয়েছে মামলায়।

মাছ
চাষের ব্যবসার যে হিসাব
দেখানো হয়েছে, বাস্তবে তার অস্তিত্ব মেলেনি দুদকের তদন্তে।

মামলা
দায়েরের পর, ২০২১ সালের ২৮ জুলাই দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন অভিযোগপত্র জমা দেন। সম্পদ বিবরণীতে ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকা সম্পদের তথ্য গোপন করে মিথ্যা তথ্য দেওয়া এবং ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয় বর্হিভূত অর্জন এবং হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয় সেখানে।

অভিযোগপত্রে
প্রদীপের যেসব সম্পদের উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হল- চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় একটি ছয়তলা বাড়ি, ষোলশহরে সেমিপাকা ঘর, ৪৫ ভরি সোনার গয়না, একটি করে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস এবং কক্সবাজারে ফ্ল্যাট।