ক্যাটাগরি

সার্ভার থেকে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের ‘তথ্য গায়েব’ নিয়ে তদন্তের নির্দেশ

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানির পর
রোববার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ
এ আদেশ দেয়।

বিষয়টি তদন্ত করে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন
আদালতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

এই আদেশের পাশাপাশি একটি রুলও দিয়েছে আদালত।

জন্ম-মৃত্যু সনদ পাওয়ার ক্ষেত্রে জনসাধারণের
ভোগান্তি রোধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও খামখেয়ালিপনা এবং সার্ভার থেকে বিপুল
সংখ্যক তথ্য গায়েব হয়ে যাওয়ার পরও তদন্তের উদ্যোগ না নেওয়া কেন অবৈধ ঘোষণা করা
হবে না, তা জানতে বলা হয়েছে।

সেই সঙ্গে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন আইন-২০১৮ এর বিধি-১৯ অনুযায়ী
কেন্দ্রীয় ডাটাবেইজ তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে
রুলে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্থানীয় সরকার
বিভাগের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল,
পরিকল্পনা-পরিবীক্ষণ, মূল্যায়ন ও পরিদর্শন কার্যালয়ের মহাপরিচালক এবং আইন বিভাগের
যুগ্ম সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো.
তানভীর আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

তানভীর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জন্ম
ও মৃত্যু নিবন্ধনের তথ্য গায়েব বিষয়ে তদন্ত করে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন
দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।”

জন্ম নিবন্ধনে কেন এত ভোগান্তি?
 

জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে ভোগান্তি বা হয়রানি বন্ধে অবিলম্বে
পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে বিবাদীদের দপ্তরে গত ৪ এপ্রিল আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন এই
আইনজীবী। তাদের কাছ থেকে কোনো জবাব না আসায় পরে হাই কোর্টে এই রিট আবেদন করেন
তিনি।

জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে নাগরিকদের ভোগান্তি ও
সার্ভারে জন্মনিবন্ধনের তথ্য না থাকা নিয়ে সম্প্রতি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে
প্রকাশিত দুটি প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদনটি করা হয়।

জন্মনিবন্ধন সনদ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা
হয়েছে, ২০০৪ সালে জন্মনিবন্ধন আইন করা হয়, কার্যকর হয় ২০০৬ সালে। পাসপোর্ট ইস্যু,
বিবাহ নিবন্ধন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়া, জমি
রেজিস্ট্রেশনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে জন্মনিবন্ধন সনদ বাধ্যতামূলক। শুরুতে
হাতে লেখা সনদ দেওয়া হত।

এরপর ২০১০ সালের শেষ দিকে এসে তা ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত নিবন্ধকদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণের জন্য সরকার আলাদা বরাদ্দও
দেয়। কিন্তু সে সময় সব তথ্য ডিজিটাল করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, জনবসতি
বেশি এমন এলাকাগুলো, বিশেষ করে সিটি করপোরেশনে তথ্য হালানাগাদ পুরোপুরি হয়নি বলে
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “২০১০ সালের
পর যে সার্ভারে কাজ করা হত, তা বছরখানেক আগে পাল্টানো হয়। নতুন এই সার্ভারেও আগের
সার্ভারের সব তথ্য স্থানান্তর হয়নি। এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন অনেকে। আগে জন্ম নিবন্ধন
করে সনদ নিয়েছেন এমন কয়েক কোটি মানুষকে এখন সম্পূর্ণ নতুন করে অনলাইনে
জন্মনিবন্ধন করাতে হবে, কারণ তাদের আগের নিবন্ধন গায়েব হয়ে গেছে।”