এ কে আব্দুল মোমেন। ফাইল ছবি
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ
পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায় জেরবার রাশিয়া।
সেই রাশিয়া সম্প্রতি বাংলাদেশকে প্রস্তাব দিয়েছে, ঢাকা চাইলে তারা
গম ও জ্বালানি তেল রপ্তানি করতে পারে; এ দুটো প্রয়োজন হলেও বাংলাদেশ এখনও সিদ্ধান্ত
নিতে পারেনি।
এরমধ্যেই আসামের রাজধানী গুয়াহাটিতে নদী বিষয়ক সম্মেলন যোগ দিয়ে
গিয়ে মোমেন ভারতের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এনিয়ে আলোচনা করেন।
সোমবার দেশে ফিরে মোমেন সাংবাদিকদের বলেন,“আমরা ভারতের সাথে কিছু
আলাপ করেছি। যেমন এনার্জি প্রবলেম তারা কিছুটা রিসলভ করার চেষ্টা করতেছে। আমরা বলেছি,
আমরাও তো এনার্জি ডিপেন্ডেন্ট … এনার্জি তো বাস্তব সমস্যা হয়ে উঠেছে।
“রাশিয়া আমাদের অফার করেছে যে, এনার্জি তারা আমাদের দিতে চায়, গম
দিতে চায়। কিন্তু আমরা তো স্যাংশনের ভয়ে … তোমরা কেমনে করলা? তোমরা তো নিচ্ছো। সেটা
তারা বলেছে, তারা ফন্দিফিকির বের করেছে।”
বাংলাদেশে জ্বালানি তেল বেচতে চায় রাশিয়া
রাশিয়ার তেল কিনেও ভারত কেন যুক্তরাষ্ট্রের ‘বন্ধু’
সেই কৌশল জানতে চেয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, “এটার ফলে আমরা তোমাদের
বুদ্ধি চাই, তোমরা কীভাবে করতেছো। ইটস মোর অব এ ফ্রেন্ডলি ডিসকাশন। কেমন করে এটা ম্যানেজ
করলা।”
পশ্চিমাদের রোষে পড়ার ঝুঁকি নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়া বাণিজ্যের
পথ খোলা যে কঠিন, তাও স্বীকার করে নিলেন কূটনীতিকের দায়িত্ব নিয়ে দীর্ঘ দিন যুক্তরাষ্ট্রে
কাটিয়ে আসা মোমেন।
তিনি বলেন, “তারা (ভারত) বড় দেশ, ম্যানেজ করতে পারে। তারা করলে তাদের
উপর কেউ স্যাংশন দেয় না। আমরা গরিব দেশ, ছোটোখাটো দেশ, আমাদের উপর মাতব্বরি একটু বেশি।”
নদী সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে
আলোচনা হয় মোমেনের।
সেই আলোচনার বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “আমরা রিজিওনালি স্টাবিলিটি ও
সিকিউরিটিটা রাখতে পারি, সে বিষয়ে আলাপ করেছি। এটা তো সত্য আমরা বহুপাক্ষিকতার বড় প্রবক্তা।”
কিছু আবশ্যকীয় বৈঠক শেষ না হওয়ার কারণে দুদেশের যৌথ পরামর্শ কমিশনের
সভা পেছানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
“আমাদের বাকি যে কয়েকটি ইস্যু, যেমন পাওয়ার শেয়ারিং, এটা এখনও আমাদের
সেক্রেটারি লেভেলে পূর্ণাঙ্গা আলোচনা শেষ হয়নি। আর দ্বিতীয়ত, এনার্জি আর রেলওয়েটাও
শেষ হয়নি। সে কারণে আমরা আলোচনা করে ঠিক করলাম (পেছানোর)।”
তিনি বলেন, “ইন্ডিয়া আমাদের ডেট দিয়েছিল। এগুলো না হলে আমরা গিয়ে
কী করব? এই মিটিংটা হল ওগুলোর উপরই আলোচনা। আমরা দেখতে চাই, এই কাজগুলো শেষ হোক।”
প্রথমে দুই সপ্তাহ পরে সভাটি করার আলোচনা হলেও পরে তা আরও কয়েকদিন
পেছানো হয়েছে জানিয়ে মোমেন বলেন, “তারপরে দেখলাম ২ সপ্তাহ পরে হয় না, ওদের অন্য মিটিং
আছে। তারপর উনারা বললেন ১৮-১৯ তারিখে আসেন। সে সাথে আমরা আলোচনার প্রেক্ষিতে মতৈক্যে
পৌঁছেছি। ১৯ তারিখে জেসিসি হবে। ১৮ তারিখে কিছু দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।”