ক্যাটাগরি

চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি সই

মঙ্গলবার ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে এ বিষয়ে চুক্তিপত্রে সই করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান এবং যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কন্সাল্টিং কোম্পনি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট হোয়াং চিউ ইয়াং।

এই চুক্তির অধীনে প্রকল্পের বিস্তারিত প্রকৌশল নকশা, ড্রয়িং ও প্রাক্কলনে পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি বে-টার্মিনাল নির্মাণ কাজের তদারকিও করবে দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ প্রতিষ্ঠান-কুনহোয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্সাল্টিং কোম্পানি লিমিটেড ও ডি ওয়াই ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বে-টার্মিনাল স্বপ্ন নয়, এটি এখন বাস্তবতা। ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক বড় ক্যানভাস তৈরি হয়েছে।”

বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে রেললাইন যুক্ত করার পরিকল্পনা ধরে এগোচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের কন্টেইনার হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নতুন টার্মিনাল হিসাবে ‘বে-টার্মিনাল’ নির্মাণ করা হচ্ছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ১২৬ কোটি ৪৯ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। সম্পূর্ণ বে-টার্মিনাল প্রকল্পের ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে ২১০ কোটি ডলার।

চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে উত্তর হালিশহরে বে-টার্মিনালের অবস্থান। বে-টার্মিনাল থেকে বহির্নোঙরের দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার এবং চ্যানেলের প্রশস্থতা ৮০০ থেকে ১ হাজার ২০০ মিটার।

বে-টার্মিনালকে বৈরী আবহাওয়া এবং সাগরের বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ করা হবে, যা ওই এলাকায় অবস্থিত ডুবোচরের ওপর নির্মিত হবে।

বে-টার্মিনাল হলে ২৪ ঘণ্টাই সেখানে জাহাজ ভিড়তে পারবে। বে-টার্মিনাল চ্যানেলে কোন বাঁক নেই এবং যথোপযুক্ত নাব্যতা থাকায় সেখানে ১০ থেকে ১২ মিটার গভীরতার সর্বোচ্চ ৬ হাজার ‘টিইইউজ’ বহনকারী জাহাজ বন্দরে ভেড়ানো সম্ভব হবে।

বে-টার্মিনালে প্রাথমিকভাবে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। যেখানে একটি ১ হাজার ২২৫ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার টার্মিনাল (কন্টেইনার টার্মিনাল-১), একটি ৮৩০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার টার্মিনাল (কন্টেইনার টার্মিনাল-২) এবং একটি ১ হাজার ৫০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। তিনটি টার্মিনালের মোট দৈর্ঘ্য হবে ৩ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার।

মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ টার্মিনালে জেটি থাকবে ছয়টি। বে-টার্মিনালে মোট ১৩টি জেটি থাকবে। বে-টার্মিনালে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি সুবিধা থাকবে। প্রকল্পের পূর্ব দিকে থাকছে পোর্ট অ্যাকসেস রোড ও রেললাইন।

বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর জোয়ারের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় দিনে দুবার জাহাজ যাতায়াত করতে পারে। বন্দরের জেটিতে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৫ মিটার গভীরতার এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ ভিড়তে পারে।

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা আজ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই বিষ্ময়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেন- তা করেন। শিগগিরই ব্যবসা-বাণিজ্যের সুফল পাব।”

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল।

আরও পড়ুন

বন্দরের বে টার্মিনালের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু
 

বে টার্মিনাল নিয়ে সিদ্ধান্ত যে কোনো সময়: প্রতিমন্ত্রী

বন্দরের বে টার্মিনালের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু
 

চট্টগ্রামে বে-টার্মিনাল নির্মাণে ‘ছাড়পত্রের’ বাধা কাটল
 

বন্দরের বে টার্মিনাল নির্মাণ শুরু হবে আগামী বছর

চট্টগ্রাম বন্দরের ‘বে টার্মিনাল’ চালু ২০২৪ সালেই: প্রতিমন্ত্রী

বে টার্মিনালের নকশা করতে কোরিয়ার দুই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি ৩১ মে