বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে মঙ্গলবার একান্ত আলোচনা
শেষে সাংবাদিকদের মুমিনুল জানান, বোর্ড প্রধানকে তিনি তার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন।
মূলত নিজের খেলায় মনোযোগ দিতে তার এই ভাবনা।
“ওরকম কিছু না, আমি শুধু বলেছি যে অধিনায়ক হিসেবে দলে অবদান
রাখতে পারছি না। আমার কাছে মনে হয় এই মুহুর্তে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। আমিতো বলে
আসছি, এখন উনারা কি সিদ্ধান্ত নেয় উনাদের ব্যাপার।”
“আপাতত আমি চাচ্ছি ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে, আমার জন্য ভালো।
সামনে বোর্ড মিটিং আছে, ওখানে উনারা সিদ্ধান্ত নিবেন।”
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে বাজেভাবে হারের পর মুমিনুলের
সঙ্গে এক দফায় কথা বলেন নাজমুল হাসান। বোর্ড সভাপতি তখন বলেছিলেন, খুব লম্বা হয়নি আলোচনা।
দুই-একদিনের ভেতর আবার বসবেন তিনি টেস্ট অধিনায়কের সঙ্গে।
এরপর ভারতীয় বোর্ডের আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে রোববারের আইপিএল
ফাইনাল দেখতে ভারতে যান বিসিবি সভাপতি। সেখান থেকে দেশে ফিরে আবার মুমিনুলের সঙ্গে
কথা বললেন তিনি।
মুমিনুল নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিলেও বোর্ড থেকে
এখনও কিছু জানানো হয়নি। পরবর্তী বোর্ড সভায় নতুন টেস্ট অধিনায়কের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া
হতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার বসবে বোর্ডের সভা। তার উত্তরসূরি কে হতে পারে, এ বিষয়ে কোনো পরামর্শ দেননি বলে জানালেন মুমিনুল।
“এটা উনারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। ওইরকমভাবে আমি সাজেশন করিনি।
বোর্ডই সিদ্ধান্ত নিবে কাকে দিবে, না দিবে। উনারা চিন্তাভাবনা করবেন কাকে দেওয়া হবে।
২ তারিখ যে বোর্ড সভা আছে, ওখানে হয়তো সিদ্ধান্ত নেবেন এ ব্যাপারে। আমি আমার কথা যা
বলার ছিল, সেটা বলে আসছি।”
এখন পর্যন্ত মুমিনুলের নেতৃত্বে ১৭ টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ।
তিনটি জয় ও দুটি ড্রয়ের সঙ্গে ১২ ম্যাচে হেরেছে তারা।
গত জানুয়ারিতে মুমিনুলের নেতৃত্বে নিউ জিল্যান্ডে ঐতিহাসিক
টেস্ট জয়ের দেখা পেলেও পরের পাঁচ টেস্টের চারটিতেই বাজেভাবে হেরেছে বাংলাদেশ। এই সময়ে
সবশেষ সাত ইনিংসে অধিনায়কের রান টেলিফোন ডিজিটের মতো, ০, ৯, ২, ৫, ৬, ২, ০। সবশেষ ১৫
ইনিংসে তার ফিফটি মোটে ১টি, দু অঙ্ক ছুঁতে পারেননি ১২টিতে।
সব মিলিয়ে মুমিনুলকে নিয়ে নানা প্রশ্ন কেবল উচ্চকিতই হচ্ছে
দেশের ক্রিকেটে। একাদশে যার জায়গা প্রশ্নবিদ্ধ, দলের নেতৃত্বের ভারই তার কাঁধে।
গত কয়েক দিনে মুমিনুলকে নিয়ে বিসিবির ভাবনা ও মনোভাবও প্রকাশ্য
হতে শুরু করেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ শেষে তার ফর্ম নিয়ে দুর্ভাবনার কথা জানান
বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ। এরপর জালাল ইউনুস বলেন, ব্যাট
হাতে দলে অবদান রাখতে না পারায় হয়তো হীনম্মন্যতায় ভুগছেন মুমিনুল।
মুমিনুলের কথায়ও ফুটে উঠল তা। বললেন, নিজের বাজে সময়ে দল
খারাপ করলে নেতৃত্ব দেওয়ার চেয়ে কঠিন কিছু আর নেই।
“দেখেন যখন আপনি ভালো খেলবেন দল খারাপ করলেও মোটিভেট করতে
পারবেন। এখন আমিও ভালো খেলতে পারছি না, দলও ভালো করছে না। এই সময়ে অধিনায়কত্ব করা খুবই
কঠিন।”
“আমার জায়গায় অন্য যেকোনো বড় অধিনায়কই হোক, সে যদি দলের
জন্য অবদান রাখতে না পারে তাহলে তার ওপরে চাপ আসবেই। এটা স্বাভাবিক ব্যাপার।”
মুমিনুলকে অধিনায়ক করে এরই মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দল
ঘোষণা করেছে বিসিবি। তিনি নেতৃত্বে থাকতে না চাইলে নতুন কাউকে শিগগিরই খুঁজতে হবে বোর্ডকে।
তবে মুমিনুল নিজেই পরে বলেন, আপাতত তাকেই দায়িত্বে থাকতে বলা হয়েছে।
“পাপন ভাই (নাজমুল হাসান) শুনেছেন। উনি থাকতে বলেছেন, কিন্তু
আমি আসলে জিনিসটা চাচ্ছি না। আমি ব্যক্তিগতভাবে আসলেই চাচ্ছি না। কেন চাচ্ছি না সেটা
আগেই বললাম।