ক্যাটাগরি

দুপুর গড়ানোর পর চবিতে অবরোধ প্রত্যাহার

বুধবার
ভোররাত থেকে দুপুর পর্যন্ত এ অবরোধ অব্যাহত ছিল। এই সময়ে ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা
হয়নি।

ছাত্রলীগের
ভিএক্স গ্রুপের নেতা প্রদীপ চক্রাবর্তী দুর্জয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,
“আমাদের উপর হামলার মূল
হোতা মো. হানিফকে পুলিশ গ্রেপ্তার করায় আমরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছি।”

স্থানীয়দের
সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবরোধ ডেকেছিল।

গত
এক বছরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কমপক্ষে সাতবার সংঘর্ষ ও মারামারিতে জড়িয়েছে
স্থানীয়রা।

বুধবার
দুই ছাত্রলীগের নেতা স্থানীয়দের মারধরের শিকার হওয়ায় তার প্রতিক্রিয়ায়
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক অবরোধ করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়
ছাত্রলীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান বিপুল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, “স্থানীয়
সবার সাথে যে ছাত্রলীগের কর্মীদের ঝামেলা হয়, বিষয়টি এমন না। শুধু শহীদ আব্দুর রব
সড়কের পাশে অবস্থিত রেল ক্রসিং এলাকার পাশের মানুষের সাথে ঝামেলাগুলো সৃষ্টি হয়।

“কারণ
এখানে কিছু লোক অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জিম্মি করে অবৈধ
উদ্দেশ্য হাসিল করতেই তারা ঝামেলাগুলো তৈরি করে।”

নাম
প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পদধারী এক নেতা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর
ডটকমকে বলেন, এলাকাবাসীর সঙ্গে সংঘর্ষের মূল কারণ স্বার্থ ও অর্থ।

“সামনে
বিশ্ববিদ্যালয়ে বড় নিয়োগ আছে। এসব নিয়োগে স্থানীয়রা প্রভাব বিস্তার করতে কিছু
নেতা-কর্মীদের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিচ্ছে। তারা তুচ্ছ বিষয় নিয়ে
শিক্ষার্থীদে সাথে মারামারিতে লিপ্ত হয়। যাতে করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
স্থানীয়দের সাথে একটা নেগিসিয়েশন করে।”

তবে
স্থানীয়দের দাবি, শিক্ষার্থীরা অল্পতেই এলাকাবাসীর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। তাদের
মারধর করে। এলাকাবাসীও ঝামেলাগুলোকে বড় করে দেখে। এর পেছনে রাজনৈতিক কারণ থাকতে
পারে।

হাটহাজারীর
উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল হামিদ বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ছোট ছোট ঘটনা আগেও ঘটত। তবে এত বড় আকার কখনও ধারণ করেনি।

“এখন
ঝামেলাগুলো অল্পতেই বড় হয়ে যায়। এর পিছনের কারণগুলো খুঁজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।”
নাম না
প্রকাশের শর্তে ফতেপুর ইউনিয়নের এক জনপ্রতিনিধি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,
“শিক্ষার্থীদের সাথে এলাকাবাসীর
ঝামেলাগুলো আগে সহজেই সমাধান করা যেত। এখন রাজনৈতিক কারণে তা সম্ভব হয় না। যারা
আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি করতেন তারাই এখন হাটহাজারীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে
আছেন। তারা বিষয়গুলোর সমাধান না করে বড় করে। এখানে তাদের রাজনৈতিক সুবিধা থাকতে
পারে।”

বুধবার
রাতে ছাত্রলীগ নেতা প্রদীপ চক্রাবর্তী দুর্জয় ও মোহাম্মদ রাশেদ উপর হামলা করে
দুর্বৃত্তরা।

আহত
ছাত্রলীগ নেতা প্রদীপ চক্রবর্তী দু্র্জয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যারা হামলা করেছে তাদের
সাথে আমার ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ছিল না। পূর্বে ছাত্রলীগ কর্মী সাদেক হোসন টিপু
হানিফের ছোট ভাই রেজা মারধর করে। এবিষয়ে টিপু একটি মামলা করছে। মামলা উঠিয়ে নেওয়ার
জন্য আমাদের হানিফ চাপ দিয়েছেন। 

“তাছাড়া
হানিফ গং ক্যাম্পাসে নানান অবৈধ কর্মের সাথে জড়িত। হয়ত যা নিয়ে শিক্ষার্থীরা
বিভিন্ন সময়ে স্ট্যাটাস দিয়েছে। ভবিষ্যতে তারা যেন নির্বিঘ্নে অবৈধ কর্মকাণ্ড
চালিয়ে যেতে পারে সে জন্য ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চাপে রাখতেও কাজটি
করতে পারে।”

ফতেপুর
ইউপি চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গতকাল যা ঘটেছে সেটি
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তদন্ত করছে। প্রকৃত কারণ তাদের অনুসন্ধানে বের হয়ে আসবে।”

বার
বার কেন একই ঘটনা ঘটছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের ঘটনাগুলোর বিষয়ে তদন্ত চলছে।
ছেলেরা কৃষকদের ফল নষ্ট করে, তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। যার কারণে এসব
ঘটে। 

বিশ্ববিদ্যালয়
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কিছু লোক আমাদের
ভাই-বোনদের উপর অহেতুক হামলা চালায়।

“বিশ্ববিদ্যালয়
প্রশাসন যদি এ বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা পালন না করে, তাহলে আমরা বরাবরের মত
শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে তাদের পাশে থাকব।”