কয়েকদিন ধরে নগরীটির আশপাশে তীব্র লড়াইয়ের পর বুধবার রাশিয়ার সেনারা শহরের রাস্তাগুলো ধরে কেন্দ্রস্থলের দিকে এগোতে শুরু করে।
ইউক্রেইন জানিয়েছে, নগরীটির প্রায় ৭০ শতাংশ রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে।
ইউক্রেইনের সামরিক মুখপাত্র অলেকজান্দার মোতুজেনিক এক ব্রিফিংয়ে বলেন, “শত্রুরা সেভেরোদোনেৎস্কর কেন্দ্রস্থলে প্রবেশ করে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছে।”
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যদি রাশিয়া এই নগরীটি এবং সিভারিস্কি দোনেছ নদীর পশ্চিম পাড়ে এর ছোট যমজ শহর লিসিচানস্কের দখল নিতে পারে তবে পুরো লুহানস্ক তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে। দনবাস অঞ্চলের যে দুটি প্রদেশকে মস্কো ইউক্রেইনের রুশপন্থি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বলে দাবি করে আসছে লুহানস্ক তার একটি।
লুহানস্কের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রধান লক্ষ্যগুলোর একটি পূর্ণ হবে এবং তাতে যুদ্ধক্ষেত্রের গতিপথ পাল্টানোর বিষয়টি আরও জোরদার হবে। ইউক্রেইনের রাজধানী কিইভ ও দেশটির উত্তরাঞ্চল থেকে পিঁছু হটার পর রুশ বাহিনীর জন্য এটি বড় একটি সাফল্য হবে।
ছবি: রয়টার্স
লুহানস্ক অঞ্চলের গভর্নর সের্হি হাইদাই জানিয়েছেন, চাপের মুখে ইউক্রেইনীয় সেনারা সেভেরোদোনেৎস্ক ছেড়ে পিঁছু হটে লিসিচানস্কে এসে অবস্থান নিতে পারে। শহরটির অবস্থান পাহাড়ের ওপর হওয়ায় এখান থেকে রুশ বাহিনীকে প্রতিরোধ করা অপেক্ষাকৃত সহজ হবে বলে মনে করছেন তিনি।
কিন্তু রুশ বাহিনী যখন সেভেরোদোনেৎস্কের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে তখন লিসিচানস্কের ওপর কামান ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করে হামলা চালানো শুরু করবে বলে আশঙ্কা তার।
ইউক্রেইনকে নিরস্ত্র ও ‘নাৎসিমুক্ত’ করতে দেশটিতে তারা বিশেষ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে বলে দাবি মস্কোর। তবে মস্কোর এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে ইউক্রেইন। এটি প্রতিবেশী দেশটিতে আগ্রাসন চালানোর জন্য ক্রেমলিনের বানানো অভিযোগ বলে পাল্টা দাবি করেছে কিইভ ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা।
ইউক্রেইনে সামরিক অভিযান শুরু করার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়ার অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো।
ইউক্রেইনের যুদ্ধে এ পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং লাখ লাখ লোক দেশটি ছেড়ে প্রতিবেশী দেশগুলোতে পালিয়ে গেছে।
রাশিয়ার আক্রমণে ক্রমেই বিপর্যয়ের শিকার হতে থাকা ইউক্রেইনের মনোবল চাঙ্গা করতে যুক্তরাষ্ট্র কিইভকে নতুন করে ৭০ কোটি ডলারের অস্ত্র সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যে আঘাত হানতে সক্ষম অত্যাধুনিক রকেট সিস্টেমও রয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া বলেছে, এই সহায়তা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইচ্ছাকৃতভাবে ‘আগুনে ঘি ঢালছে’।
আরও পড়ুন:
ইউক্রেইনকে অস্ত্র সহায়তা দিয়ে ‘আগুনে ঘি ঢালছে’ যুক্তরাষ্ট্র: রাশিয়া
ইউক্রেইনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র