পদ্মা নদীর উপর দেশের দীর্ঘতম এই সেতু আগামী ২৫ জুন উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। সেদিন সকালে সেতু উদ্বোধনের পরপরই মাওয়ার ওপারে কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেবেন তিনি।
সেই প্রস্তুতি দেখতে বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ৯টার দিকে কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটে পৌঁছান আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
এ দলে ছিলেন চিফ হুইপ মাদারীপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য নূর-ই-আলম চৌধুরী, পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল, আফজাল হোসেন, এসএম কামাল হোসেন, ইকবাল হোসেন অপু।
জেলা পরিষদের প্রশাসক মুনির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন এবং পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোস্তফা রাসেলও উপস্থিত ছিলেন তাদের সঙ্গে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নূর-ই-আলম চৌধুরী বলেন, “পদ্মা সেতু চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক মুক্তি ঘটবে। এর ফলে মোংলা নৌ বন্দর, পায়রা নৌ বন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরে অর্থনৈতিক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হবে। পদ্মা সেতুর যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে রেললাইনও যুক্ত হওয়ায় কি ধরনের অর্থনৈতিক তৎপরতা বাড়বে, তা চিন্তাই করা যায় না। পদ্মা সেতু আমাদের স্বপ্নের সেতু, এর জনসভাও ঐতিহাসিক হবে।”
বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী পদক্ষেপের কারণে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন হয়েছে। পদ্মার পাড়ে আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লাখো মানুষের অংশগ্রহণে জনসভা এক বিশাল জনসমুদ্রে পরিণত হবে। উৎসবের এই সভায় জাতির উদ্দেশ্যে, বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশ্যে উন্নয়ন অগ্রগতির মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন।”
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “এই ঐতিহাসিক জনসভায় ১০ লক্ষাধিক মানুষ স্বতস্ফূর্তভাবে অংশ নেবে। জনসভার পর ফানুস ওড়ানো থেকে শুরু করে জমকালো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।”
পদ্মা নদীর বুকে নিজস্ব অর্থায়নে ৩০ হাজার কোটি টাকায় ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সেতুর কাজ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে উদ্বোধন করেছিলেন শেখ হাসিনা।
এরপর ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে বসে প্রথম স্প্যান। মাঝে ২২টি খুঁটির নিচে নরম মাটি পাওয়া গেলে নকশা সংশোধনের প্রয়োজন হয়। তাতে বাড়তি সময় লেগে যায় প্রায় এক বছর।
করোনাভাইরাস মহামারী আর বন্যার মধ্যেও কাজের গতি কমে যায়। সব বাধা পেরিয়ে অক্টোবরে বসানো হয় ৩২তম স্প্যান। এরপর বাকি স্প্যানগুলো বসানো হয়ে যায় অল্প সময়ের মধ্যেই। ঠিক পাঁচ বছরের মাথায় পূর্ণ আকৃতি পায় স্বপ্নের সেতু, যুক্ত হয় পদ্মার দুই পাড়।