প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল
বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী কোভিড-১৯ এর টিকা পাওয়ার অগ্রগতির তথ্য তুলে ধরেন।
পরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে
সাংবাদিকদের বলেন, “স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি আশা করছেন, জানুয়ারির শেষ বা
ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে (প্রথম দফার তিন কোটি) ভ্যাকসিন পেয়ে যাব। এজন্য গ্রাসরুট লেভেল
পর্যন্ত সবাইকে ট্রেনিং দেওয়া শুরু হয়েছে।
“ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য যেসব জিনিস ব্যবহার করা হবে, সেগুলো কীভাবে
ডিসপোজাল করা হবে সেই ট্রেনিং দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করে টিকা দেওয়া
যায় কি না, এ নিয়েও তারা আলোচনা করছেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেশে সম্প্রসারিত টিকা দান কর্মসূচির
(ইপিআই) যে ব্যাপক কার্যক্রম আছে, সেটিকে করোনাভাইরাসের টিকা দিতে ব্যবহার করার কথা
ভাবা হচ্ছে।
“তারা হাসপাতালগুলোকে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন, প্রাইভেট সেক্টরকেও
ব্যবহার করতে চাচ্ছেন। উনি (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) বললেন, আরও ছয় কোটি ভ্যাকসিন কোভ্যাক্সের
মাধ্যমে মে-জুন মাসের মধ্যে আসবে।
“আর প্রথম দফায় (ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের
ভ্যাকসিন) আসছে তিন কোটি ডোজ। দ্বিতীয় দফায় আরও তিন কোটি মানুষের জন্য অক্সফোর্ডের
টিকা আসবে। দুই দফার টিকা মিলিয়ে মোট সাড়ে চার কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া যাবে।”
একজন ব্যক্তিকে করোনাভাইরাসের দুটি করে ডোজ নিতে হবে। সেই হিসেবে
দুই দফায় পাওয়া নয় কোটি ডোজ টিকা সাড়ে চার কোটি মানুষকে দেওয়া যাবে; যা দেশের মোট জনসংখ্যার
২০ শতাংশ।
ধনী দেশগুলো যেখানে তাদের সব নাগরিককে সম্ভব দ্রুততম সময়ে টিকা
দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে, সেখানে গরিব দেশগুলোর জন্য টিকা পাওয়া হয়ে উঠেছে একটি বড়
চ্যালেঞ্জ।
গরিব দেশগুলোও যাতে টিকা পায়, সেই লক্ষ্যেই গত এপ্রিলে কোভিড-১৯
ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাকসেস ফ্যাসিলিটি বা কোভ্যাক্স নামের একটি প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলেছে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস বা
গ্যাভি এবং কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনস বা সিইপিআই।
এই জোট আসছে নতুন বছরে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের ৯২টি দেশে ১৩০ কোটি ডোজ
টিকা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। তার অংশ হিসেবে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের
জন্য টিকা সরবরাহ করবে তারা।
বাংলাদেশ সরকার ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের
তিন কোটি ডোজ সংগ্রহের জন্য ইতোমধ্যে চুক্তি করেছে।
ভ্যাকসিন কেনার জন্য ১৬ নভেম্বর অর্থ বিভাগ স্বাস্থ্যসেবা বিভাগকে
৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকাও বরাদ্দ দিয়েছে।
আরও পড়ুন:
কোভিড-১৯: তিন কোটি ডোজ টিকা বিনামূল্যে দেবে সরকার
টিকা: গ্যাভি দেবে ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ, ফেব্রুয়ারিতে পাওয়ার আশা
২০০ কোটি ডোজ টিকার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কোভ্যাক্স
করোনাভাইরাস: ভারত থেকে ৩ কোটি ডোজ টিকা আনতে চুক্তি
করোনাভাইরাস: টিকা আনতে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বেক্সিমকোর চুক্তি
টিকার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি ডলার চাইলেন অর্থমন্ত্রী