বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ উচ্চ পর্যায়ের অর্থনৈতিক
পরামর্শ সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়।
পরে যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, অবকাঠামো খাতে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক ডেভেলপমেন্ট ফিন্যান্স করপোরেশন
(ডিএফসি) থেকে উন্নয়ন অর্থায়ন পাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
এ
বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান তুলে ধরে বিবৃতিতে বলা হয়, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অনুরোধ বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে। পাশাপাশি আইএলও
রোড-ম্যাপ বাস্তবায়নের উপর গুরুত্ব দিয়েছে।”
বাংলাদেশে বড় পরিসরের বিনিয়োগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকারমূলক
বাণিজ্য সুবিধা (জিএসপি) পাওয়ার ক্ষেত্রে শ্রম-মান নিশ্চিতের কথা বারবার বলে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।
সম্প্রতি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, শ্রমিকদের
অধিকার নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন উদ্বেগের কারণে ২০১৩ সাল থেকে জিএসপি সুবিধা ও
ডিএফসির অর্থায়ন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ।
শ্রমিক অধিকার নিয়ে দু’পক্ষের চলমান আলোচনার মধ্যে অর্থনৈতিক পরামর্শ সভায়ও বড় অংশজুড়ে ছিল সেই প্রসঙ্গ।
পরামর্শ সভায় একটি সেশনে শ্রম খাতে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ
ও অগ্রগতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বাংলাদেশে আইএলও কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পোতিয়াইনেন।
যৌথ
বিবৃতিতে বলা হয়, তৈরি পোশাক খাতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সংস্কার, ট্রেড ইউনিয়নের নিবন্ধন
সহজীকরণ, উন্মুক্ত ট্রেড ইউনিয়ন ডেটাবেজ তৈরি, অভিযোগ পেতে হেল্পলাইন স্থাপন, শ্রম
পরিদর্শনের ডিজিটালাইজেশন ও শ্রম আদালতকে শক্তিশালীকরণসহ শ্রমিকদের অধিকারের ক্ষেত্রে
বাংলাদেশের বিভিন্ন অগ্রগতির কথা সভায় স্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
“শ্রমিক অধিকারের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানের জন্য
আরও পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের
তৈরি আইএলও রোডম্যাপের বিষয়গুলোও।”
সভায়
প্রয়োজনীয় সংস্কারমূলক কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গে পাস
করা এবং আইএলও রোডম্যাপের চারটি অগ্রাধিকার খাত দ্রুত বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে বাংলাদেশ।
যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, নিউ
ইয়র্ক ও ঢাকার মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়টি সভায়
অগ্রাধিকার দিয়ে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল।
“যত দ্রুত সম্ভব বিষয়টিকে পরবর্তী ধাপে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছে উভয়পক্ষ।”
পরামর্শ
সভার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে
জানানো হয়, বাংলাদেশি পণ্যের অগ্রাধিকারমূলক
প্রবেশ, উৎপাদন খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ, প্রযুক্তি হস্তান্তর এবং অবকাঠামোখাতে
ডিএফসির অর্থায়নের আহ্বান জানিয়েছেন উপদেষ্টা সালমান রহমান।
সভায়
বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রীর
বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানি ও পরিবেশ বিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি হোজে ফার্নান্দেজ।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস, সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও বেগম শামসুন নাহার
এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম শহীদুল
ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলে ছিলেন।