ম্যাক্রোঁর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে টুইটারে ইউক্রেইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা লেখেন, ‘‘রাশিয়ার অপমান এড়ানোর আহ্বান শুধুমাত্র ফ্রান্স এবং অন্য যে দেশগুলি এটির জন্য আহ্বান করবে তাদের অপমান করতে পারে।
‘‘কারণ, রাশিয়া নিজেই নিজেকে অপমান করেছে। কীভাবে রাশিয়াকে তার নিজের জায়গা দেখিয়ে দেয়া যায় আমাদের বরং সেদিকে মনযোগ দেয়া ভালো। এটা শান্তি ফিরিয়ে আনবে এবং জীবন রক্ষা করবে।”
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর আগেই পুতিনকে থামাতে বেশ দৌড়ঝাঁপ করেছিলেন ম্যাক্রো। এমনকি মস্কো সফরে গিয়ে পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠকও করেছেন।
যুদ্ধ শুরুর পর যুদ্ধবিরতিতে রাজি করাতে পুতিনের সঙ্গে কয়েক দফা টেলিফোনে আলাপ করেন তিনি। যদিও তাতে এখন পর্যন্ত কাজের কাজ কিছু হওয়ার লক্ষণ নেই। তবে ম্যাক্রোঁ যুদ্ধ থামানোর চেষ্টায় কমতি রাখেননি। তিনি পুতিনের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কূটনৈতিক উপায়ে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
পূর্ব ইউরোপ ও কয়েকটি বাল্টিক দেশ অবশ্য ম্যাক্রোঁর এ অবস্থানের সমালোচনা করে যাচ্ছে। তাদের অভিযোগ, ম্যাক্রোঁর এ অবস্থানের কারণে আলোচনার টেবিলে পুতিনের উপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
আঞ্চলিক একটি পত্রিকায় দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ রাশিয়াকে নিয়ে বলেন, ‘‘আমাদের অবশ্যই রাশিয়াকে অপমান করা উচিত নয়। যাতে যেদিন যুদ্ধ থামবে সেদিন আমরা কূটনৈতিক উপায়ে একটি প্রস্থানের পথ তৈরি করতে পারি।
‘‘আমি নিশ্চিত যে, ফ্রান্স শক্তিশালী মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা নিতে পারবে।”
শনিবার ম্যাক্রোঁর সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ পায়। সেখানে তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি মনে করি এবং আমি তাকে এটা বলেওছি যে, তিনি তার জনগণের জন্য, নিজের জন্য এবং ইতিহাসের জন্য একটি ঐতিহাসিক এবং গুরত্বপূর্ণ ভুল করছেন।”
যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেইনকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা করেছে ফ্রান্স। কিন্তু ইউক্রেইনের প্রতি রাজনৈতিক সমর্থনের প্রতীক হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশের নেতারা যুদ্ধের মধ্যে কিইভ সফর করলেও ম্যাক্রোঁ এখন পর্যন্ত সেখানে যাননি। কিইভ বিশেষভাবে চায় তিনি সেখানে যান। ম্যাক্রোঁ বলেছেন, তিনি সেই সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
ফ্রান্সের সেনাবাহিনীর অস্ত্রভাণ্ডার থেকে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র নিয়ে সেগুলো ইউক্রেইনে পাঠিয়েছে ম্যাক্রোঁ সরকার। তিনি তার দেশের অস্ত্র নির্মাতাদের উৎপাদন বাড়ানোর কথাও বলেছেন।