ক্যাটাগরি

সীতাকুণ্ডে কন্টেইনার ডিপোতে আগুন: মৃত্যু বেড়ে ৪

দগ্ধ ও আহতদের মধ্যে দুই জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। আর দুই জনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রাজীব পালিত।

শনিবার রাত দেড়টার পরে তিনি চার জনের মৃতুর খবর জানান। এদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানাতে পেরেছেন তিনি।

হাসপাতালে ব্যাপক ভিড়ের কারণে চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। রাত ২টার দিকে র‌্যাব সদস্যরা অযাচিত ব্যক্তিদের হাসপাতাল থেকে বের করে দিতে শুরু করেছেন।  

নিহতদের মধ্যে একজন মমিনুল হক (২২)। তিনি বিএম ডিপো নামের ওই কন্টেইনার ডিপোতে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন নিহতের চাচা খোরেশদ আলম।

শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগার পর ভয়াবহ বিস্ফোরণে ওই ডিপোতে দুই শতাধিক ব্যক্তি দগ্ধ ও আহত হওয়ার খবর এসেছে।

আগুনে দগ্ধ ও আহতদের রাত দেড়টার দিকেও চট্টগ্রাম মেডিকেলে আনা হচ্ছিল। আহতদের মধ্যে অন্তত ১০ জন পুলিশ সদস্যও রয়েছেন।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াস নগরীর চিকিৎসকদের আহতদের সেবায় রাতের বেলাতেই এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

আগুন নেভাতে গিয়ে অন্তত ফায়ার সার্ভিসের চারজন কর্মী আহত হয়েছেন যাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কুমিরা স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, ওই কন্টেইনার ডিপোতে রাসায়নিক থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। তাদের সঙ্গে পুলিশ ও স্থানীয়রা সহায়তা করছে।

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক শাহজাহান শিকদার জানান, বিএম কন্টেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের কাছে রাত ৯টা ২৫ মিনিটে আগুনের খবর দেওয়া হয়। এরপর সেখানে আটটি ইউনিট যায়। প্রাথমিকভাবে হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে।

বিস্ফোরণের কারণে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান তিনি।

স্থানীয় সাংবাদকি মিজানুর রহমান ইউসুফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,  তিন কিলোমিটার দূর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

কদমরসুল এলাকায় এলাকার এ ডিপোতে লাগা আগুনে কন্টেইনার ডিপোর কর্মী, পুলিশ সদস্য ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রয়েছেন।

রাত সাড়ে ৯টার পর বিএম ডিপোতে আগুনের সূত্রপাত হয়, খবর পেয়ে শুরুতে ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট যায়।

ফায়ার সার্ভিসের কুমিরা স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার নুরুল আলম দুলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই কন্টেইনার ডিপোতে রাসায়নিক থেকে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

“আগুন নেভাতে গিয়ে আমাদের চার কর্মী আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

আহতদের বিষয়ে নিশ্চিত করে এখনও কিছু জানাতে পারেনি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলের অনেক দূর থেকেও আগুন দেখা গেছে।

সীতাকুণ্ডে ডিপোতে বিস্ফোরণ: মৃত্যু বেড়ে ৪

হতাহতদের ‘দায়িত্ব নেবে’ বিএম ডিপো

কন্টেইনার ডিপোতে আগুনে দগ্ধ হতাহতদের চিকিৎসা ভার নেওয়ার ঘোষণা এসেছে ডিপো কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।

শনিবার রাতে বিএম কন্টেইনার ডিপোর পরিচালক মুজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কী কারণে আগুন লেগেছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে কন্টেইনার থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করছি। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে হতাহতদের পাশে আমরা থাকব। “চিকিৎসার সব ব্যয় আমরা বহন করব। আহতদের সব রকম চিকিৎসা দেওয়া হবে।“

হতাহতদের ‘সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ’ দেওয়া হবে বলেও দাবি করা হয় বিজ্ঞপ্তিতে। এতে বরা হয়, “পাশাপাশি সব হতাহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়া হবে। এছাড়া প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিবে সেভাবে সব করা হবে।”

চট্টগ্রাম নগরী থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ২৪ একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত বিএম কন্টেইনার ডিপোটির যাত্রা শুরু ২০১১ সালে।

ওই ডিপোর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের যৌথ বিনিয়োগে বেসরকারি এ ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটি (আইসিডি) গড়ে তোলা হয়। এর চেয়ারম্যান নেদারল্যান্ডসের বার্ট প্রঙ্ক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাংলাদেশের মোস্তাফিজুর রহমান।

এ ডিপোতে পোশাক, খাদ্য প্রক্রিয়াজাত খাতের পণ্যসহ বিভিন্ন ধরনের আমদানি ও রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার জাহাজীকরণ ও পরিবহনের জন্য প্রস্তুত করা হয়।