ক্যাটাগরি

অস্ট্রেলিয়াতেও করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত

সোমবার তারা জানান, যুক্তরাজ্য থেকে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে যাওয়া দুইজনের দেহে ওই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। তারা দুইজনই হোটেলে কোয়ারেন্টিনে আছেন।

নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের রাজধানী সিডনিতে গত বুধবার থেকে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ এবং শনাক্ত রোগী দ্রুত বাড়ছে। সিডনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে নতুন একটি ক্লাস্টার বা গুচ্ছ থেকে এ রোগ ছড়াচ্ছে।

বুধবার থেকে সেখানে ৮৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। নতুন ক্লাস্টারটি সিডনির নর্দান বিচেস অঞ্চলে শনাক্ত হওয়ায় ওই এলাকায় সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেখানকার আড়াই লাখের বেশি বাসিন্দাকে ঘরবন্দি থাকতে বলা হয়েছে।

বাকিদেরও ওই এলাকা এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রোগের বিস্তার প্রতিরোধে বাকি অস্ট্রেলিয়া থেকে সিডনিকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়েছে।

তবে যুক্তরাজ্য থেকে যাওয়া দুই ভ্রমণকারী ও নতুন ক্লাস্টারের মধ্যে কোনও সংযোগ নেই বলে নিশ্চিত করেছেন নিউ সাউথ ওয়েলসের কর্মকর্তারা।

যুক্তরাজ্যের গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনাভাইরাসের নতুন ‘স্ট্রেইন’ মূল ভাইরাস থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ দ্রুত রোগ ছড়াতে সক্ষম।

ভাইরাসের নতুন এই ‘স্ট্রেইন’ ছড়িয়ে পড়তে পারে আশঙ্কায় অনেক দেশই এরইমধ্যে যুক্তরাজ্যের জন্য দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। ওই তালিকায় নতুন নাম ভারত ও হংকং। উভয়ই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে।

ভাইরাসের নতুন এই ‘স্ট্রেইন’ সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের’ মাধ্যমে ভাইরাসের নতুন এই ধরন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট ‍হ্যানকক ভাইরাসের নতুন ধরনটি সম্পর্কে সতর্ক করে বলেছেন, ‘এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে’। তিনি সবাইকে সরকারের জারি করা চার-স্তরের কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলার অনুরোধ করেছেন।

বিশেষ করে রাজধানী লন্ডন, দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের বেশিরভাগ অংশ এবং পূর্ব ইংল্যান্ডের কিছু অংশের বাসিন্দাদের এসময় এলাকা ত্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ইংল্যান্ডে বড়দিনের ছুটির সময় সরকার সামাজিক দূরত্বের বিধিনিষেধ শিথিলের যে পরিকল্পনা করেছিল তাও বাতিল করা হয়েছে।

এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়া নিজ নিজ দেশে ভাইরাসের নতুন ধরন ছড়িয়েছে কিনা তা নিবিড়ভাবে লক্ষ্য করছে। দুই দেশই কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে বেশ সফল। কিন্তু শীতের সঙ্গে সঙ্গে সেখানেও আবার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে।

এশিয়ার বাণিজ্য নগরী চীন নিয়ন্ত্রিত হংকংয়েও সংক্রমণ বাড়ছে। সোমবার হংকং প্রশাসন ২২ ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের সব ফ্লাইট বাতিল ঘোষণা করে। আর ২২ ডিসেম্বরের আগে যারা আসবেন তাদের দুই সপ্তাহের পরিবর্তে তিন সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।

ভারত এ বছর যুক্তরাজ্যের সঙ্গে তাদের সব ফ্লাইট বাতিল করেছে। আগামী বুধবার থেকে ওই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। তার আগে যারা আসবেন বিমানবন্দরেই তাদের সবার কোভিড পরীক্ষা হবে।

দক্ষিণ কোরিয়া আগেই সে দেশে প্রবেশে সবার জন্য ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন এবং কোয়ারেন্টিনের শুরু ও শেষে দুইবার করোনাভাইরাস পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করেছে। এখন তারা যুক্তরাজ্যের জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।

গত সপ্তহে দক্ষিণ কোরিয়ায় একাধিক দিন দৈনিক শনাক্ত হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়ও রোববার সিউলে একটি কারাগারে ১৮৮ জন কারাবন্দি ও কারারক্ষীর দেহে কোভিড-১৯ শনাক্ত হয়েছে।