হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনটি বুধবার কার্যতালিকা
থেকে বাদ দিয়ে‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মতিউর রহমানের আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান খান বলেন, “এর ফলে এ বিষয়ে হাই
কোর্টের যে আদেশ ছিল, তা বহাল থাকল। অর্থাৎ প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম
ছয় মাসের জন্য স্থগিতই থাকছে।”
বিচারপতি মো. রেজাউল হক ও বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমানের হাই কোর্ট বেঞ্চ
গত ১৩ ডিসেম্বর মতিউর রহমানের মামলা বাতিলের আবেদনের শুনানি নিয়ে তার বিরুদ্ধে মামলার
কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দেয়।
পাশাপাশি মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, জানতে
চেয়ে রুলও দেয় হাই কোর্ট।
গত বছর নভেম্বরে কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড
কলেজের ছাত্র নাইমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর পর তার বাবার করা মামলায় প্রথম আলো সম্পাদক
মতিউর রহমানসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
তাদের মধ্যে কিশোর আলোর সম্পাদক আনিসুল হকের নাম বাদ দিয়ে বাকি নয় জনের
বিরুদ্ধে গত ১২ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক
কে এম ইমরুল কায়েশ।
আবরার রাহাতের মৃত্যু: প্রথম আলো সম্পাদকের মামলার কার্যক্রম হাই কোর্টে স্থগিত
এই প্রেক্ষিতে গত ৬ ডিসেম্বর মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে হাই কোর্টে মামলা
বাতিল চেয়ে আবেদন করা হয়।
মোহাম্মদপুরে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ক্যাম্পাসে এক অনুষ্ঠানে গত
বছর ১ নভেম্বর বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় নবম শ্রেণির ছাত্র আবরার রাহাত। মহাখালীর ইউনিভার্সাল
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।
ওই অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিল প্রথম আলোর কিশোর সাময়িকী কিশোর আলো। প্রথম আলো
সম্পাদক মতিউর রহমান কিশোর আলোর প্রকাশক; আর কিশোর আলোর সম্পাদক হলেন আনিসুল হক।
ওই ঘটনায় আবরারের বাবা মো. মুজিবুর রহমান গত ৬ নভেম্বর প্রথম আলো সম্পাদকসহ
অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে এ মামলা করেন।
তদন্ত শেষে গত ১৬ জানুয়ারি প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর
থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলিম।
নাইমুল আবরারের মৃত্যুর পেছনে কিশোর আলো কর্তৃপক্ষের ‘অবহেলার প্রমাণ’
পাওয়ার কথা জানিয়ে অভিযোগপত্রে বলা হয়, অনুষ্ঠানের জন্য যে বিদ্যুৎসংযোগ স্থাপন করা
হয়েছিল, তা ‘অরক্ষিত’ ছিল। ঘটনাস্থলের খুব কাছে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থাকলেও আবরারকে
মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়া হয়।
মতিউর রহমান ছাড়া অভিযুক্ত অন্যরা হলেন- প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহ-সম্পাদক
মহিতুল আলম, প্রথম আলোর হেড অব ইভেন্ট অ্যান্ড অ্যাকটিভেশন কবির বকুল, নির্বাহী শাহপরান
তুষার ও শুভাশীষ প্রামাণিক, অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ সরবরাহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জসীম উদ্দিন,
মোশাররফ হোসেন, সুজন ও কামরুল হাওলাদার।