বৃহস্পতিবার পুলিশের ‘না রাজি’ আবেদন আমলে নিয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করে দিয়েছে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দেলোয়ার হোসেনের আদালত।
সেই সঙ্গে বিচারক এ মামলায় শিপ্রা দেবনাথকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন বলে তার আইনজীবী অরূপ বড়ুয়া তপু জানিয়েছেন।
শিপ্রা দেবনাথ আদালতে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আসলে সিনহাকে ফিরে পাব না, সব চাইতে বড় সত্য এটা। তাই সন্তুষ্টির কিছুই নাই।”
গত ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা।
‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য সিনহা প্রায় একমাস কক্সবাজারের হিমছড়িতে ছিলেন। ওই কাজেই তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাত।
ওই রাতেই কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকা সংলগ্ন নীলিমা রিসোর্টে অভিযান চালিয়ে শিপ্রাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে সে সময় কিছু মাদক পাওয়ার কথাও বলা হয় পুলিশের পক্ষ থেকে।
পরদিন শিপ্রার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে রামু থানায় মাদক আইনে মামলা করে। আর সিনহার গাড়ি থেকে মাদক উদ্ধারের অভিযোগে টেকনাফ থানায় মামলা করা হয় সিফাতের বিরুদ্ধে।
পুলিশের দেওয়া ঘটনার বিবরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ২ অগাস্ট উচ্চ পর্যায়ের এই তদন্ত কমিটি গঠন করে। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘বিচার বহির্ভূত হত্যার’ অভিযোগগুলোও নতুন করে আলোচনায় আসতে শুরু থাকে।
সিনহার বোন আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করলে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলি এবং টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাসসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে অত্মসমর্পণ করেন। তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্তও করা হয়।
এছাড়া এই ঘটনার পর কক্সবাজারের পুলিশকে নতুন করে সাজানো হয়। এসপি থেকে কনস্টেবল- প্রায় সব পুলিশ সদস্যকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার দশ দিন পর গত ১০ অগাস্ট জামিনে মুক্তি পান শিপ্রা ও সিফাত। তখনই মামলা দুটির তদন্তভার র্যাবকে দেওয়া হয়।
তদন্ত শেষে গত ১৩ ডিসেম্বর সিনহার বোনের মামলায় অভিযোগপত্র দাখিলের পাশাপাশি সিফাত ও শিপ্রার বিরুদ্ধে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে র্যাব জানায়, অভিযোগের কোনো সত্যতা তারা পায়নি।
বৃহস্পতিবার শিপ্রার মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে পুলিশ নারাজি দেওয়ায়, আদালত পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করে দিল।