তিনি বলেছেন, “এটি আহাম্মকের বক্তব্য ছাড়া তো অন্য কোনো
কিছু নয়।”
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে
সাংবাদিকদের প্রশ্নে হাছান মাহমুদের এমন মন্তব্য আসে।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন শনাক্ত হওয়ায় দেশে সংক্রমণ এড়াতে
যুক্তরাজ্যসহ সব দেশের সঙ্গে বিমানের ফ্লাইট বন্ধের দাবি জানিয়ে বুধবার একটি বিবৃতি
দেন বিএনপি মহাসচিব।
সে বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন,
“উনি (ফখরুল) আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য বলেছেন।
প্রকৃত পক্ষে করোনা মহামারীর মধ্যে পৃথিবীর কোনো দেশ আন্তর্জাতিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন
হয়নি।
“এমনকি ইউকে-তে করোনার নতুন ভার্সন যেটি অনেক বেশি… সেটি দেখা দেওয়ার পর আশেপাশের
দেশগুলো বিমান ও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করেছে, তখন ইইউ’র পক্ষ থেকে গতকাল আহ্বান জানানো
হয়েছে সেটি না করার জন্য এবং যোগাযোগ পুনঃস্থাপন করার জন্য।”
হাছানের ভাষায়, “মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যে মনে হচ্ছে,
প্যানডেমিক নিয়ে তিনি একজন বিশেষজ্ঞ। তিনি এমনভাবে পরামর্শ দিলেন, যে কী কী বন্ধ করতে
হবে… আর বাংলাদেশে সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ।
“ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবকে বলব, উনি তো শিক্ষিত মানুষ,
আমি সবিনয়ে তাকে অনুরোধ করব, আশপাশের দেশগুলোতে করোনায় কী পরিমাণ মৃত্যু বা করোনা শনাক্তের
হার কতটুকু, সেটি একটু বিশ্লেষণ করে দেখার জন্য।”
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “গতকাল (বুধবার) বাংলাদেশে করোনা শনাক্তের
হার ছিল গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। শীতকালে করোনা বাড়বে এটা আগে থেকেই সরকার সতর্ক
করেছিল, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো থেকে জনগণকে সচেতন করা হয়েছিল। একই সঙ্গে মাস্ক পরার বাধ্যবাধকতা
আরোপ করা হয়েছে।”
বাংলাদেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি ‘বিশেষজ্ঞদের ধারণার থেকেও
ভালো’ মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাছান।
তিনি বলেন, “আমরা যতটুকু আশঙ্কা করেছিলাম করোনা বৃদ্ধির,
ঠিক সেভাবে এখন পর্যন্ত আল্লাহর রহমতে হয়নি। সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণে আশপাশের দেশগুলো
থেকে অনেক বেটার পজিশনে আছে। এই করোনার দ্বিতীয় ঢেউও আমরা সঠিকভাবে প্রথম ঢেউয়ের মত
মোকাবেলা করতে পারব বলে আমরা আশা করছি।”
বাংলাদেশে সাড়ে নয় মাস আগে করোনাভাইরাস শনাক্ত হলেও বিএনপি
‘জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি’ বলে মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমাদের দলের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ কমিটির পক্ষ
থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত মানুষের কাছে মাস্ক, স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা
হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে এক কোটি ২০-২৫ লাখ মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে, সরকারের
পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে।
“করোনা শুরু হওয়ার পর তো মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীররা
অনেক আশঙ্কার কথা বলেছিলেন। দেশে রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে, হাসপাতালে ভর্তি হতে
পারবে না রোগী। কার্যত আল্লাহর রহমতে সেটি হয়নি, তাদের শঙ্কা-আশঙ্কাগুলো ভুল প্রমাণিত
হয়েছে।”
আবারও লাকডাউন দেওয়ার পরিকল্পনা আছে কি না, এ প্রশ্নে
হাছান বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মানা, মাস্ক পরার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
“আগেও কিন্তু লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি, সরকারি ছুটি দেওয়া
হয়েছিল, স্কুল-কলেজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, অনেক কিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু
লকডাউন ঘোষণা করা হয়নি। এখনও স্কুল-কলেজ বন্ধ আছে, অনেক কিছু বন্ধ আছে।”
ফের ‘সরকারি ছুটির’ ঘোষণা বা কাজকর্ম কমিয়ে দেওয়া হতে
পারে কি না- সেই জিজ্ঞাসায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমার মনে হয় প্রয়োজনের নিরিখে বিভিন্ন
সংস্থা তো সেই ব্যবস্থা নিতেই পারে। সংস্থা-প্রতিষ্ঠান তো নিজস্ব সিদ্ধান্ত নিতেই পারে।”