শুক্রবার নগরীর নিমতলা
পোর্ট কানেক্টিং রোড সংলগ্ন ৩৬ নম্বর গোসাইলডাঙ্গা ওয়ার্ডের মহেশখালের শাখা দিয়ারপাড়া
খালে পরিচ্ছন্ন অভিযানে গিয়ে তিনি এ কথা বলেছেন।
খালটির বিলুপ্ত প্রায়
দশা দেখে ক্ষোভ জানিয়ে প্রশাসক সুজন বলেন, “মহেশখালের এই শাখা খালটি এক সময় বেশ বড়
আকারের ছিল। এই খালে নৌযান চলাচল করত, পণ্য ও যাত্রী পরিবহন হত এবং খাল দিয়ে কর্ণফুলীতে
পানি চলাচল করত।
“নগরীতে এ ধরনের দুই
ডজনেরও বেশি প্রশস্ত ও গভীর শাখা খাল ছিল। এখন সবগুলোই বিলুপ্ত ও বেদখল হয়ে গেছে। এ
কারণেই জলাবদ্ধতার নিরসন হচ্ছে না। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে বিলুপ্তপ্রায় খাল পুনরুদ্ধার
ও অবৈধ দখল মুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। তাই
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মাঠে নেমেছে।”
জলাবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনীর
তত্ত্বাবধানে মেগা প্রকল্পের ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই প্রকল্পের
শতভাগ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে খালসহ পানি চলাচলের পথগুলো পরিষ্কার ও বাধামুক্ত করার
অংশ হিসেবে দিয়ারপাড়া এলাকায় এই অভিযান।
সুজন বলেন, “এই খালটিকে
পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চাই। খালটিকে যারা ডাস্টবিনে পরিণত করেছে, খালের দুই পাড়
দখল করে যারা এটাকে নালায় পরিণত করেছে, তাদেরকে সোমবার পর্যন্ত সময় দেওয়া হল। এর মধ্যে
আবর্জনা পরিষ্কার ও খালের উপর থেকে অবৈধ স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে না নিলে পরদিন থেকে
‘সরাসরি অ্যাকশন’ শুরু হবে।
“এরপর খাল পরিষ্কার
ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে যে খরচ হবে তা অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করা হবে। জরিমানা,
মালামাল জব্দসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনো ধরনের আবর্জনা ও বর্জ্য খালে ফেলা যাবে
না। এখন থেকে যে বা যারা খালে আবর্জনা ফেলবেন তা তাদেরকে দিয়েই পরিষ্কার করানো হবে।
এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ, দেখভাল ও নজরদারী করতে এলাকার মুরুব্বী, সামাজিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্ব
ভূমিকা রাখবেন।”
কালটি রক্ষায় তিনি
এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করে বলেন, “এলাকাবাসী যদি সহযোগী হয়ে এগিয়ে আসে তাহলে মাছের
চাষ করে খালটির স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনা হবে। নগরবাসীর জন্য মনোরম হাঁটাচলার পরিবেশও
সৃষ্টি করা হবে।”
নগরীর খালগুলো ভরাট
করে স্থাপনা ও বাসাবাড়ি নির্মাণকারী অবৈধ দখলদারদের ‘পাপিষ্ঠ দুর্বৃত্ত ও কুখ্যাত গণশত্রু’
আখ্যায়িত করে সিসিসির প্রশাসক বলেন, “এরা চট্টগ্রামকে একটি মানবিক নগর রূপান্তরের স্বপ্ন
পূরণের প্রধান প্রতিবন্ধক। এদের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ ও আইনের কঠোর প্রয়োগের কোনো
বিকল্প নেই।”
অভিযানে প্রশাসকের
সঙ্গে ছিলেন বন্দর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইলিয়াছ, মোহাম্মদ
মোর্শেদ আলী, মোহাম্মদ হোসেন, হাসান মোহাম্মদ মুরাদ, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান
আহাম্মেদ ইমু, সিটি করপোরেশনের অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম
চৌধুরী, প্রণব শর্মা, আলী আকবর প্রমুখ।
দিয়ারপাড়া খালের পাশাপাশি
শুক্রবার কালারপোল এলাকার একটি খালও পরিষ্কার করতে যান প্রশাসক।