শুক্রবার ‘মহিব্বিনে
আহমদ শফি ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ’র প্রচার সচিব মাওলানা মুফতি আব্দুস ছাত্তার স্বাক্ষরিত
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়।
হেফাজতে ইসলামের সাবেক
যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মহিউদ্দিন রুহী বিবৃতি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়,
“হাটহাজারী মাদ্রাসায় আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস- লুটতরাজের মাধ্যমে আহমদ শফীর কক্ষ
ভাংচুর, মাদ্রাসার মুহাদ্দিসদের কক্ষ ভাংচুর ও তাদেরকে শারীরিকভাবে মারধরের মাধ্যমে
সন্ত্রাসীরা পুরো কওমি অঙ্গনকে কুলষিত করেছে।
“জামাত-শিবিরের ক্যাডার
ও মানহাজী ও চরমপন্থিরা এ চক্রান্তের সাথে জড়িত। মূলত হাটহাজারী মাদ্রাসার ক্ষমতা দখল,
কওমী অঙ্গনকে দখল ও রজনৈতিকভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে এবং কওমি
মাদ্রাসার লাখ লাখ ছাত্র-তরুণ প্রজন্ম সরকারবিরোধী ইস্যু সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের পতন
তরান্বিত করতে বিরোধী রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শাহ আহমদ শফীকে দুনিয়া
থেকে সরিয়ে দেওয়াই তাদের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল।”
গত বুধবার হাটহাজারী মাদ্রাসায় সংবাদ সম্মেলন করে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, শাহ আহমদ শফীর ‘স্বভাবিক মৃত্যু’ হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
“আহমদ শফীর পরিবার হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছে, যখন বিচারের জন্য আদালতের
শরণাপন্ন হল তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি এক শ্রেণির ক্ষমতা লোভী ও রাজনৈতিক এজেন্ডা বস্তবায়নকারীরা
বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিকে অস্বীকার করে শাহ আহমদ শফীর লাশ কবর থেকে তুলতে হবে বলে
সধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে।”
বিবৃতিতে সরকারের কাছে
অনতিবিলম্বে শাহ আহমদ শফী ‘খুনের’ বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ
শাস্তির দাবি জানানো হয়।
বলা হয়, “গত বুধবার
(২৩ ডিসেম্বর) হাটহাজারী মাদ্রাসায় জুনাইদ বাবুনগরী তার আপন মামাকে ও হাটহাজারী মাদ্রাসার
কিছু নিরীহ ওস্তাদদের সাথে নিয়ে যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার মাধ্যমে তিনি একটি কথাই
বার বার তুলে ধরেছেন, তাহল- আল্লামা শাহ আহমদ শফীর স্বভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
“যদি স্বভাবিক মৃত্যু
হয় তবে তদন্ত হলে সমস্যা কোথায়? স্বভাবিক মৃত্যু হলে তদন্তের ফলাফলই তো বেরিয়ে আসবে।
তাহলে তিনি কেন মামলা প্রত্যাহার করার জন্য হুমকি দিচ্ছেন এবং প্রত্যাহার করা না হলে
তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে হুমকি দিচ্ছেন?
“এতে করে বোঝা যায়,
ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। যদি তার দাবি সত্য হয়ে থাকে তাহলে তার উচিত ছিল এ মামলা ও তদন্ত
সব কিছুকে সাধুবাদ জানানো। তা না করে তিনি সংবাদ সম্মেলন করে হুমকি-ধমকি দিয়ে এটাই
প্রমাণ করলেন যে, শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু অস্বাভাবিক হয়েছে। হাটহাজারী মাদ্রাসার কোনো
ওস্তাদ মামলায় অভিযুক্ত না হলেও সংবাদ সম্মেলনে হাটহাজারী মাদ্রাসার ওস্তাদদেরকে উপস্থিত
রেখে মূলত আলেম-ওলামাদেরকে বিতর্কে জড়ানোর চেষ্টা করছেন এবং পাবলিকের দৃষ্টি ভঙ্গিকে
ভিন্ন খাতে নেওয়ার পাঁয়তারা করছেন।”
বিবৃতিতে বলা হয়, ৩৬
জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের আদালতে যে মামলা হয়েছে তারা সবাই আল্লামা শাহ আহমদ শফীর
‘হত্যাকাণ্ডের’ সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত।
“শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে
তারা আজ বিভিন্ন আলেমদের নামে নিজেদের বিবৃতি দিচ্ছে মিডিয়াতে। আহমদ শফীর জানাজায় শরিক
হয়েছিলেন তারা সবাই আল্লামা শাহ আহমদ শফীকে হত্যাকাণ্ডের নিশান প্রত্যক্ষ করেছে এবং
হযরতের পরিবার থেকে একাধিকবার বক্তব্য ও সাংবাদিক সম্মেলন করে বিচারের দাবি করা হয়েছে।
আহমদ শফীকে ‘হত্যার’ অভিযোগে মামুনুলসহ ৩৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
“একজন ভিকটিম হিসাবে
হত্যার বিচার দাবি করা তার পরিবারের জন্য অপরাধ? সন্ত্রাসীরা হযরতের পরিবার এবং মাওলানা
আনাছ মাদানীকে আজও হত্যার হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকির ভয়ে তিনি সচরাচর চলাফেরা করতে
পারছে না।”
এই পরিস্থিতির জন্য
আইন শৃঙ্খলা সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কমনা করা হয়।
যে কোন অবস্থায় কওমীয়াতের
ঐক্য ধরে রাখতে ও ষড়যন্ত্রকারীদের ফাঁদে পা না দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান আলেমরা।
এ বিষয়ে শনিবার বেলা
১১টায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন হবে বলেও জানান মহিউদ্দিন রুহী।