আলফ্রেদ্রো দি স্তেফানো স্টেডিয়ামে শনিবার রাতে লা লিগায় মৌসুমের প্রথম মাদ্রিদ ডার্বি ২-০ গোলে জিতেছে জিনেদিন জিদানের দল। কাসেমিরোর গোলে ম্যাচের শুরুর দিকেই এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল। দ্বিতীয়ার্ধে তাদের অন্য গোলটি প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী।
দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে রিয়াল কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে-শাখতার দোনেৎস্কের বিপক্ষে হারের পর মাঠে তা দেখানোর তাগিদ দিয়েছিলেন লুকা মদ্রিচ। তিন দিনের ব্যবধানে অসাধারণ দুটি জয়ে সেটাই প্রমাণ করল দলটি।

প্রতিপক্ষের ভুলের সুযোগ কাজে লগিয়ে গত শনিবার লিগে সেভিয়ার বিপক্ষে জয়ের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে বরুশিয়া মনশেনগ্লাডবাখকে হারিয়েছিল রিয়াল। এবার আরকটি দারুণ পারফরম্যান্সে আতলেতিকোকে আসরে প্রথম হারের স্বাদ দিল জিদানের দল।
স্প্যানিশ লিগে ২৬ ম্যাচ ও ১০ মাসেরও বেশি সময় পর হারের তেতো স্বাদ পেল আতলেতিকো। এর আগে সবশেষ গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে এই নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের মাঠেই ১-০ গোলে হেরেছিল তারা।
তিন দিন আগে মনশেনগ্লাডবাখের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ছন্দে ফেরার আভাস দেওয়া রিয়ালের এদিনের শুরুটাও হয় দারুণ। প্রথম ১০ রাউন্ডে মাত্র দুটি গোল হজম করা আতলেতিকোর জমাট রক্ষণে ১০ মিনিটের মধ্যে দুবার ভীতি ছড়ায় স্বাগতিকরা।
নবম মিনিটে তো এগিয়েও যেতে পারতো তারা; কিন্তু ডান দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে করিম বেনজেমার জোরালো শট ঝাঁপিয়ে কোনোমতে ঠেকান দারুণ ফর্মে থাকা ইয়ান ওবলাক। বল তার আঙুল ছুঁয়ে লাগে পোস্টে। পরের মিনিটে লুকাস ভাসকেসের দূরের পোস্টে বাড়ানো ক্রসে পা লাগাতে পারেননি মনশেনগ্লাডবাখের বিপক্ষে জোড়া গোল করা ফরাসি ফরোয়ার্ড।

চাপ ধরে রেখে পাঁচ মিনিট পরেই গোল আদায় করে নেয় চ্যাম্পিয়নরা। টনি ক্রুসের কর্নারে হেডে পোস্ট ঘেঁষে বল জালে পাঠান অরক্ষিত কাসেমিরো। এবারের লিগে সেটপিসে আতলেতিকোর জালে এটাই প্রথম গোল।
জুনের পর লিগে এই প্রথম কোনো ম্যাচে প্রথমে গোল হজম করল আতলেতিকো। গত ৩০ জুন বার্সেলোনার মাঠে দিয়েগো কস্তার আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়েছিল তারা।
প্রথমার্ধে ৪০ শতাংশের কম সময় বল দখলে রাখা আতলেতিকো শেষের ১০ মিনিটে কিছুটা চাপ বাড়ায়। তবে বিরতির আগে গোলের উদ্দেশে একটিও শট নিতে পারেনি তারা।
দ্বিতীয়ার্ধের দশম মিনিটে ম্যাচে প্রথম সুযোগ পায় আতলেতিকো। ডান দিক থেকে মার্কোস ইয়োরেন্তের বাড়ানো নিচু ক্রস ভারানে-কারভাহাল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে ছোট ডি-বক্সের বাঁ দিকে ফাঁকায় পেয়ে যান তুমা লিমাঁ। পাশের জালে মেরে সুবর্ণ সুযোগটি নষ্ট করেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড।
৬৩তম মিনিটে দানি কারভাহালের নৈপুণ্য সঙ্গে ভাগ্যের সহায়তায় ব্যবধান দ্বিগুণ করে রিয়াল। ক্রুসের ফ্রি কিকে ডি-বক্সে বল হেডে ক্লিয়ার হলেও পেয়ে যান কারভাহাল। বুক দিয়ে নামিয়ে স্প্যানিশ ডিফেন্ডারের নেওয়া জোরালো শটে বল পোস্টে লেগে ফেরার পথে ওবলাকের পেছনে লেগে জালে জড়ায়।

ম্যাচে ফিরতে মরিয়া হয়ে শেষ দিকে চাপ বাড়ায় আতলেতিকো। ৮০তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল তারা; তবে গোলরক্ষক বরাবর হেড করেন সাউল নিগেস, ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। তিন মিনিট পর ডি-বক্সের মুখ থেকে উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন লিমাঁ।
নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর ভালো সুযোগ পান ভাসকেস। কিন্তু তার জোরালো শট দারুণ ক্ষিপ্রতায় রুখে দেন ওবলাক।
১২ ম্যাচে রিয়ালের এটি সপ্তম জয়। সঙ্গে দুই ড্রয়ে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠেছে প্রতিযোগিতার সফলতম দলটি।
সমান ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে রিয়াল সোসিয়েদাদ। শীর্ষে থাকা আতলেতিকোর পয়েন্ট ২৬, এক ম্যাচ কম খেলেছে তারা।
১০ ম্যাচে চার জয় ও দুই ড্রয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে নবম স্থানে আছে শিরোপাপ্রত্যাশী বার্সেলোনা।