সাভার থানার এই পরিদর্শক সোমবার বিডিনিউজ
টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, তার তদন্ত ‘প্রায় শেষের পথে’। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে
পড়ায় অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেননি।
“জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত হওয়ায় কোভিড পরীক্ষা করাতে
দিয়েছি। সুস্থ হলেই দাপ্তরিক অন্যান্য কাজ শেষ করে
অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেব।”
ইতোমধ্যে মামলার আটজন সাক্ষীর ১৬১ ধারায়
জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। ডিএনএ বিশ্লেষণের প্রতিবেদন আদালতে জমা পড়েছে।
সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল থেকে ময়নাতদন্ত
প্রতিবেদনও তদন্ত কমকর্তার হাতে এসেছে। আগামী ১৮ জানুয়ারি এ মামলায় তদন্ত
প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ রয়েছে।
মানিকগঞ্জ জেলার বালিরটেক
এলাকার নারায়ণ রায়ের মেয়ে নীলা সাভার পৌর এলাকার ব্যাংক কলোনির অ্যাসেড স্কুলের দশম
শ্রেণিতে পড়ত। পৌর এলাকার কাজী মোকমা পাড়ার এক বাড়িতে তার পরিবার ভাড়া থাকে।
স্কুলছাত্রী নীলা রায় হত্যা মামলার প্রধান আসামি মিজানুর রহমান চৌধুরী।
মিজানুর রহমান চৌধুরী নামের এক যুবক নীলাকে বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন।
ওই প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সাভার পৌরসভার পালপাড়া এলাকায়
ছুরি মেরে হত্যা করা হয় নীলাকে।
তার বাবা নারায়ণ রায় পরদিন মিজানুর
রহমান, তার বাবা আব্দুর রহমান ও মা নাজমুন নাহার সিদ্দিকাকে আসামি করে সাভার থানায়
হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এরপর ২৪ সেপ্টেম্বর মিজানের বাবা আব্দুর
রহমান (৬০) ও মা নাজমুন্নাহার সিদ্দিকাকে (৫০) গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরদিন
সাভারের তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের রাজফুলবাড়িয়া এলাকার একটি ইটভাটার পাশ থেকে মিজানুর ও
তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
সাত দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ১ অক্টোবর মিজানুর আদালতে ১৬৪ ধারায় ‘স্বীকারোক্তিমূলক’
জবানবন্দি দেন। সেখানে তিনি ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী
সাংবাদিকদের জানান।
জবানবন্দিতে মিজানুর বলেন, তার ব্যবসায়ী বাবা
তাকে বিয়ে করিয়ে দিলেও নীলাকে তিনি পছন্দ করতেন। কিন্তু নীলা তাতে রাজি ছিলেন না।
ঘটনার দিন নীলা তার ভাইকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার
সময় রাস্তায় তার পথরোধ করেন মিজানুর ও তার দুই সঙ্গী। বিয়েতে রাজি না হয়ে কথা কাটাকাটির
এক পর্যায়ে তাকে কোপাতে শুরু করেন মিজানুর।
নীলা ও তার ভাইয়ের
চিৎকারে আশপাশের লোকজন জড়ো হলে মিজানুর ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যান। পরে সাভারের একটি
এলাকা থেকে লুঙ্গি দিয়ে মুখ ঢেকে বাসে করে আরিচায় চলে যান মিজানুর। তারপর পুলিশের হাতে
ধরা পড়েন তিনি।
নীলার বাবা মেট্রো রেল প্রকল্পের শ্রমিক নারায়ণ রায়
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মিজানুর বলত, থানা-পুলিশ ওদের কথায় চলে। আর
কিছু বখাটে ছেলের সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল। এসব দেখে মনে করতাম ওর অনেক ক্ষমতা। তাই
নীরবে সব সহ্য করেছি।”
‘বিয়েতে রাজি না হওয়ায়’ নীলাকে কুপিয়ে হত্যার ‘স্বীকারোক্তি’ মিজানুরের