বুধবারের এ ঘটনায় হতাহতদের অধিকাংশই ত্রাণকর্মী এবং সরকারি কর্মী। তবে মন্ত্রিসভার কোনো সদস্য হতাহত হননি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী মায়িন আবদুলমালিক।
রয়টার্স লিখেছে, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াইরত দুই মিত্রপক্ষকে ঐক্যবদ্ধ করার সৌদি উদ্যোগের ফল নতুন এ মন্ত্রিপরিষদ।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ থেকে নবগঠিত পরিষদের সদস্যদের নিয়ে একটি উড়োজাহাজ ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর এডেনের বিমানবন্দরে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই হামলা শুরু হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
এ সময় বিকট বিস্ফোরণের পাশাপাশি টানা গুলিবর্ষণের শব্দ শোনা যায়। বিমানবন্দরের হলরুমে তিনটি মর্টারের গোলা এসে পড়ে বলে স্থানীয় একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন চ্যানেল আল আরাবিয়ায় প্রদর্শিত ফুটেজে দেখা যায়, এডেন বিমানবন্দরে নামা উড়োজাহাজটি থেকে লোকজন বের হয়ে আসার সময় বিমানবন্দরের হলে প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটছে। এর পরপরই সাঁজোয়া যানগুলো থেকে ব্যাপক গুলিবর্ষণ করা হয়। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে সাদা ও কালো ধোঁয়া উঠতে দেখা যায়।
অন্যান্য ভিডিও ফুটেজে বিমানবন্দরের টার্মিনালের ক্ষতিগ্রস্ত কংক্রিট দেয়াল ও ভাঙা গ্লাস দেখা গেছে।
হামলার পর প্রধানমন্ত্রী মায়িনসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের এবং ইয়েমেনে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ সৈয়দ আল জাবেরকে নিরাপত্তার জন্য এডেনের মাশেক প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হয়।
কিন্তু প্রথম হামলার কয়েক ঘণ্টা পর ওই প্রাসাদের পাশেও আরেকটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায় বলে স্থানীয় বাসিন্দা ও গণমাধ্যম জানিয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদের তরফ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে এক টুইটে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের হামলায় ২২ জন নিহত ও ৫০ জন আহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে রেডক্রসের আন্তর্জাতিক কমিটি জানিয়েছে, এ হামলায় তাদের দুই কর্মী সদস্য নিহত ও অপর একজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এর আগে চিকিৎসা ত্রাণ সংস্থা মেদসাঁ সঁ ফ্রোঁতিয়ের জানিয়েছিল, তারা তাদের এডেন হাসপাতালে ১৭ জন আহতকে চিকিৎসা দিয়েছে।
তাৎক্ষণিকভাবে কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি।
সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী বলেছে, প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে আক্রমণ চালানোর জন্য পাঠানো বিস্ফোরক ভর্তি একটি হুতি ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে তারা।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে হুতিদের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তারা বিমানবন্দরে হামলার দায়ও অস্বীকার করেছে।
সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনের এই নতুন মন্ত্রিপরিষদ প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর হাদির সরকারকে দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী সাউদার্ন ট্রান্সজিশনাল কাউন্সিলের (এসটিসি) সঙ্গে একত্রিত করেছে। সৌদি আরবের উদ্দেশ্য পূরণেই তার মিত্ররা নিজেদের মধ্যকার বিরোধ অবসানের লক্ষে নতুন এ মন্ত্রিসভায় শামিল হয়েছে।
রাজধানী সানাসহ ইয়েমেনের উত্তরাঞ্চলের নিয়ন্ত্রণে থাকা হুতিদের বিরুদ্ধে লড়াইরত সৌদি সমর্থিত জোটের দক্ষিণাঞ্চলভিত্তিক প্রধান দুটি উপদল এই দুটি গোষ্ঠী।
এসটিসি হামলার নিন্দা করে এর জন্য হুতি আন্দোলনকে দায়ী করেছে।