আমার সেই বন্ধুর নাম বাকু। এখানে নাম বললাম এ কারণে যে, জার্মানির নুরেনবার্গে যেখানে আমি থাকি, সেখানেও বাকু তার এ নাম ছাড়া অন্য অনেক নামে পরিচিত। অর্থাৎ এটি তার আসল নাম নয়।
ময়মনসিংহের ছেলে বাকু মদারু নয়। তবে জুয়া ছাড়া বাঁচতে পারে না। আর করোনাভাইরাসের এ সময়টাতেও সে নারী নিয়ে ‘ফূর্তি’ (তার ভাষায়) ও অন্যান্য কিছু বাদ রাখলেও- জুয়া একেবারে যে ছাড়তে পেরেছে, তা নয়।
প্রবাসের দিনগুলোতে দুই বা আড়াই শ নারীর সাথে দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়েছে বাকু। এদের মধ্যে এক পোলিশ রমণীর সাথে দীর্ঘ সময় অর্থাৎ ৩ বছরের মতো ছিল। সেই পোলিশ নারীর গর্ভে তার দুই সন্তানও রয়েছে। বাকুর ঔরসজাত দুই বাচ্চা নিয়ে পেশায় উকিল পোলিশ সে নারী এখন পোল্যান্ডেই থাকেন।
পোলিশ নারীর সাথে সম্পর্কে থাকা অবস্থাতেও বাকু জড়িয়েছে একাধিক নারীর সাথে সম্পর্কে।
একবার এক অনিন্দ্য সুন্দরী নারী আমার কার্যালয়ে এসে হাজির। জিজ্ঞাসা করলো, “তোমার বন্ধু বাকু কোথায়? তিন-চার দিন ধরে কোনও খবর নেই!”
আমি বিনয়ের সাথে বললাম- “আমার জানা নেই। প্রতিশ্রুতি দিলাম বাকুর সাথে দেখা হলে তাকে জানাবো।”
ওই নারী কিন্ডারগার্টেনের তত্ত্বাবধায়িকা হিসেবে কাজ করেন। তার বোন চিকিৎসক। সেই চিকিৎসক বোন যখন এরলানগেন বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিনের ছাত্রী ছিলেন, তখন তার সাথেও বাকুর দৈহিক সম্পর্ক ছিল!
আমার এ বন্ধুর অনেক খারাপ গুণের মধ্যে একটি ভালো গুণ হলো তার বন্ধুবাৎসল্যতা। তার বাসায় কেউ গেলেই শুরু করে দেবে বিরাট আপ্যায়ন -আয়োজন।
তার নারী বন্ধুদের তালিকায় কিন্ডারগার্টেনের তত্ত্বাবধায়িকা (মিস), শিক্ষিকা, ব্যবসায়ী, ডাক্তার, ব্যাংকার, মডেল, সমাজ কর্মী, বিদ্যালয়, মহাবিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরাসহ বিভিন্ন পেশার নারীরা আছেন। আমার অন্তত তার ২৫ থেকে ৩০ জনের মত বান্ধবীর সাথে পরিচয় হয়েছিল। এমনকি তার কয়েকজন বাঙালি, ভারতীয় ও কমপক্ষে দুইজন পাকিস্তানি বান্ধবীও ছিল।
এছাড়া তুর্কি এক সুন্দরীর সাথে বছর তিনেক ছিল বাকু। এ সংসারেও একটা বাচ্চা হয়েছিল। কিন্তু শিশুটি মারা যায়। বাকুর তুর্কি বান্ধবী মাঝে মাঝে মডেলিং করতো। পরমা সুন্দরীদের একজন সে। এ নারীর সাথে বাকুর ইসলামী মতে বিয়েও হয়েছিল, যা জার্মান সরকার কর্তৃক স্বীকৃত ছিল না।
তবে বাকুর ‘প্লেবয়’ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের কারণে এ সম্পর্কও টেকেনি। কারণ তার তুর্কি মুসলিম স্ত্রীর চাচাতো বোনের সাথেও বাকু নিষিদ্ধ সম্পর্কে জড়িয়ে গিয়েছিল।
তার বয়স যখন প্রায় ৪৩/৪৪ বছর তখন সে প্রেমে পড়লো ১৮ বছরের চেয়ে কম বয়সের এক মেয়ের। আমার কাছে এলো কী করবে জানতে! আমি পরিষ্কার জানিয়ে দিলাম- কোনও দৈহিক সম্পর্ক না। প্রেমে পড়তে দোষ নেই। তখনও তার নতুন বান্ধবীর ১৮ বছর হতে দেড় মাস বাকি ছিল। ১৯ বছর হওয়ার আগেই তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম হলো, পরে আরও একটা।
করোনাভাইরাসের বছরে জার্মানির নুরেমবার্গ যৌনপল্লীর ফাকা কাউন্টার, যেখানে যৌনকর্মীরা বসতেন। ছবি: লেখক
বাকুর সাথে কোথাও যাওয়া খুবই বিব্রতকর। মেয়েদের দেখলে সে আলাপ শুরু করে দেবে, যত জরুরি কাজই থাক না কেন! আর রাস্তাঘাটে এ জাতীয় আচরণ বিব্রতকরও বটে। অনেক সময় এমন হয় তার সাথে যিনি আছেন, তিনি হয়ত দেখবেন বাকু পিছে নেই, কোনও মেয়ের সাথে কথা বলছে ৫০/৬০মিটার পিছে।
একবার আমি বাকুর সাথে ট্রামে করে নুরেমবার্গ শহরের কেন্দ্র থেকে তার বাসার দিকে যাচ্ছিলাম। ট্রামে আমাদের সামনের আসনে মুখোমুখি বসেছিলেন একজন ভদ্রমহিলা। তিনি ছিলেন খুবই সুন্দরী, একহারা গড়নের। বাকুর দিকে তাকিয়ে মিটমিট করে হাসছিলেন।
আমি বাকুকে জিজ্ঞাসা করলাম, “কী ব্যাপার ভদ্রমহিলা হাসছিলেন কেন?”
সে আমাকে বললো, “মহিলা একজন পতিতা (জার্মানিতে যৌনকর্মী বলে না)।”
আমার তো বিশ্বাসই হচ্ছিল না। তার সাজসজ্জা বা পোশাকে যৌনকর্মী হওয়ার কোনও ছাপ ছিল না।
প্রশ্ন করলাম, “কিন্তু তোকে দেখে ওই মহিলা হাসছিল কেন?”
তখন বাকু জানালো, একদিন সে যৌনপল্লীতে গিয়েছিল এ নারীর কাছে। কিন্তু তার কাছে টাকা ছিল না। একটু ‘স্পর্শ’ করার পর বাকু ব্যাংক থেকে টাকা উঠিয়ে দ্রুত ফিরবে বলে ওই নারীর কাছ থেকে বিদায় নিয়েছিল। পরে আর যায়নি বলেই ওই নারী হঠাৎ দেখা হয়ে যাওয়ায় হাসছিলেন!
আমি একবার একজন যৌনকর্মীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য বাকুর সাহায্য চাইলাম। বন্ধু আমাকে দিলারা নামের এক হাঙ্গেরিয়ান যৌনকর্মীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিল। ভদ্রমহিলার ব্যবহার চমৎকার। তার বয়ফ্রেন্ড আছে, এবং সে জানে তার বান্ধবীর পেশা কী। এমনকি তার বয়ফ্রেন্ড কাজের শেষে যৌনপল্লী থেকে একসাথে তাকে নিয়েই বাসায় ফেরে।
আমার সাথে সেইদিন তার বন্ধুরও পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল।
যাইহোক আসল কথায় আসি। করোনার ছোবলের পর লকডাউনে যে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করার নির্দেশ ছিল, যৌনপল্লী সেই তালিকায় এক নম্বরে ছিল। কেন- সে ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না।
একদিন আমার বন্ধু বাকুর কয়েকবার মিসড কল দেখলাম। আমি পাল্টা ফোন করে জিজ্ঞাসা করলাম, “মিসড কল কেন?”
সে বললো, “ফোনে মিসড কল দেওয়ার পয়সাই আছে, তার বেশি নেই।”
আমি জানতে চাইলাম, “কী খবর? কীজন্য ফোন?”
জানালো, সেদিন শহরে ঘোরার সময় সে ও তার এক তুর্কি বন্ধু যৌনপল্লীর কাছাকাছি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল, তখন তিনজন সুন্দরী তাদের পিছু নেয়। সাধারণত জার্মানি বা ইউরোপে যৌনকর্মে নিয়োজিতরা কারও পিছু নিতে যান না।
ওই যৌনকমীর্রা কাছাকাছি এসে গেলে বাকু তাদের স্মরণ করিয়ে দেয় আর না এগোতে। কারণ লকডাউনের মধ্যে দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।
বাকু যত ‘অকাম’ই করে বেড়াক না কেন, সে স্বাস্থ্য সচেতন এবং করোনাভাইরাসের ব্যাপারে মারাত্মক ভীতু।
এ যৌনকর্মীরা ছিলেন রোমানিয়া থেকে আগত। এরা বাকু ও তার বন্ধুকে দৈহিক মিলনের প্রস্তাব দেয়। বাকুদের জানায়, তাদের কাছে কোনও টাকা নেই, সবকিছু বন্ধ, তাদের কোনও ব্যবসা নেই। তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার মতো টাকা নেই। যদি বাকু ও তার বন্ধু তাদের সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত হয়, তাহলে খুব উপকার হবে বলে ওই রোমানিয়ান নারীরা।
বাকু তাদের সাফ বলে দেয়, করোনাভাইরাসের মধ্যে এ জাতীয় কোনও সম্পর্কে আগ্রহী নয়।
তখন তারা জানতে চায়- তোমার বন্ধু কি আগ্রহী? বাকুর তুর্কি বন্ধু ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছু না বলেই জানতে চায়, “তোমাদের কত দিতে হবে?”
তারা জানায়, স্বাভাবিক মূল্যে একবার যৌন সম্পর্কের জন্য ৫০ ইউরো, কিন্তু এ দুঃসময়ে আমরা ১০ ইউরো এমনকি পাঁচ ইউরোতেও রাজি।
তখন তারা যৌনকর্মীদের ফোন নম্বর নিয়ে বলে, “প্রয়োজনে আমরা যোগাযোগ করবো।”
করোনাভাইরাসের সময় জার্মানির যৌনপল্লীগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অতএব এ জাতীয় কোন তৎপরতাও সম্ভব ছিল না।
আমি বাকুর কাছে জানতে চাইলাম, “কিন্তু আমাকে ফোন করার কারণ কী? শুধুই কী মজার ঘটনা জানানোর জন্য? না অন্যকিছু?”
সে বললো, “না, এখন শহরের সবকিছু বন্ধ ভুতূড়ে অবস্থা। তুই এর আগে একটা নিবন্ধ লিখতে চেয়েছিলি। এখন এসে সরেজমিনে দেখে কিছু ছবি তুলতে পারিস এবং একটা রিপোর্ট করতে পারিস।”
আমি তাকে ধন্যবাদ জনিয়ে প্রস্তাবে সাড়া দিলাম। তবে বাকুকে জানালাম তার থাকার দরকার নেই। কারণ এখন কারো সাথে দেখা সাক্ষাতে বিধি-নিষেধ আছে। পুলিশের সামনে পড়লে ঝামেলা বা জরিমানা নিশ্চিত।
আমি বাকুর কাছ থেকে যৌনকর্মীদের টেলিফোন নম্বর নিয়ে নিলাম একটা সাক্ষাৎকার নেওয়ার জন্য।
জার্মানিতে কর না দিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ নেই, শুধু যৌন ব্যবসা ছাড়া। এখানে আয়কর পুলিশ অসহায়!
অধিকাংশ যৌনকর্মীরা বিদেশি। তারা আসেন পূর্ব ইউরোপের দেশগুলো থেকে। তারা আসেন, যান এবং আবার আসেন। বলতে পারেন, যৌনকর্মটা তাদের কাছে খণ্ডকালীন কাজ।
এদের অনেকেই ছাত্রী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে বন্ধ থাকে, তখন আসে তিন মাসের জন্য। আর যাই হোক যৌনকর্মীদের জন্য জার্মানিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে হয়। এটা সবার জন্য বাধ্যতামূলক। তবে এ নিয়ম অনিবন্ধিত যৌনকর্মীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যায় না।
বাকুর সাথে কথা হওয়ার একদিন পর আমি গেলাম যৌনপল্লীর ছবি তুলতে। ভুতূড়ে গলি বলে মনে হল। কেউ নেই, আমি একা সে রাস্তায়।
যৌনপল্লীতে যেখানে ‘যৌনবেদন’ নিয়ে ‘খদ্দের’ ধরতে যৌনকর্মীদের অপেক্ষা করার কথা, সে জায়গা শূন্য পড়ে আছে। আর হাস্যকর কিছু বিজ্ঞপ্তি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে জানালার কাচে এবং দরজায়। সেখানে লেখা মাস্ক ব্যবহার ও দেড় মিটার দূরত্ব বজায় রাখার জন্য। সাধারণত জার্মানিতে শুধু মাস্কের কথা বলা হয় না।
অন্যান্য সব জায়গায় (যেখানে জরুরি সেখানে) লেখা থাকে- মুখ ও নাসিকাবরণ ব্যবহার করার জন্য। যৌনপল্লীতে শুধু এ ব্যতিক্রম দেখেছি। তবে যাই লেখা থাকুক না কেন এটা আমার কাছে ‘হাস্যকর’ মনে হয়েছে। মানুষ নিশ্চয়ই যৌনপল্লীতে দেড় মিটার দূরে দাঁড়িয়ে আর নাক-মুখ বেঁধে দৈহিক সম্পর্ক লিপ্ত হতে পারবে না!
বাকুর জীবনযাপনের গল্প বলা এবং জার্মানির যৌনপল্লীতে যাওয়ার মূল কারণ ছিল পৃথিবীকে বদলে দেওয়া করোনাভাইরাসের সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এবং আদিম একটি পেশায় নিয়োজিতদের দুরাবস্থার বিষয়ে আরও কিছু তথ্য জোগাড় করা।
ইতিহাসে কোনও যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং বিরূপ পরিস্থিতিতে যৌনকর্মীদের এ ধরনের বিপদে পড়তে হয়েছে কিনা জানিনা।
জার্মানিতে বেশিরভাগ যৌনকর্মীরাই কোনও প্রণোদনা পাচ্ছেন না। কারণ তারা সরকারকে কোনও কর দেন না। তারা সামাজিক নিরাপত্তার জন্য কোনও বীমা করেননি। অতএব তাদের কোনও সুবিধা পাবার প্রশ্নই উঠছে না।
ছবিটা করোনাভাইরাস সংক্রমণের আগের নুরেমবার্গ যৌনপল্লীর। ছবি: লেখক
তবে সবক্ষেত্রে একথা ঠিক না যে, তারা প্রণোদনা পাচ্ছে না। একশ ভাগ পতিতায় তাদের সমস্ত আয়ের সঠিক হিসাব সরকারকে দেয় না। তারা ১০ শতাংশ আয়ের ঘোষণা দেয় কিনা সন্দেহ। যারা আয়ের ঘোষণা দিয়েছে তারা অবশ্যই প্রণোদনা পাচ্ছে এবং পাবে।
জার্মানির যৌনপল্লীতে কাজ করাদের অধিকাংশই নিবন্ধিত। তা নাহলে তাদেরকে বড় ধরনের জরিমানা গুনতে হয়। কিন্তু এদের উপার্জন এত বেশি যা অন্য কোনও ব্যবসায় সম্ভব না! আর এ উপার্জন কাগজপত্রে দেখালে অর্ধেক চলে যাবে আয় কর দিতে গিয়েই। স্বাভাবিক কারণেই যৌনকর্মীরা কর দেন না। যত কম সম্ভব সেটা দেখায়। যার কারণে প্রণোদনাও পাচ্ছে কম।
যেখানে একজন যৌনকর্মীর মাসে আয় কমপক্ষে দশ হাজার ইউরো, তিনি হয়তো কাগজে-কলমে দেখান দেড় হাজার ইউরো। অতএব তিনি পাবেন তার ৬০ ভাগ প্রণোদনা, যদি তিনি একা হন। আর যদি ওই যৌনকর্মীর বাচ্চা থাকে ১৮ বছরের নিচে, তাহলে বেশি পাবেন। কিন্তু এদের যে খরচের হাত, তাতে এ অর্থে চলতে মারাত্মক কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
বন্ধু বাকু যে যৌনকর্মীদের ফোন নম্বর দিয়েছিল তাদের ফোন করে জানতে চাইলাম একটা সংক্ষিপ্ত টেলিফোন সাক্ষাৎকার দিতে রাজি আছে কিনা? তাদের জার্মান বা ইংরেজি ভাষার জ্ঞান খুবই কম। তখন আমার সামান্য রোমানিয়ান, জার্মান ও ইংরেজি দিয়ে একজনের সাক্ষাৎকার নিতে পারলাম।
তিনি জানালেন- তারা রোমানিয়া থেকে জার্মানিতে এসেছিলেন তিন মাসের জন্য। অতএব তারা অবৈধভাবে এ ব্যবসায় যুক্ত ছিল। আর এটা এমনই ব্যাপার পুলিশ কিছু করতে পারে না। কারণ, তারা বাসা থেকে যৌনব্যবসা করে।
পরে তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, আমি তাকে কোন সাহায্য করতে পারি কিনা?
জবাবে আমি বললাম, “তুমি যে দিকে ইঙ্গিত করছো সেভাবে পারি না। আমার বউ আছে। আর করোনার মধ্যে প্রশ্নই উঠছে না। যেখানে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন কারোর নতুন বান্ধবী নেওয়াও উচিৎ না। সেখানে আমি একজন যৌনকর্মীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক তো দূরে থাক, দুই মিটার দূরত্বের মধ্যে আসতে চাই না। তুমি চাইলে আমার কাছ থেকে দশ ইউরো সাহায্য পেতে পারো, অবশ্যই দূরত্ব বজিয়ে রেখে। তোমার দশ মিনিটের সাক্ষাৎকারের জন্য। আমি ঘণ্টায় দশ ইউরো উপার্জন করি। তোমাকে দশ মিনিটে দশ ইউরো।”
যখন ওই রোমানিয়ান নারী জানলেন, আমার নিবন্ধের জন্য তাকে ফোন করেছিলাম, এর বাইরে কিছু নয়- তখন তিনি কট করে ফোন রেখে দেন। এমনকি এ অসময়েও দশ ইউরোর তোয়াক্কা করলেন না!
লেখক: তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অল ইউরোপিয়ান বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন এবং জার্মান বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন।
লেখকের ইমেইল: mfjoarder@gmail.com
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা probash@bdnews24.com। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |