ক্যাটাগরি

করোনাভাইরাস: দক্ষিণ কোরিয়ায় মৃত্যু হাজার ছাড়াল

নতুন ২৮ জনের মৃত্যুর পর মঙ্গলবার দেশটি এ দুঃখজনক মাইলফলক অতিক্রম করে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

সংক্রমণ মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়ায় কঠোর সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বিধি জারি রয়েছে। কিন্তু জিম মালিকরা এ বিধিনিষেধের বিরোধিতা করছেন। প্রতিবাদস্বরূপ তাদের বন্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেওয়ারও হুমকি দিচ্ছেন তারা।

আগ্রাসী শনাক্তকরণ পরীক্ষা ও আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া দেশজুড়ে বিস্তৃত লকডাউন দেওয়া ছাড়াই করোনাভাইরাসের শুরুর দিককার ঢেউগুলোকে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংক্রমণের সবচেয়ে বড় যে ঢেউ চলছে তা মোকাবেলায় তাদেরকে একের পর এক কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার কোরিয়ার ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন এজেন্সি (কেডিসিএ) নতুন ৭১৫ জনের শরীরে প্রাণঘাতী ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়ার কথা জানিয়েছে। সব মিলিয়ে দেশটিতে সরকারি হিসাবেই করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬৪ হাজার ৯৭৯ জনে; মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৭ জনের।

মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে প্রেসিডেন্ট মান জায়ে-ইন বলেছেন, তার দেশের প্রধান লক্ষ্যই ছিল ‘করোনাভাইরাসের দীর্ঘ সুড়ঙ্গ’ থেকে বেরিয়ে আসা।

“জনগণের হারিয়ে ফেলা দৈনন্দিন জীবন দ্রুত পুনরুদ্ধারে এই বছর আমরা নিশ্চিতভাবেই কোভিড-১৯ থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো,” বলেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার এ প্রেসিডেন্ট।

সংক্রমণ মোকাবেলায় দক্ষিণ কোরিয়া যেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে তার মধ্যে জিম থাকলেও বিধিনিষেধ মেনে তায়েকান্দো ও ব্যালে ক্লাস চালানোর অনুমতি দিয়ে রেখেছে।

এ ধরনের ‘অন্যায্য দ্বিচারী’ আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জিম মালিকরা।

এমন এক সময়ে জিমগুলো বন্ধ রয়েছে যখন নতুন গ্রাহক যুক্ত হওয়ার সময় চলছে, বলেছেন সিউলের জিম ব্যবসায়ী কিম জায়ে-কাং। সিউলে নিজের ফিটনেস অ্যান্ড পাইলেটস সেন্টার শিগগিরই চালুর পরিকল্পনা করছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যে বিধিনিষেধ রয়েছে তা লঙ্ঘন করলে প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালক ও পৃষ্ঠপোষকদের সর্বোচ্চ ২ হাজার ৭৬০ ডলার পর্যন্ত জরিমানার বিধান রয়েছে।

রেস্তোরাঁর তুলনায় জিমগুলোতে সামাজিক দূরত্ব ভালোভাবে মেনে চলা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জিম মালিক সমিতির প্রধান ওহ সুং-ইয়ং।

“যারা ব্যায়াম করতে আসে তারা তাদের স্বাস্থ্যের বিষয়ে তুলনামূলক বেশি সচেতন থাকে; যে কারণে তারা কখনোই তাদের মাস্ক খুলবে না,” বলেছেন তিনি।

ওহ জানিয়েছেন, তিনি বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে শিগগিরই তার প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। তার মতো আরও প্রায় ৩০০টি জিমও একই ধরনের পরিকল্পনা করছে বলেও অনুমান জিম মালিক সমিতির এ প্রধানের। অনেক জিম গোপনে গ্রাহকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার বলছে, অর্থনৈতিক ক্ষতি এড়াতে তারা সর্বোচ্চ পর্যায়ের লকডাউন না দিয়ে সামান্য কিছু বিধিনিষেধের আওতায় রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছেন।

যদিও এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা অগ্রাহ্য করায় সংক্রমণের মাত্রা বাড়ছে বলেও অভিযোগ করেছেন অনেক কর্মকর্তা।

সোমবার কেডিসিএ-র পরিচালক জিয়ং ইউন-কেয়ং বলেছেন, কর্তৃপক্ষ জিমগুলোর সঙ্গে ন্যায্য আচরণের বিষয়ে অবগত; কিন্তু ব্যায়ামের সময় মাস্ক পরে রাখা কষ্টসাধ্য হবে বিবেচনাতেই জিমগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।