ক্যাটাগরি

অভিযানে যা পাওয়া গেছে, তার ভিত্তিতেই ইরফানের মামলা: র‌্যাব মহাপরিচালক

ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে র‌্যাবের দায়ের করা অস্ত্র ও মাদক আইনের মামলায় আদালতে ‘চূড়ান্ত প্রতিবেদন’ দাখিল করে তার অব্যাহতির যে আবেদন পুলিশ করেছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আবদুল্লাহ আল মামুনের এমন মন্তব্য আসে।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে মঙ্গলবার র‌্যাব সদরদপ্তরে রক্তদান কর্মসূচির উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে র‌্যাব মহাপরিচালককে প্রশ্ন করেন।

পরে র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক আশিক বিল্লাহকেও একই প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উত্তরে তিনি বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তা তার উপলদ্ধি এবং বাস্তবতায় এ ধরনের চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে বলে মনে করি।”

তবে তিনি এও বলেন, ওই চূডান্ত প্রতিবেদনে কী বলা হয়েছে, তা তারা জানেন না। প্রতিবেদন পেলে জানতে পারবেন।

নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় গতবছর অক্টোবরে ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমসহ সাতজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়।

পরে ২৫ অক্টোবর পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাটের দেবীদাস লেইনে হাজী সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায় র‌্যাব। আটক করা হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশেনের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল মোল্লাকে। 

ওই ভবন থেকে দুটি অবৈধ পিস্তল, গুলি, একটি এয়ারগান, ৩৭টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার উদ্ধার করার কথা সে সময় র‌্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

মদ আর ওয়াকিটকির জন্য ইরফান ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাস করে এক বছরের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে অস্ত্র ও মাদক আইনে দুজনের বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা

তদন্ত শেষে পুলিশ সোমবার জাহিদুল মোল্লার বিরুদ্ধে দুই মামলায় অভিযোগপত্র দিলেও ইরফানের দুই মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে তার অব্যাহতি চায়। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়- ‘মিসটেক অব ফ্যাক্টস’, অর্থাৎ, তথ্যগত ভুল ছিল।

পুলিশের ওই প্রতিবেদনের কারণে র‌্যাবের অভিযান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে কি না- এমন প্রশ্নে আশিক বিল্লাহ বলেন, “সুনিদিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে সেদিনের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে।

“যে সব আলামত পাওয়া গেছে সে সব বিষয়সহ সকল বিষয় সন্নিবেশিত করে মামলা হয়েছে। (পুলিশের) তদন্ত কর্মকর্তা যেসব বিষয়ে কাজ করেছেন, সে ব্যাপারে আমরা অবহিত নই।”

র‌্যাব যে পুলিশেরই একটি বিশেষায়িত বাহিনী, সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে আশিক বিল্লাহ বলেন, “র‌্যাব যে সকল অভিযান চালায়, তা বাস্তবতার ভিত্তিতে হয়, স্বচ্ছতা থাকে। চাপমুক্তভাবে সুস্পষ্ট সাক্ষীদের সাক্ষ্য নিয়ে বিজ্ঞ পুলিশ কর্তকর্তাদের দ্বারা মামলা করা হয়।”

রক্তদান কর্মসূচির উদ্বাধনী অনুষ্ঠানে র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, ১ জানুয়ারি শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী এই কর্মসূচিতে র‌্যাব সদস্যরা রক্ত দানের পাশাপাশি মিলাদ মহাফিল, দুঃস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, মেধাবী গরীব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান এবং গাছ লাগানোর মত কাজে অংশ নেবেন।

আশিক বিল্লাহ জানান, ঢাকায় দুইশ র‌্যাব সদস্য এবং রাজধানীর বাইরে তিনশ র‌্যাব সদস্য মঙ্গলবার রক্ত দিয়েছেন। ঢাকায় দেওয়া রক্ত পুলিশ হাসপাতালে এবং ঢাকার বাইরের রক্ত রেডক্রিসেন্টের তত্ত্বাধানে থাকবে। দুঃস্থ ও গরীব রোগীরা এ রক্ত বিনামূল্যে পাবে।