ক্যাটাগরি

কোয়ারেন্টিনে থাকলেও মুক্ত খালেদা ‘স্বস্তিতে’

খালেদার পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান লন্ডন থেকে শাশুড়ির চিকিৎসা কার্যক্রম তদারক করছেন
বলেও জানিয়েছেন তিনি।

দলের ভাইস
চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক টিমের সদস্য অধ্যাপক এ জেড
এম জাহিদ হোসেন শুক্রবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
এসব এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, “কোয়ারেন্টিনে
ম্যাডামের চিকিৎসা চলছে। উনি শারীরিকভাবে
গুরুতর অসুস্থ হলেও ঘরোয়া পরিবেশে এখন স্বস্তি বোধ করছেন।
উনার মানসিক বলটা বেড়ে গেছে। আগে যে বিপর্যস্ত চেহারা ছিল সেটাও অনেকটা কমে আসছে।”

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট
মামলায় দণ্ডিত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা
জিয়া। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও দণ্ডিত হন তিনি।

প্রথমে পুরান ঢাকার পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হলেও গত বছর ১ এপ্রিল
থেকে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল।

বিশ্বজুড়ে মহামারী
আকার নেওয়া নভেল করোনাভাইরাসে বাংলাদেশেও সংক্রমণ দেখা দেওয়ার মধ্যে খালেদা জিয়ার স্বজনদের
আবেদনে সাড়া দিয়ে দণ্ডের কার্যকারিতা ছয় মাস স্থগিত করে তাকে মুক্তি দিয়েছে সরকার।

গত বুধবার
বিকালে মুক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় আসেন খালেদা জিয়া। বাসায় আসার পর ব্যক্তিগত
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে দেখে চিকিৎসা শুরু করেন।

৭৫ বছর
বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখ
ও দাঁতের নানা সমস্যায় ভুগছেন।

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ
এড়াতে ‘ফিরোজা’র দোতলায় ১৫ দিনের জন্য হোম
কোয়ারেন্টিনে আছেন খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে নার্সসহ সেবাদাতা কয়েকজনও সেখান থেকে বেরোচ্ছেন না।

ওই ভবনে এখন খালেদার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দলের সদস্য ও নিকট আত্মীয়- স্বজন ছাড়া কারও প্রবেশাধিকার নেই। নিরাপত্তাকর্মীরা
সব সময়ে ফটক আটকে পাহারা দিচ্ছেন।

ডা. জাহিদ বলেন, “ম্যাডাম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এই সময়ে সোশ্যাল ডিসট্যান্স অর্থাৎ একজন থেকে অপরজনকে যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে চলার নিয়ম তা যথাযথ মেনেই
ম্যাডামের সেবা প্রদানকারীরা সেবা দিচ্ছেন।”

তিনি বলেন, “ম্যাডাম প্রিয়জনদের
সাথে মোবাইলে কথা-বার্তা বলতে পারছেন, ডাক্তারদের সাথে কথা
বলছেন যেটা সমস্যা যেটা জানাচ্ছেন। সম্পূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশে তিনি সময় কাটাচ্ছেন। কখনও শুয়ে, কখনও বসে, কখনও বই-পত্র পড়ে সময় কাটাচ্ছেন তিনি।”

চিকিৎসার বিষয়ে অধ্যাপক
জাহিদ জানান, বিএসএমএমইউর মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া ওষুধগুলোতে কিছুটা সংযোজন-বিয়োজন আনা
হয়েছে।

“ম্যাডামের হাত-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা রয়েছে। আর্থ্রাইটিসের কারণে হাত-পায়ের জয়েন্টে গুটলি হয়েছে। এগুলো উনাকে
ভীষণ কষ্ট দিচ্ছে, প্রচণ্ড ব্যথা।
এই ব্যথা উপশমের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা ওষুধে কিছুটা পরিবর্তন ও সংযোগ এনেছেন।”

তিনি বলেন, “কারাগারের নির্জনতা
ও নির্মমতার কারণে ম্যাডাম মানসিকভাবে বিপর্য্স্ত হয়ে পড়েছিলেন।
উনি অনেকটা শুকিয়ে গেছেন, দুর্বলতাও রয়েছে তার। ওজনও তার ৯-১০ কেজি কমে গেছে।”

কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসায় তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশা
প্রকাশ করে এই চিকিৎসক বলেন, “একটা সিস্টেমের মধ্যে চলে আসলে উনার ডায়াবেটিসের সমস্যাও ক্রমশ
কমে আসবে বলে আমরা ধারণা করছি।”

বিএসএমএমইউ’র মেডিকেল বোর্ডের
ব্যবস্থাপত্র ও পরীক্ষার কাগজপত্রগুলোর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের
সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলে জানান অধ্যাপক জাহিদ।