ক্যাটাগরি

 কামিন্সের দাপটে বিপদে ভারত

তৃতীয় দিনের খেলা শেষে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ২ উইকেটে ১০৩ রান। স্বাগতিকরা এগিয়ে
১৯৭ রানে। লাবুশেন ৪৭ ও স্মিথ ২৯ রানে ব্যাট করছেন।

এক সময়ে ভারতের স্কোর ছিল ১৯৫/৪। শেষ ৬ উইকেট মাত্র ৪৯ রানে হারিয়ে তারা গুটিয়ে
যায় ২৪৪ রানে।

আইসিসি টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ বোলার কামিন্স ২৯ রানে নেন ৪ উইকেট। দুর্দান্ত
ফিল্ডিংয়ে তিনটি রান আউট করেন অস্ট্রেলিয়ার ফিল্ডাররা। টেস্টে এক যুগের মধ্যে প্রথমবারের
মতো এক ইনিংসে রান আউট হলেন ভারতের তিন ব্যাটসম্যান।    

ব্যাটিংয়ের সময় পাওয়া চোটে ফিল্ডিংয়ে নামতে পারেননি রিশাব পান্ত ও রবীন্দ্র
জাদেজা। রিশাবের জায়গায় উইকেটের পেছনে দাঁড়ানো ঋদ্ধিমান সাহা চমৎকার এক ক্যাচে বিদায়
করেন উইল পুকোভস্কিকে। মোহাম্মদ সিরাজের দারুণ এক ডেলিভারিতে খুব বেশি কিছু করার ছিল
না অভিষিক্ত ওপেনারের।

চোট কাটিয়ে ফেরা ডেভিড ওয়ার্নারকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
তৃতীয় দিনে এটাই সফরকারীদের সবশেষ সাফল্য। লাবুশেন ও স্মিথকে দিনের বাকি সময়ে বিচ্ছিন্ন
করতে পারেনি তারা।

প্রথম ইনিংসে ৯ রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপে পোড়া লাবুশেন এবারও
খেলছেন আস্থার সঙ্গে। সেই ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান স্মিথ থিতু হয়ে গেছেন উইকেটে। সফরকারী
বোলাররা খুব একটা ভাবাতে পারেননি তাদের। এরই মধ্যে ৬৮ রানের জুটি গড়েছেন তারা।

অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া স্টিভেন স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেন। ছবি: ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া স্টিভেন স্মিথ ও মার্নাস লাবুশেন। ছবি: ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।

এর আগে ২ উইকেটে ৯৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা ভারতকে ভোগায় প্রত্যাশার চেয়ে নিচু
বাউন্স। শুরুটা অজিঙ্কা রাহানেকে দিয়ে। কামিন্সকে কাট করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান বিরাট
কোহলির অনুপস্থিতিতে দলতে নেতৃত্ব দেওয়া এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। বল ছিল শরীরের
বেশ কাছে, একই সঙ্গে প্রত্যাশার চেয়ে কম বাউন্স করায় ঠিক মতো খেলতে পারেননি। ব্যাটের
কানায় লেগে স্টাম্প এলোমেলো করে দেয় বল।

ঝূঁকিপূর্ণ সিঙ্গেল নিতে গিয়ে রান আউট হয়ে ফিরেন হনুমা বিহারি। মিড অফে জশ
হেইজেলউডের ফিল্ডিংও ছিল দুর্দান্ত। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বল মুঠোয় নিয়ে মাটিতে পড়তে পড়তে
চমৎকার থ্রোয়ে ভেঙে দেন স্টাম্প।

দ্রুত দুই উইকেট হারানোর ধাক্কা চেতেশ্বর পুজারা ও পান্তের ব্যাটে সামাল দিচ্ছিল
ভারত। জমে গিয়েছিল দুই ব্যাটসম্যানের জুটি। হেইজেলউডকে পুল করতে চেয়েছিলেন পান্ত, প্রত্যাশার
চেয়ে কম বাউন্স করা বল আঘাত হানে হাতে। এরপর খুব একটা স্বচ্ছন্ন ছিলেন না কিপার-ব্যাটসম্যান।
পরে হেইজেলউডের বলেই প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৩৬ রান করে।

৫৩ রানের জুটি ভাঙার পর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি ভারত। দ্বিতীয় নতুন
বল ঠিকঠাক সামলাতে পারেনি দলটি।

পান্তের বিদায়ের পরপরই কামিন্স ফিরিয়ে দেন পুজারাকে। ১৭৪ বলে ফিফটি স্পর্শ
করা এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ৫ চারে করেন ৫০। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের পর রান আউট হয়ে
যান জাসপ্রিত বুমরাহ।

অপরাজিত ২৮ রানের ইনিংসে দলকে আড়াইশ রানের কাছে নিয়ে যান জাদেজা। এই ইনিংস
খেলার পথেই আঙুলে চোট পান তিনি। প্রথম ইনিংসের সফলতম বোলারকে আর মাঠে পায়নি ভারত।

সিরাজকে কট বিহাইন্ড করে দলকে ৯৪ রানের লিড এনে দেন কামিন্স। নিখুঁত লাইন-লেংথে
বোলিং করা এই পেসারকে সামলানোর পথ যেন জানা ছিল না ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৩৩৮

ভারত ১ম ইনিংস: (আগের দিন শেষে ৯৬/২)
১০০.৪ ওভারে ২৪৪ (পুজারা ৫০, রাহানে ২২, বিহারি ৪, পান্ত ৩৬, জাদেজা ২৮*, অশ্বিন ১০,
সাইনি ৩, বুমরাহ ০, সিরাজ ৬*; স্টার্ক ১৯-৭-৬১-১, হেইজেলউড ২১-১০-৪৩-২, কামিন্স ২১.৪-১০-২৯-৪,
লায়ন ৩১-৮-৮৭-০, লাবুশেন ৩-০-১১-০, গ্রিন ৫-২-১১-০)।

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ২৯ ওভারে ১০৩/২ (ওয়ার্নার
১৩, পুকোভস্কি ১০, লাবুশেন ৪৭*, স্মিথ ২৯*; বুমরাহ ৮-১-২৬-০, সিরাজ ৮-২-২০-১, সাইনি
৭-১-২৮-০, অশ্বিন ৬-০-২৮-১)।