রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুরুতে স্বাস্থ্যকর্মীসহ করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সামনের সারিতে থাকা তিন কোটি কর্মীকে টিকার আওতায় আনার লক্ষ্য ঠিক করেছে দেশটির সরকার।
শনিবার ভারত সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই টিকাদান পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩৫ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতের ৩০ কোটি মানুষকে আগামী ৬ মাসের মধ্যে বিনামূল্যে টিকা দেওয়া হবে।
ভারতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে এক কোটি চার লাখ ৩১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের পর বিশ্বে সবচেয়ে বেশি।
শনিবারও ভারতে ১৮ হাজার ২২২ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
ভারতের ওষুধ খাতের নিয়ন্ত্রণক সংস্থা ইতোমধ্যে করোনাভাইরাসের দুটি টিকার অনুমোদন দিয়েছে।
এর মধ্যে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা ভারতে উৎপাদন এবং কোভিশিল্ড নামে বাজারজাত করবে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইনডিয়া।
আর ভারতীয় কোম্পানি ভারত বায়োটেক তাদের টিকা বাজারজাত করবে কোভ্যাক্সিন নামে।
স্বাস্থ্যকর্মী ও সামনের সারিতে থাকা কর্মীদের টিকা দেওয়ার পর পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিক এবং ৫০ এর কম বয়সীদের মধ্যে যাদের কো-মরবিডিটি (হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনি জটিলতা, ফুসফুসের রোগ ইত্যাদি দুরারোগ্য ব্যাধি) আছে, তাদের টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘কো-উইন ভ্যাকসিন ডেলিভারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেরও অনুমোদন দিয়েছেন, যার মাধ্যমে টিকার মজুদ, সংরক্ষণের তাপমাত্রা এবং বিতরণ পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যাবে।
মোদী বলেছেন, তার দেশ ওষুধ এবং টিকার রপ্তানি অব্যাহত রাখবে।
“পুরো বিশ্ব যে শুধু ভারতের টিকার জন্য অপেক্ষা করছে তা নয়, তারা খুব মনোযোগ দিয়ে দেখছে, ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই টিকাদান কর্মসূচি কীভাবে সামাল দেয়।”
On 16th January, India takes a landmark step forward in fighting COVID-19. Starting that day, India’s nation-wide vaccination drive begins. Priority will be given to our brave doctors, healthcare workers, frontline workers including Safai Karamcharis. https://t.co/P5Arw64wVt
— Narendra Modi (@narendramodi) January 9, 2021
ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রেজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে ইতোমধ্যে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ইতোমধ্যে ওই টিকা আমদানি ও ব্যবহারের অনুমোদনও দিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে গত ৫ জানুয়ারি বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “আমাদের এখানে টিকা দেওয়া দেওয়া শুরু হলেই ১৫ দিনের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের প্রতিবেশী কয়েকটি দেশে রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হবে।”
বাংলাদেশে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ‘ডিস্ট্রিবিউটর’ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কোভিশিল্ড ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার এক মাসের মধ্যে ৫০ লাখ ডোজ টিকার প্রথম চালান পাঠানোর কথা সেরাম ইনস্টিটিউটের।