‘বিশ্ব হাতের লেখা দিবস’ উপলক্ষে শনিবার
সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে ‘হ্যান্ড রাইটিং অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’
এই দাবি জানায়।
সংগঠনের সভাপতি ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক খোরশেদ আলম ভুঁইয়া বলেন, “বর্তমান প্রজন্মের
হাতের লেখা সুন্দর করার আমি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে সরকারের কাছে আমাদের দাবি থাকবে
যে, প্রত্যেকটা প্রাইমারি স্কুল থেকে শুরু করে হাই স্কুল পর্যন্ত হাতের লেখার শিক্ষক
নিয়োগ করুন।”
হাতের লেখার ভূমিকা
নিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি ৪৫ বছর ধরে সার্টিফিকেট লিখেছি। আমি মনে
করতাম যে, বোধ হয় বাংলাদেশে আমার মতো সুন্দর লেখা আর কারও নেই। এই একটা মিথ্যা ধারণা
নিয়ে আমি বাস করছিলাম…।
“অনেক ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন
ফার্মেন্সিতে নিয়ে দিলে ওষুধটা পড়ে সঠিকভাবে সরবরাহ করতে পারে না। এটা আমাদের রোগীদের
জন্য যেমন দুঃখজনক, অভিভাবকদের জন্য যেমন দুঃখজনক, সবার জন্য দূঃখজনক।”
তিনি বলেন, “ফাউন্টেন
পেন দিয়ে আমি এক সময়ে লিখতাম। সেই কলমের কথা বর্তমান প্রজন্মকে বললে তারা হা করে তাকিয়ে
থাকে। এটা কী, আপনি কী বলছেন এটা, ফাউন্টেন পেন এটা আবার কি জিনিস?”
‘হাতের লেখা সুন্দর
করার আন্দোলন’ সারা দেশের বিদ্যালয়গুলোতে ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান মানববন্ধনে আসা
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
তাদের ভাষ্য মতে, হাতের
লেখা ভালো হলে শিক্ষক এমনিতেই শিক্ষার্থীর পরীক্ষার খাতায় নম্বর ‘একটু বেশি দিতে চান’।
মানববন্ধনে বলা হয়,
হাতে লিখলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনকারী কোষগুলো সক্রিয় হয় এবং স্মৃতি শক্তি বৃদ্ধি
পায়। কোনো কিছু লিখলে তা স্মৃতিতে দীর্ঘ দিন থাকে। এর মধ্য দিয়ে শিশুদের সৃজনশীলতা
বৃদ্ধি পায়।
ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে
মুক্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের মুক্তির সনদে স্বাক্ষর করেছিলেন হ্যানকক। তার স্বাক্ষর
ছিল খুবই দৃষ্টিনন্দন। সে কারণে হ্যানককের জন্মদিন ২৩ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে ‘হাতের
লেখা দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। পরে অন্যান্য দেশেও দিনটিকে হাতের লেখা দিবস হিসেবে
পালন করা হয়।
হ্যান্ড রাইটিং অ্যাসোসিয়েশনের
কর্মকর্তারা জানান, ১৯৭৭ সাল থেকে ২৩ জানুয়ারি ‘বিশ্ব হাতের লেখা দিবস’ হিসেবে পালিত
হয়ে এলেও বাংলাদেশে এবারই প্রথম পালিত হচ্ছে।
কাঞ্চন ব্রিজ থেকে
মানববন্ধনে আসা বায়েজিদ বলেন, “আমি চাই, আমি আমার কথাগুলো সুন্দর করে লিখি। সুন্দর
হাতের লেখা মানে সুন্দর মন, সুন্দর হাতের লেখা দেখলে নিজের মনটাও খুশি লাগে।”