ক্যাটাগরি

অভ্যুত্থানের শঙ্কা উড়িয়ে ‘সংবিধান মেনে চলার’ প্রতিশ্রুতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর

শনিবার এক বিবৃতিতে তারা এ প্রতিশ্রুতি দেয় বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। 

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ও মিয়ানমারে অবস্থিত পশ্চিমা দেশগুলোর দূতাবাস দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে সেনা হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানানোর পর একদিন পর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর এ বিবৃতি এল।

১৯৬২ সালের এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে।

শনিবারের বিবৃতিতে স্থানীয়ভাবে ‘তাতমাদাও’ নামে পরিচিত মিয়ানমারে সেনাবাহিনী বলেছে, সংবিধানের বিলুপ্তি নিয়ে তাদের কমান্ডার ইন চিফের সাম্প্রতিক বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হচ্ছে।

“তাতমাদাও ২০০৮ সালের সংবিধানের সুরক্ষা দিয়ে আসছে; বাহিনীটি আইন অনুযায়ীই কাজ করবে। কিছু সংস্থা ও গণমাধ্যম তারা যা চায়, তাই ধরে নিয়েছে এবং লিখছে, তাতমাদাও সংবিধান বিলুপ্ত করবে,” বিবৃতিতে বলেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

দেশটিতে নভেম্বরের নির্বাচনের পর বেসামরিক সরকারের সঙ্গে সেনাবাহিনীর বাড়তে থাকা উত্তেজনার মধ্যে সোমবার থেকে নতুন পার্লামেন্টের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে।

গত বছর ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে অং সান সু চির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) বড় জয় পেয়েছে। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২টি আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬টি আসন।

সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায় এবং নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে।

দাবি মানা না হলে সেনাবাহিনী ফের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় বসতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় তারা।

বুধবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর কমান্ডার ইন চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইং সেনাসদস্যদের জন্য দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “যদি সংবিধান মেনে চলা না হয় তবে সেটা বাতিল করাই উচিত।”

গত সপ্তাহে সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতারণার’ অভিযোগ নিয়ে মিয়ানমারে যে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার সমাধান না হলে ‘ব্যবস্থা নেওয়ার’ পরিকল্পনা আছে তাদের।

এটি কী অভ্যুত্থান হতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ‘সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না’ বলে মন্তব্য করলে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়।

শনিবার সেনাবাহিনীর দেওয়া বিবৃতি অভ্যুত্থান গুঞ্জনের পরিসমাপ্তি টানতে পারে বলে ধারণা অনেকের।

সু চির দল এনএলডি সেনাবাহিনীর ব্যাখ্যাকে ‘উপযুক্ত’ অ্যাখ্যা দিয়ে তাদের বিবৃতিকে স্বাগত জানিয়েছে।

“আমাদের দল চায় সেনাবাহিনী হোক এমন এক প্রতিষ্ঠান যারা নির্বাচনের মাধ্যমে প্রকাশিত জনগণের ইচ্ছাকে স্বীকৃতি দেবে,” বলেছেন এনএলডির মুখপাত্র মিয়ো নিউন্ট।