অভ্যন্তরীণ টিকাদান কর্মসূচী শুরু করার জন্য দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী অ্যাস্ট্রাজেনেকা পিএলসির একটি টিকা অনুমোদন করেছেন বলে শনিবার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এর কয়েক ঘণ্টা আগে শুক্রবার রাতে ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী গুয়েন শুয়ান ফুক প্রথম প্রান্তিকের মধ্যেই দেশে একটি টিকা থাকা দরকার বলে মন্তব্য করেছিলেন।
তারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার তিন কোটি ডোজ টিকা কেনা নিয়ে আলোচনা করছেন বলে এর আগে জানিয়েছিল দেশটির সরকার।
বৃহস্পতিবার দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হাই জুংয়ে দুটি স্থানীয় সংক্রমণের ঘটনা শনাক্ত হওয়ার পর নতুন করে আরও ১৮০ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন উপস্বাস্থ্যমন্ত্রী গুয়েন চুয়ং সন।
৬ ফেব্রুয়ারি নতুন চান্দ্র বর্ষের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই কর্মকর্তারা এ প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সরকার জানিয়েছে, মধ্যাঞ্চলীয় পার্বত্য প্রদেশ জা লাইয়ে অত্যন্ত পাঁচ রোগী শনাক্ত হওয়ার পর কফি প্রধান অঞ্চলটির দুটি প্রত্যন্ত জেলায় লকডাউন জারি করা হয়েছে।
জা লাইযের ঘটনাগুলো হাই জুংয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, “রোগটি ওই এলাকায় ছড়িয়েছে, ভাইরাসের এ ধরনটি বিপজ্জনক এবং খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে।”
কর্তৃপক্ষ কয়েক হাজার লোককে পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রাদুর্ভাব রাজধানী হ্যানয় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে তারা।
হ্যানয়ে ভিয়েতমানের ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির পঞ্চ-বার্ষিক কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই কংগ্রেস থেকে দলটির নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়া হবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম জানিয়েছে, পূর্ব পরিকল্পনা থেকে সরে একদিন আগেই, সোমবার কংগ্রেস শেষ করা হবে। কংগ্রেস কেন আগেই শেষ করা হচ্ছে প্রতিবেদনে তা জানানো হয়নি আর পরে রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের দাপ্তরিক ওয়েবসাইট থেকে খবরটি সরিয়ে ফেলা হয় বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
নতুন শনাক্ত হওয়া অধিকাংশ রোগী হাই জুং অঞ্চলের। জানুয়ারির মাঝামাঝিতে এখানে জাপান ফেরত এক ব্যক্তির মধ্যে করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন বি.১.১.৭ ইউকে শনাক্ত হয়। একজন কারখানা কর্মী এই ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছিলেন বলে ওই কারখানার দুই হাজার ৩৪০ জনকে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ৯ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার ভিয়েতনাম এখনও পর্যন্ত অত্যন্ত সফল। এক বছর আগে কোভিড-১৯ প্রথম শনাক্ত হওয়ার পর থেকে দেশটিতে এ পর্যন্ত এক হাজার ৭৩৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে আর মৃত্যু হয়েছে ৩৫ জনের। এদের মধ্যে ৮৭৩ জন স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন।
দেশটির সরকারের নেওয়া গণপরীক্ষার পদক্ষেপ ও কেন্দ্রীভূত কোয়ারেন্টিন কর্মসূচীর কারণে এ সাফল্য এসেছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
চান্দ্র বর্ষের ছুটি শুরু হওয়ার আগেই ১০ হাজার রোগীর একটি কল্পিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়েছে।